খরচ চালাতে বছরের প্রথম ছ’মাসেই বিপুল ধার কেন্দ্রের! তাতেও মিটছে না ঘাটতি

ধারের টাকায় অর্থনীতি… (Economy)! খরচ চালাতে বছরের প্রথম ছ’মাসেই কেন্দ্রকে বাজার থেকে ধার নিতে হয়েছে প্রায় ৭ লক্ষ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু তাতেও মিটছে না ঘাটতি। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে আরও অন্তত ৪ লক্ষ ৩৪ হাজার কোটি টাকা চলতি আর্থিক বছরেই ধার করতে হবে। বুধবার অর্থনীতির এই সংকটের কথা নিজের মুখে স্বীকার করেছেন দেশের অর্থ বিষয়ক সচিব তরুণ বাজাজ।

করোনা (Coronavirus) ভারতে প্রকোপ দেখানোর আগেও অর্থনীতি খুব একটা ভাল জায়গায় ছিল না। ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছিল জিডিপি বৃদ্ধির হার। কিন্তু করোনার প্রকোপ একেবারে অর্থনীতির কোমর ভেঙে দিয়েছে। আর সেকথা সরকার আগেও স্বীকার করেছে। কিছুদিন আগে সংসদে দাঁড়িয়ে খোদ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitharaman) স্বীকার করেছেন, কেন্দ্রের খরচের একটা বড় অংশ চলছে ধার করে। নির্মলা জানিয়েছেন, লকডাউনের জন্য এপ্রিল থেকে জুন মাসে কেন্দ্রের আয় প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছে। তার উপর ১০০ টাকা আয় হলে রাজ্যগুলিকে করের ভাগ এবং অনুদান বাবদ দিতে হচ্ছে ১০৭ টাকা। তাই বাধ্য হয়ে এই মুহূর্তে কেন্দ্রের খরচ চলছে ধার করে।

সেই ধারের তত্ত্বে এবার শিলমোহর দিলেন অর্থ বিষয়ক সচিব। বুধবার তিনি জানিয়েছেন, বাজেটের সময় সরকারের হিসেবে আর্থিক ঘাটতি হওয়ার কথা ছিল ৭ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকার আশেপাশে। কিন্তু করোনার কারণে কমেছে সরকারের রাজস্ব আদায়। লকডাউনের সময় রাজস্ব আদায় প্রায় শূন্য ছিল। মে মাসেই বোঝা গিয়েছিল, এই ধারের পরিমাণ ৭ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি থেকে বাড়িয়ে ১২ লক্ষ কোটি করতে হবে। তরুণ বাজাজ জানিয়েছেন, এই ১২ লক্ষ কোটির ৬৩.৮ শতাংশ অর্থাৎ ৭.৬৬ লক্ষ কোটি টাকা ইতিমধ্যে ধার করেছে সরকার। আরও ৪ লক্ষ ৩৪ হাজার কোটি ধার করা হবে অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্যে। তবে স্বস্তির খবর হল, এ বছর কেন্দ্র এই টাকা ধার করেছে ৫.৮২ শতাংশ সুদের হারে। যেটা কিনা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

তবে, এই বিপুল পরিমাণ ধারের পরও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় আছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। অনেকেই মনে করছে, পরবর্তী ছ’মাসে যদি সরকারের রোজগার বিপুল হারে না বাড়ে তাহলে এই অর্থও যথেষ্ট হবে না। যদিও অর্থ সচিবের দাবি, আনলক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে রাজস্ব আদায়ে উন্নতি হতে শুরু করেছে। ফলে সরকারও কিছু ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে খরচ করতে পারছে। আর সেটাই একমাত্র আশার আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.