মিসাইল পরীক্ষায় ছাড়ালেন নিজের বাবা-দাদুকেও, ১০ মাসে ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়লেন কিম!

উত্তর কোরিয়ার স্বৈরাচারি শাসক কিম জং উনের তত্ত্বাবধানে চলতি বছর দশ মাসে ৪০টির বেশি প্রাণঘাতী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন আমেরিকা থেকে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। ইউএস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন বা RAND-এর দেওয়া তথ্য অনুসারে, উত্তর কোরিয়ার কাছে বর্তমানে প্রায় ২০০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। ২০২৭ সাল নাগাদ তাদের সংখ্যা ২৫০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে উত্তর কোরিয়ার যথেষ্ট সম্পদ রয়েছে যে তারা প্রতি বছর গড়ে বারোটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে। তার পরেও উত্তর কোরিয়া নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে তার পারমাণবিক অস্ত্রের পরিমাণ বাড়িয়ে অস্ত্রাগার তৈরি করছে ও নিজের পারমাণবিক শক্তি প্রদর্শন করছে।

উত্তর কোরিয়ার বর্তমান শাসক কিম জং উনের দাদু কিল ইল সুং ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছিলেন। তার বাবা কিম জং ইল ২০০৬ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে ১৬টি পরীক্ষা পরিচালনা করেছিলেন। একই সময়ে, কিম জং উনের নেতৃত্বে, ২০১২ সালে প্রথম পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং ২০২১ সালের মধ্যে মোট ১২৯টি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়েছে। গত দশ বছরে উত্তর কোরিয়া প্রতি বছর গড়ে ১২টি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে।

ক্ষমতা নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চারটি পারমাণবিক পরীক্ষা

উত্তর কোরিয়ার স্বৈরশাসক কিম জং উনের পিতা কিম জং ইল ২০০৬ সালের অক্টোবরে প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালান যখন তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। দ্বিতীয় পরীক্ষা ২০০৯ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত হয়। তিনি যখন ২০১১ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন তিনি চারটি পরীক্ষার আদেশ দেন। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম পরীক্ষা হয়েছিল। দ্বিতীয় এবং তৃতীয়টি একই বছরের জানুয়ারি এবং সেপ্টেম্বরে হয়েছিল এবং চতুর্থটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে হয়েছিল।

আমেরিকা এবং জাপানের কাছে ফায়ারপাওয়ার

কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস (সিএফআর) অনুসারে পিয়ংইয়ং অন্তত ছয়টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে। এর থেকে ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরি করা হয়েছে, যার ফায়ার পাওয়ার আমেরিকা, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত। উত্তর কোরিয়ার এই কৌশলকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন এবং এজেন্সিগুলোকে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন।

জিডিপির ৩০ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় হয়

উত্তর কোরিয়ার প্রায় ১.২ মিলিয়ন সেনা সহ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম সেনাবাহিনী রয়েছে। এই দেশটি জিডিপির প্রায় এক তৃতীয়াংশ সেনাবাহিনীতে ব্যয় করে। উত্তর কোরিয়ার কাছে শুধু পারমাণবিক অস্ত্রই নয়, রাসায়নিক ও জৈবিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.