রাস্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের শিক্ষক সংগঠন “অখিল ভারতীয় রাস্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসঙ্ঘ (ABRSM)” এর দুটি শাখা, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শাখা “বঙ্গীয় শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী সঙ্ঘ (BSSS)” এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শাখা “বঙ্গীয় নব উন্মেষ প্রাথমিক শিক্ষক সঙ্ঘ (BNUPSS)” , উত্তর ২৪ পরগনা জেলার উদ্যোগে এবং পরিচালনায় গতকাল রবিবার ৩১:০৫:২০২০ তারিখে সারাদিন ব্যাপি সুন্দর বনের দ্বীপ অঞ্চল হিঙ্গলগঞ্জ এলাকায় ভয়াবহ, বিধ্বংসী আম্ফান ঝড় পরবর্তীতে অসহায়, সব হারানো মানুষ জনের পাশে দাড়াতে এক বিরাট সেবাকার্য অনুষ্ঠিত হয়। কাক ভোরে রওনা দিয়ে দুর্গম রাস্তা, অন্তহীন পথ পেরিয়ে সংঠনের জেলা এবং মহাকুমা স্তরের কার্যকর্তারা হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের প্রত্যান্ত গ্রাম রুপামারীতে পৌছান তখন বেলা গড়িয়ে দুপুর।এই শিক্ষক সংগঠনের সাথেই ছিল ন্যাশনাল মেডিকোস অর্গানাইজেশনের ডাক্তার দের একটি মেডিকেল টিম। তাদের সাথে ছিল জরুরী এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং মাস্ক। প্রায় ২০০ জনের উপরে রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা তৎসহ ওষধ এবং মাস্ক তুলে দেওয়া হয়।
এর পরে উত্তর কুমিরমারী, দক্ষিন কুমিরমারী এবং কুমিরমারী কলোনী গ্রামে, যে গ্রামের প্রায় আর্ধেক অংশ এখনো জলের নীচে সেখানে একটা নির্জন এবং প্রায় বিচ্ছিন্ন দ্বীপ অঞ্চলে শুরু হয় খাদ্যদ্রব্য বিতরন। এখানে প্রায় ২২০ টি পরিবারের হাতে চিড়ে,মুড়ি, বিস্কুট, চিনি সহ আরো অনেক রকমের খাদ্য সামগ্রীর সাথে একটি করে সাবানের প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়।এখানে প্রায় ১৫০ জন মা বোনের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরনো অথচ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন শাড়ি কাপড়।
এর পরে পুর্ব বাঁশতলী গ্রামে পৌছানোর চেস্টা করেও ব্যার্থ হতে হয় তখন ওই গ্রামের মানুষ জনকে খবর পাঠিয়ে ডেকে এনে প্রায় একশ প্যাকেট খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়।সব শেষে রুপমারী, যেখানে আমাদের মেডিকেল টিমের জন্য অস্থায়ী শিবির খোলা হয়েছিল সেই অঞ্চলে আরো প্রায় ১০০ পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট পৌছে দেওয়া হয়। ঝড়ে সব কিছু ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মানুষগুলো যারা তাদের স্বপ্নের ঘরবাড়ি ছেড়ে ভাঙা বাঁধের উপরে অস্থায়ী ত্রিপল খাটিয়ে বসবাস করছেন তাদের নিদারুন অবস্থা শহুরে মানুষের কাছে কষ্টকল্পনা ছাড়া আর কিছু মাত্র নয়। ভাঙা ঘর আর ভাঙা মন নিয়ে লাখে লাখে মানুষ স্ত্রী পুত্র পরিজন, বৃদ্ধ বাবা মা আর হাটি হাটি পা পা শিশুদের নিয়ে খোলা আকাশের নীচে অথবা এক টুকরো নিকষ কালো ত্রিপলের নীচে দুর্বিষহ দিন আর সুদীর্ঘ কষ্টকর রাত্রি যাপন করছেন। অসহায় আর প্রকৃতির রোষে ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত এই মানুষ গুলোর পাশে দাঁড়ানো স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ আপন কর্তব্য বলেই মনে করে।রাস্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের শিক্ষক সংগঠনের এই দুটি শাখা ভবিষ্যতে এভাবেই আরো আর্ত পিড়ীত মানুষের পাশে দাড়াতে বদ্ধপরিকর।।