রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহু স্মৃতি, কালজয়ী রচনার সঙ্গে জড়িয়ে বাংলাদেশ। জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা তিনি। বিশ্বকবির ১৬০ তম জন্মজয়ন্তী শ্রদ্ধায় পালিত হচ্ছে। তবে করোনা সংক্রমণ কারণে কবির জন্মদিন সংক্রান্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।
বিশ্বকবির জন্মজয়ন্তীতে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদ। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) প্রেরত রাষ্ট্রপতির বার্তা”রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির চেতনা ও মননের প্রধান প্রতিভূ। বাংলা সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় রয়েছে তাঁর অবাধ বিচরণ। তিনি আমাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংগীত স্রষ্টা, চিত্রকর, সমাজচিন্তক এবং দার্শনিক হিসেবেও বিখ্যাত। সর্বোপরি, বাঙালি জাতীয়তাবোধের প্রধান রূপকারও তিনি।”
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এদিন রবীন্দ্রচেতনায় সম্প্রীতির বন্ধন আরও দৃঢ় করার প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসেন ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করে। তিনিই প্রথম অ ইউরোপীয় হিসেবে বিশ্বসাহিত্যের এই সর্বোচ্চ স্বীকৃতি অর্জন করেন। তিনি ভারতীয় সংস্কৃতির বহুত্ববাদ, বৌদ্ধ ধর্মের অহিংস ও ইসলাম ধর্মের সুফিবাদ এবং বাংলার বাউলদের ভাববাদী চেতনার সমন্বয় সাধন করে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেন।
১৯৭১ সালে রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তৈরি হয় বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্থির করেন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হবে বিশ্বকবির সৃষ্টি আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি এই গীতি। বিশ্বে একমাত্র বাংলাভাষীদের দেশের সরকার সেটি জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করে।
বাংলাদেশে ছড়িয়ে থাকা কবির স্মৃতি সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেসব এখন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। রবীন্দ্র গবেষকদের কাছে অতি মূল্যবান সেই নিদর্শন। ভারত সহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকরা সেসব দেখতে বাংলাদেশে আসেন।
বাসস প্রেরিত রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদের বার্তায় বলা হয়েছে, রবীন্দ্রনাথ মানবতাবাদী অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি। পূর্ববঙ্গ তাঁর শিল্পীসত্তা, মানবসত্তা এবং ঐক্য ও সম্প্রীতির আভায় সমুজ্জ্বল। ফলে সাধারণ বাঙালির দুঃখ-বেদনার কথক হিসেবে যে রবীন্দ্রনাথকে পেয়েছে, তা পূর্ববঙ্গেরই সৃষ্টি।