আজ থেকে বেশ কিছু দশক পিছিয়ে গেলে, যখন ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার হয়নি, তখন বেশিরভাগ সময়ই মৃত্যুর কারন ছিল জীবাণু সংক্রমণ। সেটা ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাস যা কিছু হতে পারে। সেটাকে আটকাতে, তখন থেকে যে সনাতনী হিন্দু আচার চলে এসেছে তা ছিল অসম্ভব রকমের বিজ্ঞানভিত্তিক প্র্যাকটিস।
১. মৃত দেহ পুড়িয়ে ফেলা। সাথে ব্যক্তির লেপ তোষক, ব্যবহার করা পোশাক। জীবাণু সংক্রমণের চান্স কমিয়ে ফেলা।
২. অশৌচ। বাড়ীর লোকজনকে আলাদা করে রাখা। এমন খাবার খেতে হয়, যেটার জন্য বাজারে যাবার প্রয়োজন নেই। ভাত, চিড়ে, ঘী, দই এইসব।
৩. মালসায় রান্না, কলাপাতায় ভোজন। বাসন মজার দরকার নেই। বাজার ও পুকুর থেকে দূরত্ব রাখা।
৪. চুল দাড়ি না কাটা। তখন সেফটি রেজর ছিল না। নাপিতের দোকান থেকে দূরে রাখা যেন দোকানের ক্ষুর বা কাঁচি থেকে জীবাণু না ছড়ায়।
৫. লোকে বাড়ীতে এসে ভুজ্যি দিয়ে যেত। যেন বাজারে না যেতে হয়। যাঁরা আসতেন তাঁদের বাড়ী ফিরে ভালো করে স্নান করে তারপর বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হত। এটাও বাজার থেকে দূরে রাখার সুকৌশল।
৬. কুশের আসন পেতে বসা। এটাও কিছুটা সংক্রমণ আটকানোর চেষ্টা।
৭. আত্মীয় স্বজনের অশৌচের ড্রেস কোড। যেন অপরিচিত কেউ দেখলেও বুঝে ফেলে ও দূরত্ব রাখে। কারন ছুঁয়ে ফেললেও চান করতে হবে।
৮. অশৌচের ব্যাপ্তি। সাধারনত ১৩ দিন, বাড়ী থেকে স্বাভাবিক ভাবে জীবাণুর বিলুপ্তির আশা। এই কারণেই অপঘাতে মৃত্যু হলে ৩ দিন অশৌচের সময়। কারন অপঘাতে মৃত্যুর কারণ জীবাণু নয়।
আজ বড় সংকটের দিন। মাঝে মাঝে চিমটি কেটে দেখছি, বাস্তব তো! একেবারে যেন হলিউডের ডুমস-ডে মুভির স্ক্রিপ্ট।
এখন আমাদের গ্লোবাল অশৌচের সময়। যাকে আমরা সোশ্যাল ডিস্টান্সিং বলছি আরকি! এই গ্লোবালাইজেশনের যুগে, সবাই সবার আত্মীয় হয়। এ যেন ইতালীতে কেউ মারা গেলে ভারতে তার অশৌচ পালন করতে হচ্ছে।
আর এই কঠিন সময়ে যারা ইচ্ছে করে জমায়েত করছেন, তাদের উদ্দেশ্য একটাই। এই বিপর্যয় কে মহামারীর রূপ দেওয়া। এইসব নিশ্চিত ভাবেই এদের অঘোষিত এজেন্ডার পার্ট। এরা শুধু আমাদের দেশের নয়, গোটা পৃথিবীর শত্রু।
- শান্তনু সোম