যখন দেখা যায়, হরেকরকমের মিথ্যা বলেও বাঙালিকে পথে আনা যায় না, বাঙালি ক্রমে সাংস্কৃতিক সাজাত্য-বোধে জারিত হতে থাকে! যখন মিডিয়া-মিথ্যা-মিথ দিয়ে বাঙালির ভোট আদায় সম্ভব হয় না, বাঙালি মহাভারতের পথে চলতে প্রয়াস করে! তখন এক এবং একমাত্র উপায় হল শিক্ষিত-বেকার-ভবঘুরে যুব-সমাজকে চটুলতায় আকৃষ্ট করা। ফলে তোমায় ভোলাবো না, মলে তোমায় ভোলাবো । এখন রোদ্দুর-সংস্কৃতি । তা সযত্নে তৈরি হয়েছে কর্মনাশা মনস্তাত্ত্বিক পরিবেশের চোরাগলিতে; তার চাট, তার ঝাঁট, তার ঠাঁট ঠিকরে বেরিয়ে আসছে ক্রমাগত। একেই কী বলে কলচর? একেই কী বলে বিদ্যের ঝলকানি!
রোদ্দুরের তীব্রতর দহন শতরূপে ঘোষণা করেছে, মহা-মল সগর্বে গর্গল করিয়েছে। সে অপসংস্কৃতির ভূত চরে বেড়ায় টিউবে টিউবে; এম.এ/এম.এসসি/পিএইচডি নিংড়িয়ে তার প্রবল গতি!
একটি সাংস্কৃতিক খরা চারিদিকে। বড্ড রোদ্দুর, কারণ অসংখ্য পোছা-সূর্য চার-পাঁচ ফুট হাইট থেকে কিরণ দিচ্ছে! সাহিত্য-সংস্কৃতিতে সুস্থ জীবনবোধ দেখানোর কেউ তো নেই। যাদের নাম শোনা যায়, তারা চেয়ার মোছার কাজ পারেন, তারা ত্রিশূলে কণ্ডোম ভরার কাজ পারেন। তারা একচক্ষু কানা কাকের দল! পচা-চালকুমড়ো। এদের হয় বাঙালি-মনন থেকে ডিলিট করতে হবে, নতুবা ডিলিট দিতে হবে, The Third Way বলে কিছু দেবার নেই। যারা পড়াশোনা করেছিল শিক্ষক হবে বলে, চাকরি পাবে বলে, তারা যখন দেখলো সব দরজা বন্ধ হয়ে মধ্য গগন, অথচ “হাড়িত ভাত নাহি নিতি আবেশী”, তখন বেলেল্লাপনা ছাড়া আর কিছুতে অনুপ্রেরণা পায় না ।
এই যুব সমাজকে দোষ দিয়েই বা কী করবেন! এরা নিজেও জানেন, এক আত্ম-ধ্বংসী কাঠামো ছাড়া কিছু নয়! এরা কুশ-পুতুল। এরাই তো আসলে পোড়ে! এদের ব্যবহার করেই বড় সিড়িতে পা রাখতে হয়। এদের নিয়ে সহজে খেলা যায়, এদের দিয়ে দূষণের ভরা কোটাল বয়ানো যায়। এরা এক একটি কালো রোদ্দুর। এদের শতরূপে খেলে! এদের দিয়েই রবীন্দ্রনাথকে গার্গল করানো যায়! এরা হেরো রাজনীতির বোড়ে!
যতক্ষণ এদের জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রবাদী চেতনায় না ফেরাবেন, এরা শুভকে গিলে খাবে, বাংলাকে সুবে করতে প্রয়াসী হবে। জানবেন, বাংলার অতীতের পূর্ণ-পাঠ না হলে ভবিষ্যতে দখল নেওয়া যায় না, বাঙালি এটা কবে বুঝবে? যদি না বোঝে আরও দূষণ-কোটাল দেখতে হবে।