তফশিলী ফলচাষীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খামারে

চাষের মধ্যে ফলচাষ যে লাভজনক, চারা তৈরির ছোট নার্সারী গড়ে তুললে যে কৃষিকাজে আত্মনির্ভরতা আনা সম্ভব, তা হাতেকলমে বুঝিয়ে দিতে হরিণঘাটা ব্লকের কৃষিজীবী মানুষদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করেছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। গত মহাষষ্ঠীর পুণ্যদিনটি ছিল এই প্রশিক্ষণের বোধন কার্যক্রম। আগামী কয়েকমাস ধরে তারা গবেষণা খামারে নিয়মিত নিতে আসবেন উন্নত ফলচাষের বিশেষ পাঠ, তারপর নিজের জমিতে তা করে দেখাবেন। গত ২২ শে অক্টোবর থেকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে মরশুম-দীর্ঘ প্রশিক্ষণ শিবির (Season-long training program on Fruit Cultivation)।

ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ (ICAR) – সর্ব ভারতীয় সমন্বিত ফল গবেষণা প্রকল্পের (AICRP) বিশেষ উদ্যোগ SCSP (তফশিলী জাতির কৃষকের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা) প্রকল্পের এই কাজে এদিন প্রশিক্ষণ দেন ফলবিজ্ঞানী ড. কল্যাণ চক্রবর্তী এবং প্রকল্প আধিকারিক ও উদ্ভিদ রোগ-বিশেষজ্ঞ ড. দিলীপ কুমার মিশ্র। প্রায় ৪৫ জন ব্যক্তি এতে অংশ নেন। প্রথম দিনেই তাদের হাতে কলমে চারা তৈরির পদ্ধতি শেখানো হয়েছে৷ আমের জোড়কলম (Grafting); পেয়ারা, লেবু, লিচু, গোলাপজামের গুটি কলম (Air Layering) ছাড়াও নানান ফলের কাটিং বা কাটাকলম (Cutting), দাবাকলম (Ground Layering), কলিকলমে (Budding) চারা তৈরি কীভাবে করতে হবে জেনে নেন তারা। আগামী দিনে বারেবারে তারা এই খামারে আসবেন এবং ফলচাষের নানান প্রযুক্তি শিখবেন। এদিন তারা খামার পরিদর্শন করেন। গবেষণা প্রকল্পের তরফ থেকে তাদের নিখরচায় উন্নত ফলের চারা বিতরণ করা হয়, দেওয়া হয় কিছু সার ও অন্যান্য কিছু সামগ্রী। তাদের প্রত্যেকেই এই প্রশিক্ষণ যুক্ত হতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও উপাদান সহায়তার হাত আগামী দিনেও প্রসারিত করা হবে, জানিয়েছেন প্রকল্প আধিকারিক ড. দিলীপ কুমার মিশ্র। ড. কল্যাণ চক্রবর্তী আমাদের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন কৃষকদের প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য সরল বাংলা ভাষায় সচিত্র প্রতিবেদন ও নিবন্ধ পাঠানো হবে হোয়াটসঅ্যাপে, আগামীদিনে বিতরণ করা হবে ছাপানো পুস্তিকা

করোনা পরিস্থিতিতে যথেষ্ট সতর্কতা বজায় রেখেই এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। রেজিস্ট্রেশনের সময়েই সকলের জন্য স্যানিটাইজার ও মাস্কের বন্দোবস্ত রাখা হয়। তারপর তারা ফার্মের ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হন। আলোচনা সভা, খামার পরিদর্শন, হাতেকলমে শেখা — সবেতেই যথাযথ সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.