গত কয়েক দিনের নিম্নচাপ (low pressure area)জনিত বৃষ্টিতে (rain) ব্যাপক ক্ষতি বাঁকুড়ার (bankura) কৃষিক্ষেত্রে। বিভিন্ন ধরণের মরসুমি সবজি থেকে চিনা বাদামের চাষ জমি জলের তলায়। ফলে আর্থিক দিক থেকে চরম ক্ষতির সম্মুখীন বাঁকুড়ার একটা বড় অংশের কৃষিজীবি মানুষ।
বাঁকুড়া জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর, বিক্ষিপ্তভাবে কিছু ব্লকে সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে মরশুমী সব্জী ও চিনাবাদামের ক্ষতি হয়েছে। এর বাইরে অন্য কোন চাষাবাদে ক্ষতির তেমন কোন সম্ভাবনা নেই বলেই জানানো হয়েছে।
সোনামুখী এলাকার সবাজি চাষী শ্রীদাম সরকার, পুষ্প দেবনাথ, জওহরলাল রায়রা বলেন, চাষবাস করেই আমরা সংসার চালাই। বৃষ্টিতে সব শেষ করে দিয়ে গেল। বিঘার পর বিঘা পটল, ঝিঙ্গে, করলার পাশাপাশি বাদাম জমিও জলের তলায়। এবার রোদ দেওয়ার পর ঐ গাছ আর বাঁচানো যাবেনা। এই অবস্থায় সরকারী সাহায্য ছাড়া আর তাদের ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয় বলেই তারা জানিয়েছেন।
জেলা মুখ্য কৃষি অধিকর্তা সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বলেন, আমাদের জেলায় ১৩০০ হেক্টর চীনা বাদাম চাষ হয়। সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০ হেক্টর চীনা বাদাম জমিতে ছিল। সব্জী চাষেও সামান্য পরিমানে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় শুধুমাত্র শস্যবীমার বাইরে অন্য কোনভাবে সহায়তার সুযোগ নেই। সেকারণে শস্যবীমার আওতাভূক্ত হলে তবেই ক্ষতিপূরণ মিলবে বলে তিনি জানান।
কৃষকবন্ধু’ (KRISHAK BANDHU) প্রকল্পের ভাতা দ্বিগুন বৃদ্ধি করেছে তাঁর সরকার। বার্ষিক ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে । বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় ফিরলে ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের ভাতার অঙ্ক বাড়ানো হবে। সেই কথা রাখলেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে ভাতার অঙ্ক ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছিল মন্ত্রিসভা।
রাজ্য সরকারের এই ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘কিষাণ সম্মান নিধি’ প্রকল্পের প্রতিযোগিতা বরাবরই ছিল। একুশের নির্বাচনের আগে বিজেপির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রীরা এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বছরে ৬ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন কৃষকরা। আর যেহেতু গত দু’বছর ধরে কেন্দ্রের প্রকল্পটি চালু হওয়া সত্ত্বেও বাংলায় তা কার্যকর হয়নি, তাই সবমিলিয়ে এককালীন ১৮ হাজার টাকা প্রতি কৃষককে দেওয়া হবে। বার্ষিক ৬ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সেই অঙ্ক ১০ হাজার করা হবে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পে কৃষকদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যে দুর্নীতি হতে পারে৷ এই কারণ দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Modi) কাছে বাংলার কৃষকদের পরবর্তী কিস্তির টাকা দেওয়া আপাতত বন্ধ করার আর্জি জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। মোদীকে পাঠানো চিঠিতে দিলীপ দাবি করেছেন, রাজ্যে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে ২৩ লাখ কৃষক নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদন করলেও প্রথম দফার টাকা পেয়েছেন ৭ লাখ চাষি। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধির টাকা পাওয়ার জন্য বাংলা থেকে ৪০ লাখ কৃষক নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। কিন্তু সবার নাম এখনও ভেরিফাই হয়নি।
উল্লেখ্য, ক্ষমতায় ফিরেই কিষাণ সম্মাননিধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, এটা জেনে নিশ্চয়ই কেন্দ্র খুশি হবে যে, রাজ্য সরকার ঘোষিত ‘কৃষকবন্ধু’ স্কিমের (KRISHAK BANDHU) জন্য ইতিমধ্যেই ১,৪৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এবং প্রায় ৫৮ লাখ কৃষক ইতিমধ্যেই এর সুবিধা পেয়েছেন। এবং আরও ২৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে ২০২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মৃত কৃষকদের পরিবারকে অর্থসাহায্য করার লক্ষ্যে