রাষ্ট্রঋষি শ্রী দত্তপন্থ বাপুরাও ঠেংড়ী মহারাষ্ট্রের (বিদর্ভ) ওয়ার্ধা জেলার আর্বী গ্রামে ১৯২০ সালের ১০ই নভেম্বর দীপাবলির শুভদিনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন শ্রী বাপুরাও দাজিবা ঠেংড়ী, মাতা শ্রীমতী জানকি দেবী। তিনি দত্তপন্থ নামে প্রসিদ্ধ হয়েছেন। ছোটবেলায় ওনাকে দত্তা, দত্তু, পন্ত, বাবা ইত্যাদি নামে ডাকা হত। ওনার মাতা সংসারের জন্য ভক্তি-পথগামী ছিলেন। সামাজিক ও ধার্মিক কাজে ওনার রুচি ছিল। ওনার পিতা শ্রী বাপুরাও ছিলেন বিখ্যাত আইনজ্ঞ। দেওয়ানী ও ফৌজদারি সমস্ত প্রকারের মকদ্দমা লড়তেন। শ্রী বাপুরাও কঠিন পরিশ্রমী ছিলেন। তাই পরিবারের সামাজিক এবং আর্থিক পরিস্থিতি সুদৃঢ় হয়। ওনার মাতা নিজের ঠাকুর ঘরে স্থাপিত ভগবান দত্ত মহারাজের কাছে মানসিক করেন যে ‘যদি আমার সন্তান জীবিত থাকে তাহলে আমি তাকে আপনার কাছে সমর্পণ করে দেব’। ভগবান আশীর্বাদ করেন ও দত্তপন্থ ঠেংড়ীকে দীর্ঘায়ু প্রদান করেন। পুত্রের নাম রাখা হয় দত্তাত্রেয়। বাস্তবে নিজের নামকে স্বার্থক করেন।
দত্তপন্থ ঠেংড়ীজী ঘর-গৃহস্থালীর সুখ ছেড়ে বিবাহ না করে সমাজ সেবার কাজে নিজেকে নিয়োগ করেন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রচারক হয়ে নিজের জীবন শোষিত, পীড়িত এবং উপেক্ষিত মানুষের উন্নতির জন্য এবং দেশের সেবায় অর্পণ করেন। রাষ্ট্র ঋষি দত্তপন্থ ছিলেন একজন হিন্দু- ভাববাদী দার্শনিক এবং চিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব। তিনি বহু প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি যুগদ্রষ্টা তপস্বী মানুষ এবং ভারতের শ্রেষ্ঠ মজদুর ও কৃষক কার্যকর্তা। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ শ্রমিক, কৃষক ও ছাত্র সংগঠন তৈরিতে তাঁর ভূমিকা অতুলনীয়। তিনি ভারতীয় মজদুর সংঘ, ভারতীয় কিষান সংঘ এবং অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। অনন্য প্রতিভার অধিকারী দত্তপন্থজীর জন্মশতবর্ষ সারা ভারতবর্ষ জুড়ে পালিত হচ্ছে। বিশ্বের দরবারে ভারতীয় দর্শন প্রচারের জন্য তিনি ৩৩ টি দেশে দীর্ঘদিন কাটিয়েছিলেন। তাঁর গ্রন্থের নাম নাম ‘Third Way’। এই বইটিতে তার মৌলিক চিন্তা ভাবনার প্রকাশ লিপিবদ্ধ আছে। তাঁর ভারত বিকাশ ভাবনা আমাদের সমৃদ্ধ করেছে। জ্ঞান ও বিজ্ঞানের অগ্রগতি, ভারতীয় সভ্যতার উজ্জ্বল উদ্ধারে এবং ভারতবর্ষের উন্নতিতে প্রয়াসী হয়েছিলেন।
তিনি অত্যন্ত বুদ্ধি সম্পন্ন মেধাবি ছাত্র এবং সব সময়ে প্রথম স্থান অধিকার করতেন। তবে উনি বইয়ের পোকা ছিলেন না। একবার যা পড়তেন- তা কণ্ঠস্থ করে ফেলতেন। স্মরণশক্তি ছিল অসাধারণ। তিনি পাঠক্রমের বাইরে নানা রকম বই পড়তেন। নিজের বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সভায় বক্তৃতা দিতেন এবং বিষয় যাই হোক না কেন তিনি প্রথম স্থান অধিকার করতেন। একদিন বিতর্ক সভার বিষয় ছিল- ‘মাতা বড় না পিতা’। তিনি ‘মা’ এর মাহাত্ম্য নিয়ে খুব সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। সেই দিন সবাই বলেছিলেন- ‘এই ছেলে বড় হয়ে নিশ্চয়ই খুব বড় ব্যক্তি হবে’।
কিশোর বয়সে তিনি স্বতন্ত্রতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। দত্তপন্থ তখন ৬-৭ ক্লাসের ছাত্র ছিলেন। ১৯৩১-৩২ সালে গান্ধীজীর নেতৃতে স্বতন্ত্রতা আন্দোলন শুরু হলে তিনিও সামিল হলেন। ওই কিশোর বয়সে বানর সেনা, Poor Boys কমিটি এবং আর্বী বিদ্যার্থী/ছাত্র সংগঠন তৈরি করে নিজে এবং বন্ধুদের নিয়ে স্বতন্ত্রতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। প্রখর রোদের তাপকে পরোয়া না করে মাথায় সাদা টুপি দিয়ে দত্তপন্থজী সারাদিন রাস্তায় নেমে আন্দোলনে বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে থাকতেন। ওনার বাবা এই সমস্ত আন্দোলন থেকে দূরে থাকতে বলতেন, কিন্তু তিনি এক্ষেত্রে পিতার কথা শুনতেন না। তিনি উত্তরে বলতেন- ‘আমার দেশকে স্বতন্ত্র করতে হবে। আমি আন্দোলন করব, অনাহারে থাকব, কিন্তু আন্দোলন ছাড়ব না।‘ নতুন নতুন মিত্র বানানো তার প্রিয় বিষয় ছিল। বঞ্চিত, পীড়িত এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া কিশোররা ছিলেন তার মিত্র। পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর জন্য ভাবতেন। বস্তিতে গরিব পরিবার গুলির দুঃখ, ব্যথা দেখে তাদের ছেলেমেয়েদের সাথে মিশে যেতেন। দত্তপন্থজীর ব্যায়াম করা, আখড়ায় যাওয়া ও কুস্তির সখ ছিল। সন্ধ্যাবেলায় সঙ্ঘের কাছে কবাডি ও খো খো খেলতেন। একবার বদমাস ছেলের অভিভাবকেরা পুলিশে রিপোর্ট লিখিয়ে ওনার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ওয়ারেন্ট বের করিয়ে দেয়। তাই তিনি তিন মাস অজ্ঞাতবাসে চলে যান এবং ওয়ারেন্ট নিজে নিজেই উঠে যায়। পুলিশ কেস খারিজ করে দেন। তার জীবনে এটাই ছিল প্রথম অজ্ঞাতবাস যা বিপদের সন্মুখীন হতে, খিদে-তৃষ্ণা সহ্য করতে, প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করার প্রথম পরীক্ষা ছিল। সেখানে দত্তপন্থজী সফল হয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (RSS)-র উপর প্রথম প্রতিবন্ধকতা আসে এবং ১৯৭৫ সালে আপতকালীন অবস্থায় ওনাকে ভূমিগত হয়ে রাষ্ট্রব্যাপী জন-জাগৃতি আন্দোলন সঞ্চালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি সফলতার সঙ্গে তা রূপায়ণ করে খ্যাত হয়ে যান। তারপর আপাতকালীন অবস্থার সমাপ্তি ঘটে এবং দেশের লোকতন্ত্রের পুনঃস্থাপনা হয়। কিন্তু ইন্দিরা গান্ধী সরকার এবং তৎকালীন প্রশাসন দত্তপন্থজীকে গ্রেপ্তার করতে অসফল হয়।
আর্বীতে স্কুলের শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি নাগপুরের প্রসিদ্ধ মরিশ কলেজে নিজের নাম নথিভুক্ত করেন। কলেজের ছাত্রসমাজে তার মান্যতা ছিল। কারণ তিনি নতুন নতুন বন্ধু বানাতেন, পিছিয়ে পড়া জাতির ছাত্রদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতেন। এছাড়া তার বুদ্ধি, গভীর চিন্তন এবং বাচন ও ভাষণ শ্রেষ্ঠতার শিখরে পৌঁছাতে সহায়তা করেছে। স্নাতক হবার পর দত্তপন্থজী LLB পরিক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। তিনি পড়াশুনা করার জন্য নাগপুর আসেন এবং ওনার থাকার ব্যবস্থা হয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের দ্বিতীয় সর সঙ্ঘ চালক পরম পূজনীয় শ্রীগুরুজি এর নিবাস স্থানে। রাষ্ট্র ভক্তি ভাবনা, রাষ্ট্র ও ব্যক্তি নির্মাণ, উচ্চ আদর্শবাদী, জীবন ও বিচারধারা এবং ভারতীয় সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠত্ব ও সিদ্ধান্ত তাকে আকৃষ্ট করে।
দত্তপন্থজী LLB ডিগ্রি অর্জন করার পর স্থির করেন যে তিনি RSS-এর প্রচারক হবেন। পরিবার ও ঘর গৃহস্থ থেকে মুক্ত হয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থের উপরে উঠে পূর্ণ রাষ্ট্র নির্মাণ ও সমাজ সেবার কাজে লিপ্ত হয়ে গেলেন। তার রোমে রোমে দেশপ্রেম বিরাজ করছে, আর অন্তরে ভারত মাতার প্রতি ভক্তি। সঙ্ঘ নির্মাণ কাল (১৯২৫) থেকেই এরকম লাখ লাখ স্বয়ং সেবক তৈরি হয়েছে, এবং হাজার হাজার প্রচারক বেরিয়েছে। ঠেংরিজী হলেন সেই পরম্পরারই সর্বশ্রেষ্ঠ বাহক। নাগপুরে পরম পূজনীয় শ্রী গুরুজি তাঁর প্রতিভাকে চিনেছেন এবং তাকে দেশের হিত প্রচারক বানিয়ে কেরলে পাঠাবার সিদ্ধান্ত করলেন। তার পিতা শ্রী বাপুরাও রাজি হলেন না। কিন্তু বলা হল দত্তপন্থ প্রাপ্তবয়স্ক, প্রতিভাবান এবং ভাল মন্দ বোঝার ক্ষমতা রয়েছে। তাঁকে আপনি খুশিতে প্রচারক হতে দিন, তাতে আপনার সম্মান বাড়বে। তখন বাপুজির ক্রোধ শান্ত হল। এইভাবে ১৯৪২ সালের ২২ শে মার্চ দত্তপন্থজী প্রচারক হয়ে সঙ্ঘের কাজের জন্য কেরলে রওনা হলেন। সেই দিন দেশ এক মহান প্রচারক পেল।
১৯৪২ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত কেরল এবং তারপরে ১৯৪৮ পর্যন্ত পশিমবঙ্গে প্রচারক থাকার পরে দত্তপন্থজীকে পুনরায় নাগপুরে ডেকে নেওয়া হয়। তিনি ১৯৪৯ সালে ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ স্থাপন করায় সহযোগিতা করেন। ১৯৫১-৫৩ সালে মধ্যপ্রদেশে এবং ১৯৫৬-৫৭ সালে দক্ষিণাঞ্চলে ভারতীয় জনসঙ্ঘের সংগঠন-মন্ত্রী ছিলেন। বহু প্রতিভার অধিকারী দত্তপন্থজীকে কেবল তার সঙ্গেই তুলনা করা যায়। একজন মানুষ তার জীবদ্দশায় এত সংগঠনের প্রাণ-পুরুষ ছিলেন, তা না জানলে তার অবদান আমাদের কাছে অধরাই থেকে যাবে। তার উদ্যোগে ১৯৫৫ সালের ২৩ শে জুলাই ভোপালে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (BMS) প্রতিষ্ঠিত হয়। সারা বিশ্বে এবং ভারতেও সাম্যবাদ শিখরে ছিল। স্থাপন কালে ভারতীয়ও মজদুর সঙ্ঘ শূণ্য থেকে শুরু হয়। সাম্যবাদীর ‘মে দিবস’ এর স্থানে ‘বিশ্বকর্মা জয়ন্তী’ (১৭ই সেপ্টেম্বর) কে শ্রমিকদের জাতীয় শ্রমিক দিবস ঘোষণা করেন। কম্যুনিস্টদের ‘ইনকিলাব’ ও ‘লাল সেলাম’ এর জায়গায় ‘ভারত মাতা কি জয়’ ও ‘বন্দেমাতরম’ এর উন্মেষ করে, যা শ্রমিক শ্রেণিতে অপরিচিত ছিল।
তাঁর উদ্যোগে ভারতীয় কিষান সঙ্ঘ (BKS) প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৯ সালের ৪ মার্চ রাজস্থানের কোটা শহরে। BKS এর পরিচিতি ও প্রচারে তাঁর ভূমিকা অতুলনীয়। গ্রামীণ এলাকাকে সমৃদ্ধ করে সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র নির্মাণের স্বপ্ন দেখানোর অন্যতম কারিগর ছিলেন দত্তপন্থজী। আজ ভারতীয় কিষান সঙ্ঘ হল বিশ্বের সর্ববৃহৎ কৃষক সংগঠন। এর কার্যকরী সমিতি গ্রামস্তর থেকে শুরু করে জাতীয় স্তর পর্যন্ত তিন বছরের জন্য বলবৎ থাকে। এখানে ‘কৃষি’ শব্দটির পরিধি বৃহৎ- কৃষকের মাঠে উৎপাদিত ফসল গো পালন, উদ্যান পালন, রেশম চাষ, বন সৃজন এবং কৃষি পণের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি। কৃষকদের একত্রিত ও সংগঠিত করা এই সংগঠনের উদ্দেশ্য। আর্থিক, সামাজিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাগত অবস্থার উন্নতি কৃষক সমাজের করতে হবে BKS এর মাধ্যমে। BKS -এর মাধ্যমে কৃষি শিল্পের সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে উন্নয়নের স্থায়ী পথ খুলে দেওয়া। কৃষকদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও হৃদ্যতা বাড়ানো। এই সংগঠনের তিন প্রকারের কাজ- সংগঠনাত্মক, আন্দোলনাত্মক এবং রচনাত্মক। জৈবিক গ্রাম নির্মাণ ও গো আধারিত কৃষি বর্তমানে ভারতীয় কিষান সঙ্ঘের রচনাত্মক কাজের অন্তর্ভুক্ত। কৃষিজীবী মানুষকে আধুনিক প্রযুক্তি বিষয়ে আবহিত করা। দত্তপন্থজী ‘স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ’ ১৯৯১ সালের ২২ শে নভেম্বর প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ‘প্রজাভারতী’ ও ‘অখিল ভারতীয় গ্রাহক পঞ্চায়েত সংগঠন’ নির্মাণ করেন।
দত্তপন্থজী ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন অজাতশত্রু অর্থাৎ তার বিজয় নিশ্চিত। এমনকি বিরোধীরাও সন্মান করতেন। তিনি সাংসদে শোষিত, উপেক্ষিত , পীড়িত, কৃষক, শ্রমিক, সর্বহারা, অসহায় এবং দুর্বল শ্রেণীর হয়ে কথা বলেছেন। যখন দত্তপন্থজী সংসদে ভাষণ দিতেন বা কোন প্রস্তাব করতেন, তখন বাকিরা মন দিয়ে শুনতেন। তিনি আর্থিক, সামাজিক বিষয়ের উপর অত্যন্ত বলিষ্ঠ ছিলেন। তিনি অর্থপূর্ণ ব্যাখ্যা দিতেন। তিনি মারাঠি, বাংলা, হিন্দি, মালায়ালি, গুজরাটী, কন্নর, ও ইংরাজি ভাষায় খুব সহজে কথা বলতে পারতেন। সাংসদ হিসাবে তিনি যে মাইনে পেতেন তা তিনি ভক্ত ও সংগঠনের কাজে খরচা করতেন। সত্যি, তিনি স্পষ্টতই একজন কর্মযোগী ছিলেন।। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত যতদিন না আপাতকালীন অবস্থার অবসান হয়, দত্তপন্থজী গণতন্ত্রের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখেন ও সবাইকে একত্রে বিরোধের জন্য তৈরি করতে থাকেন। দেশে গণতন্ত্রের পুনঃস্থাপনার জন্য সংকটাবস্থায় যে কাজ হয়েছে সেই একটিমাত্র কাজই তাঁকে মহাপুরুষের তালিকায় যুক্ত করার জন্য যথেষ্ট ছিল।
১৯৭৭ সালে দেশের ইমারজেন্সির অবসান হয় এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সাধারন নির্বাচন করানো হয়। ইন্দিরা সরকারের স্থানে মেরারজি দেশাই-এর নেতৃত্বে জনতা দলের সরকার গঠন হয়েছিল। দত্তপন্থজীকে তখন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে বলে হয়েছিল। তিনি সবিনয়ে মন্ত্রিপদ অস্বীকার করেন এবং পুনরায় শ্রমিক অধিবেশনে ফিরে আসেন ও মার্গ দর্শন করতে থাকেন। ভারত সরকার ২০০৩ সালে দত্তপন্থজীকে পদ্মবিভূষণ দিয়ে সন্মানিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পদ্মবিভূষণ স্বীকারে মানা করেন। তিনি বলেন যত দিন পরম পূজনীয় হেডগেওয়ার ও শ্রী গুরুজিকে ভারত রত্ন দিয়ে সন্মানিত না করা হয় তত দিন আমি এই সন্মান স্বীকার করার উপযুক্ত হব না। সত্যিই তিনি অলৌকিক প্রতিভাবান মহাপুরুষ ছিলেন। দত্তপন্থজী মানুষ- সমাজে আলোকিত হতে চাননি। তিনি সব সময় সাধারণ থাকতে চেয়েছেন। তিনি নিজেকে হিন্দু বলে গর্ব করতেন। আর এই সত্যসন্ধানী ভারতীয় সমাজে পুনঃস্থাপন করতে মহাত্ম্যপূর্ণ যোগদান দিয়েছিলেন।
মহাযোদ্ধা দত্তপন্থ ঠেংড়ীজী নিজের অবিশ্রান্ত ৮৪ বছরের জীবন যাত্রার পর ১৪ই অক্টোবর ২০০৮ সালের অপরাহ্নে ৩ ঘটিকায় পুনেতে ইহলোক ত্যাগ করেন।
(লেখক পরিচিতি: ড. কল্যাণ জানা, বিশিষ্ট কৃষি বিশেষজ্ঞ ও সংগঠক)
প্রবন্ধের সঙ্গে ব্যবহৃত ছবিটি ইন্টারনেট থেকে নেওয়া।
(লেখক পরিচিতি: ড. কল্যাণ জানা, বিশিষ্ট কৃষি বিশেষজ্ঞ ও সংগঠক)
প্রবন্ধের সঙ্গে ব্যবহৃত ছবিটি ইন্টারনেট থেকে নেওয়া।
ড কল্যাণ জানা