উন্নত প্রথায় ফল চাষে উৎসাহ দিচ্ছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

কল্যাণী,২১ শে ডিসেম্বরঃ কথায় আছে -‘খেলে ফল,স্বাস্থ্য হবে সবল’। ফল শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী খাদ্য; বিশেষ করে সিজেনাল বা মরশুমি ফল; যেমন আম, জাম, কাঁঠাল, আপেল, পেয়ারা, কলা, বিভিন্ন প্রকারের লেবু ইত্যাদি অবশ্যই রোজ পাতে খাওয়া উচিত। প্রতিটি মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে একশো কুড়ি গ্রাম ফল অবশ্যই খাওয়া দরকার। কিন্তু সবার পক্ষে তা গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। আবার চাহিদা থাকলেও যোগান তেমন থাকে না। তাই সব দিক বিচার করে বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ-সর্বভারতীয় সমন্বিত ফল গবেষণা প্রকল্প’ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে উন্নত প্রথায় ফলচাষ নিয়ে একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করেন অধ্যাপক ড.দিলীপ কুমার মিশ্র (অধ্যাপক ও প্রকল্প আধিকারিক) এবং অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপিকা ড.দেবলীনা মাঝি।

আজকের এই ওয়েবিনার-এ ফলচাষ বিশেষ করে আম ফলের চাষ নিয়ে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড.কল্যাণ চক্রবর্তী। হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি, মল্লিকা, দশেরা, গোপালভোগ, ফজলি, চৌষা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার আমের চাষ কীভাবে করা যায়, সেই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এক হেক্টর জমিতে ১০০ টির বদলে ২২২ টি আমের চারা লাগানো যায় বলে তিনি জানান। বারোমেসে এবং দো’ফলা আমের চাষ করার জন্য চাষিভাইদের বিশেষভাবে উৎসাহিত ও প্রশিক্ষিত করেন তিনি। পাশাপাশি আম গাছের মধ্যে সাথীফসল হিসেবে আনারস, হলুদ, আদা, নানান সব্জি ইত্যাদি ফসল চাষ করলে লাভ বেশি হবে বলেও তিনি জানান।বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল গবেষণা কেন্দ্রের মাধ্যম দিয়ে নির্বাচিত তপশিলি জাতির চাষিভাইদের জমিতে বিনামূল্যে ফল গাছ লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অধ্যাপক চক্রবর্তী জানান।

আজকের কার্যক্রম নিয়ে জানতে চাওয়া হলে অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার মিশ্র জানান যে, ” উন্নত প্রথায় ফল চাষে উৎসাহিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কৃষকভাইদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। আম জাতীয় ফলের চাষ করে চাষিভাইরা যাতে বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারেন, সেটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি বাড়িতে ফল চাষ হোক। মানুষ তার চাহিদার ফল কিছু পরিমাণে নিজেরাই যাতে উৎপাদন করে গ্রহণ করতে পারে সেটাকে উৎসাহ দিতেই তাদের আজকের এই কার্যক্রম।”

আগামী দিনে আরও বিভিন্ন ফলের চাষ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে আমাদের জানিয়েছেন ড.মিশ্র। মাছে-ভাতে বাঙালি ফল’কেও স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্ব দিক। তাতে শরীর ভাল থাকার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। আর স্বাস্থ্য ঠিক হলে সম্পদ বৃদ্ধি পেতে সময় লাগবে না বাঙালির। বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ সার্থক হোক।

মিলন খামারিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.