গত ২৮ শে ফেব্রুয়ারী থেকে ১ লা মার্চ, ২০২০ মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিওরে অনুষ্ঠিত হয় অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা। এই সভায় আলোচনা হয় ১২৫ কোটি জনসংখ্যার বিশাল দেশ ভারতবর্ষ, তা ২৭ টি জলবায়ু ক্ষেত্রে বিভাজিত। সমস্ত দেশবাসীর জন্য প্রয়োজনীয় সুস্বাস্থ্য প্রদানকারী খাদ্য এই কৃষি জলবায়ু ক্ষেত্র গুলিতে উৎপাদিত হয়। এই উৎপাদিত খাদ্য-ফসল থেকেই শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ, ভিটামিন ইত্যাদির অভাব পূরণ করা হচ্ছে এবং আমরা পুষ্টিহীনতা থেকে মুক্তি পাচ্ছি।

সাধারণত ফসলের সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদিত অন্য উদ্ভিদকে আগাছা স্বরূপ দেখা হয় না। অপরাপর এই গুলিকে খাদ্য ফসল, পশু খাদ্য বা ওষধি গাছের চারা হিসাবে গণ্য করা হয়। সেই জন্য উল্লেখিত আগাছাগুলিকে ওষধি গুণের সাথে সুরক্ষিত খাদ্য ফসল রূপে উৎপাদনের চেষ্টা করা হয়

দেরিতে হলেও কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার বিষাক্ত রসায়ন-মুক্ত জৈব-কৃষির বিষয়ে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে। কৃষকের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে এবং প্রাপ্তির জন্য এই বিষাক্ত রসায়নিক কৃষি বর্জন করে জৈব কৃষির গুরুত্ব বাড়ানো প্রয়োজন। কিছু সংখ্যক বেসরকারি সংগঠন ও কতিপয় কৃষক জৈব কৃষির মাধ্যমে কৃষি কাজ করার প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে। ভারতীয় কিষান সঙ্ঘ বেশ কিছু সময় ধরে এই সমস্ত সংগঠন ও কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে এই দিশায় প্রমুখ ভূমিকা পালন করেছে। “নেশামুক্ত মানব ও রসায়ন মুক্ত কৃষি” — এই স্লোগান নিয়ে কিষানদের মধ্যে জন জাগরণের ও প্রশিক্ষণের কাজ করছে এই সংগঠন। ভারতীয় কিষান সঙ্ঘ সাড়ে পাঁচশোটি জেলার মধ্যে সক্রিয় একক গুলির দ্বারা এই কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু তৃণমূল স্তরে এই কাজের কোনো উল্লেখযোগ্য প্ৰভাব দেখা যাচ্ছে না

কৃষি বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য পরিবেশন করার জন্য All India Radio এবং D D Kisan পর্যাপ্ত সময়ের ব্যবস্থা করেছে। হিমালয়ে বসবাসকারী কিষান থেকে শুরু করে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায় এরূপ কৃষক সকলেই কৃষি বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার জন্য এই A.I.R ও D D Kishan -এই দুই প্রকার মাধ্যমের উপর বেশি নির্ভর করে

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত A.I.R. ও D D Kisan সারাদিন ধরে রাসায়নিক ক্ষেতির বিষয়ে প্রচার প্রসার করে যায়। হতে পারে উল্লেখিত প্রচার প্রসার না দেখার ফলে বা না বোঝার ফলে হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মনে হচ্ছে প্রসার ভারতীর এই সম্প্রচার মাধ্যমগুলি রাসায়নিক সার, কীটনাশক, আগাছা নাশক কোম্পানি গুলির প্রচার মাধ্যম। তার ফলে কিষান বিভ্রান্ত হচ্ছে।

সরকার রসায়ন মুক্ত জৈবিক কৃষির জন্য লালকেল্লা থেকে সংসদ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে সাকারাত্মক বক্তব্য ঘোষণা করছে কিন্তু প্রসার ভারতী নিয়মিত ভাবে রাসায়নিক কৃষির বিষয়ে প্রচার করে যাচ্ছে। কিষান কাকে বিশ্বাস করবে – এই বিভ্রান্তি চলছে

গোয়ালিয়র শহরে অনুষ্ঠিত ভারতীয় কিষান সঙ্ঘের প্রতিনিধি সভার বৈঠকে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে যে মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং প্রসারভারতীর চেয়ারম্যানের ধ্যান আকর্ষিত হওয়া চাই, যাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও সরকারের অঙ্গীকার অনুরূপ কাজ করার দিশা নির্দেশিত হয়।

প্রসারভারতী যেন কৃষি জগতের সমস্ত প্রকার ফসল, সিঞ্চন করা জলের সঠিক ব্যবহার, উন্নত বীজ এবং কৃষি প্রযুক্তির সাথে সাথে বিষাক্ত রাসায়নিক কৃষির বিকল্প জৈবিক কৃষির ক্রমাগত বৃদ্ধির কাজে হিন্দি ও ক্ষেত্রীয় ভাষার জাগরণের ভূমিকা পালন করতে পারে।

দেশের জনগণের জন্য সুরক্ষিত ও পর্যাপ্ত খাদ্য পাওয়ার লক্ষ্য ও প্রাপ্তিতে সহযোগী ভূমিকা যেন প্রসারভারতী পালন করতে পারে
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দ্বারা কিষানের আয় বাড়ানোর অভিযানে নির্ণায়ক ভূমিকা প্রসারভারতী পালন করতে পারে।

আজ কিষান ও উপভোক্তা দেশী বীজ থেকে উৎপাদিত খাদ্যান্নের সন্ধান করে চলেছে। দেশী বংশজ গাভীর দুধের চাহিদা বেড়ে গেছে। এই সম্প্রচার মাধ্যম নিজেদের কার্যসূচিতে উল্লেখিত বিষয়কে প্রাথমিকতার স্থান দিলে সাকারাত্মক পরিবর্তনের মাধ্যম হতে পারে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.