গত ১৪ ই আগস্ট এক অনলাইন ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান ও মিটিং-এর মাধ্যমে ভারতীয় কিষান সঙ্ঘের ‘নদিয়া জেলা কমিটি’ গঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘেরর পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের কোষাধ্যক্ষ শ্রী পঙ্কজ বন্ধু মহাশয়। অনুষ্ঠানে ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের ইতিহাস ও গঠনের উদ্দেশ্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রান্ত সংগঠন সম্পাদক শ্রী অনিল চন্দ্র রায়, দত্তপন্থ বাপুরাও ঠেংড়ীজী সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন কৃষি বিজ্ঞানী ড.কল্যাণ চক্রবর্তী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিজ্ঞানী ড.কল্যাণ জানা, ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের প্রান্ত সাধারণ সম্পাদক শ্রী কল্যাণ কুমার মন্ডল।
ভারতীয় কিষান সঙ্ঘের নদীয়া জেলা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন ডা. সন্দীপ কীর্তনিয়া, সহ সভাপতি অধ্যাপিকা সুচেতা মুখার্জি ও এবং বিশ্ববিদ্যালয় আধিকারিক শ্রী সুশান্ত মজুমদার; সম্পাদক শিক্ষক মিলন খামারিয়া, সহ সম্পাদক অর্ণব রায় ও বিভাস মোদক। এই কমিটির মূল উদ্দেশ্য নদীয়া জেলার কৃষকদের সার্বিক উন্নয়নে সহায়তা করা ও তাদের কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করা। যেমন-রাসায়নিক সার প্রয়োগের বদলে জৈবিক সার প্রয়োগের ব্যাপারে উৎসাহিত করা, কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার দিকে নজর রাখা, কৃষকদের আয় বৃদ্ধির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। নবনির্বাচিত নদীয়া জেলা কমিটির সদস্যদের আশা, তারা নদীয়া জেলার কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে, তাদের সার্বিক উন্নয়নের চেষ্টা করবেন।
বর্তমানে করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতিতে সদস্য ও কার্যকর্তাদের সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে শুধুমাত্র অনলাইন ভিডিও কনফারেন্স ও মিটিংয়ের মাধ্যমেই কিষান সঙ্ঘের কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং সফলভাবে নদীয়া জেলার সমস্ত বিকাশ/নগর খন্ড গুলোর কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এরকমই এক অনলাইন মিটিংয়ে ‘কৃষিতে আত্মনির্ভরতা’ নিয়ে বক্তব্য রাখেন বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মানবেন্দ্র রায়। এছাড়াও ‘কৃষি সাংবাদিকতা ও জনসংযোগ’ নিয়ে ‘ওয়েব মিনার’এ বক্তব্য রাখেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (জার্নালিজম এন্ড মাশ কমিউনিকেশন) ড. বিপ্লব লোহ চৌধুরী। ‘কৃষি সংশোধনী আইন(২০২০) এর আলোকে কৃষকের অতীত ও ভবিষ্যতের দিশা সন্ধান’ বিষয়ে গত ৩০ শে সেপ্টেম্বর বক্তব্য রাখেন ‘মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইন্সটিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজ’এর ডিরেক্টর ড.সরূপ প্রসাদ ঘোষ। কমিটির কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জেলা সভাপতি ডা. সন্দীপ কীর্তনিয়া জানান “আগামীদিনে আমরা শুধুমাত্র ভালো কৃষিকাজ বা কৃষকের অধিকারের জন্য লড়াইয়ের পাশাপাশি জেলার সকল কৃষক বন্ধুদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্ত রকম সমস্যায় তাদের পাশে থেকে আমাদের সংগঠন তথা জেলার বৃহত্তর কৃষি পরিবারকে আরো উর্বর করে তুলবো। সর্বোপরি আগামীদিনে আমাদের কাজের প্রাধান্য হবে সমস্ত কৃষক বন্ধুকে তাদের প্রাপ্য সম্মান অর্থাৎ সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জনে সহায়তা করা।” জেলা সম্পাদক শিক্ষক মিলন খামারিয়া জানান “কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের দেওয়া সমস্ত সুযোগ সুবিধা যাতে পশ্চিমবঙ্গের কৃষক সম্প্রদায়ের মানুষরা পান তা সুনিশ্চিত করা আমাদের, অর্থাৎ ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের একটি অন্যতম কাজ হবে।”
নদীয়া জেলা কমিটির কার্যকর্তাবৃন্দ এই পরিস্থিতিতেও নদীয়া জেলার অসংখ্য কৃষকদের নিয়মিতভাবে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের কৃষি বিজ্ঞান, রাসায়নিক মুক্ত জৈব সার ও কৃষি সচেতনতা মূলক জ্ঞান প্রদান করার কাজ চলছে, যা কৃষকের কাছে বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।