উপজাতি বনধে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু, ত্রিপুরা সরকারের ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত

পড়শি রাজ্য মিজোরাম থেকে আসা ব্রু উপজাতিদের অসন্তোষ ও বনধ ঘিরে তীব্র উত্তেজনা উত্তর ত্রিপুরা জেলায়। গত ৫ দিন ধরে পুরো এলাকা বিচ্ছিন্ন। শনিবার এই বনধ ঘিরে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি গরম। খবর এসেছে গুলিবিদ্ধ আরও ৫ জন। কয়েকজন পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন।

জানা গিয়েছে, ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। বিজেপি দুঃখপ্রকাশ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। অন্যদিকে বিরোধী সিপিআইএমের দাবি, আন্তঃরাজ্য সীমান্তের পরিস্থিতি বিবৃতি দিয়ে রাজ্য সরকারকে জানানো হয়। অভিযোগ,সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি।

যাবতীয় বিতর্কের মূলে ২৩ বছর আগে পড়শি রাজ্য মিজোরাম থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা শয়ে শয়ে ব্রু উপজাতি শরণার্থীদের পুনর্বাসন ইস্যু। এই ইস্যুতে গত ৫দিন ধরে বনধ চলছে উত্তর ত্রিপুরায়। বনধের বিরাট প্রভাব পড়েছে কাঞ্চনপুর ও পানিসাগর এলাকায়। জনজীবন স্তব্ধ। এমনকি স্থানীয় সরকারি আধিকারিকদের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে।

শনিবার শরণার্থী ব্রু দের ডাকা বনধের সময় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ছড়ায়। আন্তঃরাজ্য সীমানায় কাঞ্চনপুর ও পানিসাগর জুড়ে বিক্ষোভকারী ব্রু ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশ আক্রান্ত হয়। এর পরেই পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ। গুলিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তাঁর নাম শ্রীকান্ত দাস। বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর হয়েছে বিস্তর। দাবি করা হচ্ছে, পুলিশের গুলিতে জখম আরও ৫ জন। তাদের চিকিৎসার জন্য পানিসাগর নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত ২৩ বছর ধরে ত্রিপুরা ও মিজোরাম সীমান্তের কাঞ্চনপুরে রয়েছেন বহু ব্রু উপজাতি শরণার্থী। তারা গোষ্ঠী সংঘর্ষের কারণে মিজোরাম ছেড়ে ত্রিপুরায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। পূর্বতন বাম সরকারের আমলে তাদের শরণার্থী শিবিরে রাখা হয়েছিল।

ত্রিপুরায় গত বিধানসভা নির্বাচনে বাম জমানার অবসান হয়। ক্ষমতায় আসে বিজেপি ও আইপিএফটি জোট সরকার। সম্প্রতি বিরোধী সিপিআইএম দাবি করে, ব্রু শরণার্থী সমস্যা ঘোরতর আকার নিতে চলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.