এবার পুজোয় নয়া ট্রেন্ড ‘রোড-ট্রিপ’, ভ্রমণপিপাসুদের স্বাগত জানাতে তৈরি পথসাথীও

করোনার জেরে বিদেশে বেড়াতে যাওয়া তো একেবারেই বন্ধ। নিদেনপক্ষে ভিন রাজ্যে যেতেও তেমন সাহসে কুলোচ্ছে না। এমন করোনার ছায়ায় ভ্রমণপ্রিয়দের রাজ্যের ভিতরেই ঘোরার প্রবণতা আঁচ করে নিউ নরমাল পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে চাইছে রাজ্য সরকার

জেলায় জেলায় ছড়িয়ে থাকা আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র ও বিভিন্ন পরিষেবা সামনে রেখেই পর্যটক টানার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে পর্যটন দপ্তর সূত্রে খবর। দপ্তরের এক কর্তার বক্তব্য, বিমানে করে যাওয়ার খরচ নেই, ট্রেনে দীর্ঘ সফর করতে হবে না, বড় বাজেটের ঝক্কি নেই। বহু পর্যটকই ‘রোড ট্রিপ’-এর মজা নিতে চাইছেন। রাস্তায় যাতে সফর আরও সহজ ও বিনোদনমূলক হতে পারে, তার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার পরিকাঠামো তৈরি করে ফেলেছে। রাস্তার ধারে রয়েছে ‘পথসাথী’। গাড়ি করে দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তিও তাই হবে না। কোভিড পরিস্থিতিতে পুজোর ছুটিকে এভাবেই কাজে লাগানো যাবে।

এক পর্যটন ব্যবসায়ী জানাচ্ছেন, রাজ্যের রাস্তাঘাট যথেষ্ট ভাল। তাই ‘রোড ট্রিপ’ এবারের পুজোয় ভ্রমণের সব থেকে সহজ পরিকল্পনা হতে যাচ্ছে। কারণ, বাসে বা ট্রেনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের মনে ভয় রয়েছে। পরিবার নিয়ে গাড়ি করে বেরিয়ে পড়লে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাও যাচ্ছে। মনের মধ্যে করোনা নিয়ে খচখচানিটাও থাকছে না। এমন ধরনের বহু অনুসন্ধান আসছে আমাদের কাছে। যাঁদের বক্তব্য, নিজেরা গাড়ি করে যাব। শুধু ভাল হোটেল বা গেস্ট হাউসের ব্যবস্থা করে দেওয়ার। এটাই মনে হচ্ছে এবারের নতুন ট্রেন্ড। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছোট ১৫—২০ সিটের বাস ভাড়া নেওয়ার খরচও লোকে জিজ্ঞাসা করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। যাতে ছোট পরিবার বা কয়েকজন বন্ধু—বান্ধব যেতে পারবেন। কোভিডের জন্য রাজে্যর জেলায় জেলায় গাড়ি নিয়ে পৌঁছে যাওয়ার প্রবণতা তাই এবার যথেষ্ট বেড়ে গিয়েছে। আরেক ভ্রমণ পরিকল্পকের কথায়, অচেনা জায়গা নিয়ে আগ্রহও এবার খুব বেশি। কারণ, অনেকই মনে করছেন, এইসব জায়গায় ভিড় কম হবে। বেড়ানোর আনন্দ যেমন মিলবে, তেমনই করোনার সময় ভিড় এড়ানো সহজ হবে। হোটেলের থেকে তাই হোম-স্টে’র প্রতি নজর বেড়েছে। হোম—স্টে হলে লোকজন কম থাকবে। জীবাণুনাশের ক্ষেত্রেও বাড়িতে নজর বেশিই থাকে। সেটাই তঁাদের মাথায় রয়েছে বেড়াতে গিয়ে থাকার ক্ষেত্রে

আর লম্বা রোড-ট্রিপে যাতে সমস্যা না হয়, তার জন্য পথসাথী অনেকটাই সুবিধা করে দেবে বলেই তাঁদের মত। দপ্তর সূত্রে খবর, জাতীয় সড়কের পাশে ছোট-ছোট মোটেল তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ২০১৮ সালে। প্রায় সবক’টি জেলার মধ্যে যোগাযোগের রাস্তার ধারে এমন পথসাথী রয়েছে। দফতর সূত্রে খবর, রাস্তার ধারের এই মোটেলগুলিতে এসি ঘর যেমন রয়েছে, তেমনই আলাদা করে ওয়াশরুম রাখা হয়েছে। সামান্য সময়ের জন্য একটু বিশ্রাম নিয়ে খাওয়াদাওয়া সেরে ফের যাত্রা করার যাবতীয় ব্যবস্থায় রয়েছে। ২৩টি জেলায় আপাতত ৬৫টি এমন পথসাথী চালু করা হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দায়িত্বে রয়েছে এগুলি। করোনা পরিস্থিতিতে এই মোটেলগুলি পর্যটনে বাড়তি সাহায্য করবে বলেই মনে করছে দপ্তর। ঘর হতে দু’পা বাড়িয়ে নিজের রাজ্যকে ফের নতুন করে দেখার এবারই সব থেকে ভাল সময়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.