এবার করোনা ধরবে ‘ফেলুদা’! দুই বঙ্গসন্তানের আবিষ্কারকে অনুমোদন DCGI-এর

ফিরে এল ফেলুদা। না, করোনা কালে ফেলুদাকে নিয়ে নতুন কোনও ছবি বা ওয়েব সিরিজ নয়। এই ফেলুদা আসছে কোভিড-১৯ (COVID-19) শনাক্ত করতে। এক ঘণ্টারও কম সময়ে করোনা হয়েছে কিনা বলে দেবে সে। তবে প্রদোষ মিত্র নয়। এই ফেলুদা (Feluda) আসলে দুই বঙ্গসন্তানের তৈরি করোনা টেস্ট কিট। পুরো নাম FNCas-9 Editor Linked Uniform Detection Assay। সব ক’টি শব্দের আদ্যাক্ষর মেলালেই ‘ফেলুদা’।

এই ফেলুদা যে কেবল কম সময়েই করোনাকে চিহ্নিত করতে পারবে তাই নয়। পরীক্ষার খরচও পড়বে মাত্র ৫০০ টাকা! যা অন্যান্য সংস্থার কিটের থেকে অনেকটাই কম। প্রসঙ্গত, বেসরকারি ল্যাবে RT-PCR টেস্টের ক্ষেত্রে খরচ পড়ে যায় ৪,৫০০ টাকা।

এই কিট তৈরি হয়ে গিয়েছিল গত এপ্রিলেই। সেই সময়ই ড. শৌভিক মাইতি ও ড. দেবজ্যোতি চক্রবর্তী বানিয়ে ফেলেছিলেন সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তির এই করোনা পরীক্ষার পেপার স্ট্রিপ। শনিবার দিল্লির ‘ইনস্টিটিউট অব জেনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজি’ (CSIR-IGIB)-এর দুই বাঙালি বিজ্ঞানীর তৈরি এই কিট ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (DCGI)-র অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। CSIR-IGIB-এর এই উদ্যোগের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে টাটা গোষ্ঠীও

এটিই হল দেশের প্রথম ক্লাস্টার্ড রেগুলারলি ইন্টারস্পেসড্ শর্ট পালিনড্রোমিক রিপিট (ক্রিসপার) ভিত্তিক কোভিড-১৯ পরীক্ষা। এর জন্য কোনও জটিল প্রযুক্তির প্রয়োজন নেই। পেপার স্ট্রিপের রংই বলে দেবে করোনার সংক্রমণ রয়েছে কিনা।

এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে CSIR-এর ডিরেক্টর জেনারেল শেখর সি মান্ডে জানিয়েছেন, ‘‘এই স্ট্রিপ প্রেগন্যান্সি টেস্ট স্ট্রিপের মতো। এই পরীক্ষার জন্য বিশেষ দক্ষতা কিংবা যন্ত্রের প্রয়োজন নেই। কেবল রং বদল দেখেই ধরে ফেলা যাবে সংক্রমণ রয়েছে কিনা। সাধারণ প্যাথোলজিক্যাল‌ ল্যাবেই এই পরীক্ষা করা যাবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এটা একশো শতাংশ নির্ভুল।’’

সত্যজিৎ রায়ের গল্পে ফেলুদা মগজাস্ত্রের সাহায্যে অপরাধীদের চক্রান্ত ধরে ফেলত। এই ফেলুদাও নিমেষে ধরে ফেলবে করোনা ভাইরাসকে। নয়া এই পেপার স্ট্রিপের এখন প্রয়োজন কেবল স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অনুমোদন। তাহলেই বাজারজাত হবে ‘ফেলুদা’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.