সেপ্টেম্বরে উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে দলিত যুবতিকে গণধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত চার আসামির বিরুদ্ধে চার্জ আনল সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে অভিযুক্ত চার জন তরুণীকে গণধর্ষণ ও খুন করে। এই মর্মে তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট এনেছে সিবিআই। অভিযুক্তদের আইনজীবীর তরফে একথা জানানো হয়েছে। যদিও এর আগে হাথরাস পুলিশ দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে এ তত্ত্ব মানতে চায়নি।
শুধু খুন ও গণধর্ষণ না, তফশিলি জাতি/উপজাতি (হেনস্থা প্রতিরোধ) আইনেও চার্জ আনা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। দিল্লি থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে হাথরাসের একটি আদালতে সিবিআই এই চার্জ এনেছে সিবিআই।
উল্লেখ্য, হাথরাসের তরুণীর মর্মান্তিক মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে গোটা দেশ। গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে মাঠে ঘাস কাটছিলেন ওই তরুণী। কিছুক্ষন পর হাতে ঘাসের বান্ডিল নিয়ে ভাই বাড়ি ফিরে এলেও তখনও মাঠে কাজ করছিলেন মা-মেয়ে।
জানা গিয়েছে, ঘাস কাটতে কাটতে মায়ের থেকে কিছুটা দূরে চলে যায় ওই তরুণী। কিছু সময় পর মাঠে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে তাঁর খোঁজ শুরু করেন ওই তরুণীর মা এবং পরিবারের লোকেরা। এরপর কিছুটা দূরে দোপাট্টা জড়ানো অবস্থায় বাজরা খেতের মধ্যে মেয়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পান পরিবারের লোকেরা। ওই তরুণীর পরিবারের তরফে দাবি করা হয় উচ্চবর্ণের ৪ যুবক তাঁদের মেয়েকে টেনে হিঁচড়ে বাজরা খেতের মধ্যে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে। নির্যাতনের পরিমাণ এতটাই বেশী ছিল যে, ওই তরুণীর ঘাড়ের হাড় এবং শিরদাঁড়া ভেঙে গিয়েছিলো। পুরো পঙ্গু অবস্থায় খেতের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলো সে।
হাথরাসের গণধর্ষণ কান্ডে প্রথম থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছিল নির্যাতিতার পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, তাঁদের মেয়ের উপর যেভাবে নৃশংস অত্যাচার করা হয়েছে তাতে তাঁর শরীরের অনেকগুলি হাড় ভেঙে গিয়েছিল। শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় হাসপাতালে তাঁর অক্সিজেন সাপোর্টেরও প্রয়োজন ছিলো। কিন্ত তরুণীর ক্রমশ স্বাস্থ্যের অবনতি হলেও ঘটনার চার-পাঁচ দিন পরে পুলিশ চাপে পড়ে তদন্ত শুরু করে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে এই ধরনের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়৷
অন্যদিকে ক্ষেত থেকে নির্যাতিতাকে আলীগড়ের জেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হলে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে দিল্লির এইমসে ভরতি করার পরামর্শ দেন। কিন্তু পুলিশ এইমসের বদলে তাঁকে সফদরজং হাসপাতালে এনে ভরতি করেন। টানা দু সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে হার মানেন ওই তরুণী।