নয়া ফাঁদ, টোল ফ্রি নম্বর ব্যবহার করে প্রতারণা জালিয়াতদের

নতুন নতুন ছক কষে প্রতারণা চালাচ্ছে জালিয়াতরা। এমনই ঘটনা সামনে এনেছে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। টোল ফ্রি নম্বর ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের থেকে টাকা হাতানোর ঘটনা সামনে এসেছে। একটি নোটিশ জারি করে আরবিআই জানিয়েছে প্রতারকরা এখন টোল ফ্রি নম্বর ব্যবহার করেছে, যাতে এই ফাঁদে খুব সহজেই পড়েন আম আদমি। বিভিন্ন ব্যাংকের টোল ফ্রি নম্বরের মত দেখতে একটি বিশেষ নম্বর দিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে।

এই ধরণের নম্বর থেকে ফোন গেলে বুঝতে পারছেন না গ্রাহকরা। ফলে ফাঁদে পা দিচ্ছেন তাঁরা খুব সহজেই। তৈরি করা হচ্ছে ভুয়ো প্রোফাইল, যাতে এই সব প্রতারণা সহজে ধরা না পড়ে।

কীভাবে চলছে প্রতারণা :

১. মনে করা যাক এক্স ব্যাংকের টোল ফ্রি নম্বর 1800-456-4567। প্রতারকরা সেখান থেকে 800-456-4567 নম্বরটি তৈরি করে নিয়ে ফোন করছে। গ্রাহকরা দেখে ভাবছেন ব্যাংক থেকে ফোন করা হচ্ছে।

২. যখনই এই ফোন নম্বরে গ্রাহকরা কথা বলছেন, তখন প্রতারকরা ওই ব্যাংকের হয়ে অত্যন্ত পেশাদার ভঙ্গিতে কথা বলছেন। বেশ কিছু তথ্য তাঁরা এই ভাবে সংগ্রহ করছেন গ্রাহকদের থেকে। ব্যাংক ডিটেলস, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের ডিটেলস, সিভিভি, ওটিপি ইত্যাদি তথ্য পেয়েই শুরু হচ্ছে অ্যাকাউন্টের ওপর সাইবার হামলা।

প্রসঙ্গত , ব্যাঙ্কের টোল-ফ্রি নম্বরের কাছাকাছি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির নতুন এক পন্থা সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডিপার্টমেন্ট অফ সুপারভিশন, সেন্ট্রাল অফিস সাইবার সিকিওরিটি অ্যান্ড আইটি রিস্ক গ্রুপ এর তরফে প্রকাশিত ওই সতর্কবার্তাটি জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে নিজেদের ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াও।

নোটিশে জানানো হয়েছে, ব্যাঙ্কের টোল-ফ্রি নম্বর হিসেবে যে সুপারভাইজড এনটিটি’র। এখন কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে, ৮০০-৫২৫-৯৮৯ নম্বরের সিম জোগাড় করে তা ট্রু-কলার বা অন্য কোনও কলার আইডেন্টিফিকেশন নম্বরে ‘ক ব্যাঙ্কের হেল্পলাইন নম্বর বা এসই নম্বর নামে সহজেই সেভ করিয়ে নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা।

এখন কোনও ভাবে গ্রাহক সেই নম্বর ট্রু-কলার বা ওই জাতীয় অ্যাপ থেকে জেনে সেই নম্বরে ফোন করলে বা সরাসরি গ্রাহককে ওই ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয় দিয়ে ফোন করে অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত গোপন তথ্য, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড নম্বর, সিভিভি, নেটব্যাঙ্কিং-এর ইউজারনেম, ওটিপি ইত্যাদি হাতিয়ে নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। যা দিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে ফেলা হচ্ছে গ্রাহকদের অজান্তেই।

এই ধরনের জালিয়াতি থেকে গ্রাহকদের সতর্ক থাকতে বলেছেন শীর্ষ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এই ধরনের প্রতারণা থেকে গ্রাহকদের সুরক্ষিত রাখতে ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সুপারভাইজড এনটিটিগুলিকে যথাবিহিত পদক্ষেপ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। গ্রাহকদের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা ছড়াতে, এই সম্পর্কিত নোটিশ, ই-মেল, এসএমএস গ্রাহকদের কাছে পাঠানোর পরামর্শও দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

একই সঙ্গে গ্রাহকদেরও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, ব্যাঙ্কের রেজিস্টার্ড হেল্পলাইন নম্বর সঠিক ভাবে জেনে নিয়ে শুধুমাত্র সেই নম্বরেই যে কোনও সাহায্যের জন্য ফোন করতে। কাছাকাছি নম্বর থেকে যতই ফোন আসুক না কেন, যতই উল্টো প্রান্তে থাকা ব্যক্তি ব্যাঙ্কের যত উচ্চপদস্থ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে হম্বিতম্বি করুক না কেন, কোনও ভাবেই তাঁকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত কোনও তথ্য জানানো যাবে না। দরকার সরাসরি ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে যে কোনও ধরনের জিজ্ঞাসা বা প্রয়োজনের সমস্যা সমাধান করে নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.