একমাসের মধ্যে তৃতীয়বার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (NIA) জেরার মুখে পড়তে চলেছেন জঙ্গলমহলের নেতা ছত্রধর মাহাতো (Chhatradhar Mahato)। ফের আগামী সপ্তাহে তাঁকে তলব করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর আগে আগস্টের শেষদিকে ২ দিন শালবনিতে গিয়ে তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সম্পাদককে জেরা করেন NIA আধিকারিকরা। মাওবাদীদের সমর্থন ছেড়ে রাজনীতির মূল স্রোতে ফেরার পর সক্রিয়ভাবে তৃণমূলে যোগদান এবং পদ পাওয়ার জন্যই তাঁর উপর কেন্দ্রীয় সংস্থার চাপ বাড়ছে বলে মনে করছেন ছত্রধর মাহাতো।
২০০৯ সালে জঙ্গলমহলের সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুন এবং ওই একই বছরে ভুবনেশ্বর-রাজধানী এক্সপ্রেস হাইজ্যাকের ঘটনায় প্রথম থেকেই অভিযোগের তির ছিল ছত্রধর মাহাতোর দিকে। তখন তিনি জঙ্গলমহলে মাওবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত, তৈরি করেছেন পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণ কমিটি। কার্যত জঙ্গলমহলের সাধারণ জনজীবনের রাশ অনেকটাই তাঁর হাতে। ছত্রধরকে গ্রেপ্তারির জন্য তৎপর হয় পুলিশ প্রশাসন। শেষমেশ গ্রেপ্তারের পর কয়েক বছরের কারাবাস কাটিয়ে ফেব্রুয়ারিতে জেলমুক্ত হন ছত্রধর মাহাতো। এরপরই রীতিমতো ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়ে তৃণমূলের সাংগঠনিক স্তরে রদবদল করতে গিয়ে সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে নিয়ে আসেন রাজ্য কমিটিতে।
এরপর থেকেই আচমকা এক দশকের পুরনো দুটি মামলায় NIA’র অতি সক্রিয়তা নজরে আসে। গত মাসে ছত্রধরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতার দপ্তরে প্রথমে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি জানান যে করোনা পরিস্থিতিতে যানবাহনের সমস্যার জন্য তিনি মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় যেতে পারবেন না। ফলে এনআইএ’র তদন্তকারী একটি দল শালবনির কোবরা ক্যাম্পে তাঁকে ডেকে টানা দু’দিন ধরে জেরা করে। পরে প্রয়োজনে ডেকে পাঠানো হবে বলেও জানান আধিকারিকরা। তারপর একমাসও কাটেনি। ফের তাঁকে তলব করা হল।
তবে এবার কি ছত্রধর মাহাতোকে কলকাতার অফিসে আসতে হবে নাকি তদন্তকারীরাই মেদিনীপুর যাবেন, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। আগামী সপ্তাহে জঙ্গলমহলের জনপ্রিয় নেতাকে ফের এনআইএ’র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের মত, রাজ্যের শাসকদলের এক গুরুত্বপূর্ণ পদপ্রাপ্তির জেরেই পুরনো মামলায়
বারবার তাঁকে টার্গেট করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ছত্রধর নিজেও তেমনই মনে করেন।