উঁচু নীচু অসমতল, কোথাও খাড়াই পাহাড়। এরই মাঝে অবতরণ করতে হবে নাসার স্বপ্নের মঙ্গলযান পারসিভিয়ারেন্সকে। ২০২১ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি অবতরণের দিন স্থির করা রয়েছে। সেটাই চ্যালেঞ্জ নাসার বিজ্ঞানীদের কাছে। অবতরণ নিরাপদ ও মসৃণ না হলে, এতদিনের পরিশ্রম ও প্রতীক্ষা মাটি হয়ে যাবে।
সাত মাসের যাত্রার পর এবার মঙ্গল গ্রহের মাটিতে নামার পালা মঙ্গলযান পারসিভিয়ারেন্সের। এই পারসিভিয়ারেন্সে রয়েছে একটি ল্যান্ডার ভিশন সিস্টেম, রয়েছে টেরেন রিলেটিভ নেভিগেশন। পারসিভিয়ারেন্সের যাত্রাই ২০২০ সালে নাসার সর্বাধিক বড় মিশন ছিল। এই মঙ্গলযানে রিয়েল টাইম ছবি তুলে রাখার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র রয়েছে। মঙ্গলযানটির মধ্যে থাকা সফটওয়্যার এই রোভারকে পছন্দমত স্থান নির্বাচন করে নামতে সাহায্য করবে।
নাসা জানাচ্ছে, মঙ্গলে ‘জেজোরো ক্রেটার’ এলাকায় নামতে চলেছে নাসার সাধের মঙ্গলযান পারসিভিয়ারেন্স। এলাকাটার আয়তন ২৮ মাইলেরও বেশি। ওই গোটা এলাকাই জেজোরো ক্রেটার নামে পরিচিত। এই জায়গাটি বেশ কয়েক কোটি বছর আগে কোনও সুবিশাল আগ্নেয়গিরির জন্য ওই বিশালাকার গর্ত বা ক্রেটার তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এলাকাটি ভর্তি খুব উঁচু উঁচু পাহাড়ে। সমতল সেখানে খুবই কম। ৩০০ কি ৪০০ মিটার অন্তর সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গ।
তাই অবতরণের জন্য প্রয়োজন অসম্ভব দক্ষতার। নিখুঁত টাইমিং ও সঠিক স্থান নির্বাচন এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানাচ্ছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। নামার আগে থেকে খুব নিখুঁত ভাবে জায়গাটাকে চিনতে বুঝতে না পারলে যে কোনও সুউচ্চ পাহাড়ে ধাক্কা লেগে ভেঙে পড়তে পারে নাসার ল্যান্ডার ও রোভার। এমনকি তা পাহাড়ের খাঁজে আটকে গিয়ে বিকল হয়ে যেতে পারে মুহুর্তে।
২০২০ সালে নাসার পক্ষ থেকে এই মঙ্গল-অভিযানের যে দিন ধার্য করা ছিল, তা হল ২৭ শে জুলাই। একাধিক কারণে পরবর্তীতে তা পিছিয়ে ৩০শে জুলাই করা হয়। ৩০শে জুলাই নির্ধারিত সময় মেনেই ইস্টার্ন ডেলাইট টাইম ৭টা ৫০ অর্থাৎ ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ এটি মহাকাশে পাড়ি দেয়। আটলাস ভি-৫৪১ রকেটে চেপে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে মঙ্গলের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় পারসিভিয়ারেন্স রোভার।