এবার খাস কলকাতায় রাতে নয়, বরং প্রকাশ্য দিনের আলোয় হেনস্তার শিকার সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী (MP, actor Mimi Chakraborty)। গতকাল অর্থাৎ সোমবার জিম থেকে বাড়ি ফেরার সময় বালিগঞ্জ এলাকার এক মদ্যপ ট্যাক্সি ড্রাইভার সাংসদকে লক্ষ্য করে অশ্লীল ইঙ্গিত করে। শুধু তাই নয়, তাঁকে কটূক্তিও করে। এরপরই তড়িঘড়ি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন মিমি। ঘটনায় গ্রেপ্তার অভিযুক্ত।
সোমবার বেলা দেড়টা নাগাদ জিম করে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি সংলগ্ন এলাকা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মিমি, তখনই এক ট্যাক্সি অভিনেত্রীর গাড়ি লক্ষ্য করে ওভারটেক করার চেষ্টা করে। এবং অশ্লীল আচরণও করে। এরপরই গাড়ি থামিয়ে কথা বলতে গেলে সাংসদ-অভিনেত্রীর ড্রাইভারের সঙ্গে অভব্য আচরণ করে ওই ব্যক্তি। বাক-বিতণ্ডার মাঝেই সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করা শুরু করে ওই ট্যাক্সি ড্রাইভার। ঘটনার পরই গড়িয়াহাট পুলিশ স্টেশনে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন মিমি চক্রবর্তী।
ঘটনার জেরে সংবিধানের ৩৫৪, ৩৫৪এ, ৩৫৪ডি এবং ৫০৯ ধারায় অভিযোগ দায়ের হয় ওই ট্যাক্সি চালকের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতেই ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যার জন্য কলকাতা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি। অভিযুক্ত আপাতত জেল হেফাজতে রয়েছে। খুব শিগগিরিই আদালতে তোলা হবে তাঁকে।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মিমি চক্রবর্তীর মন্তব্য, “আমার বাড়ি থেকে জিম খুব বেশি দূরে নয়। গতকাল জিম থেকে যখন বাড়ি ফিরছিলাম, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি এলাকায় দিয়ে যাওয়ার সময়ে হঠাৎ দেখি এক ট্র্যাক্সি ড্রাইভার আমাকে দেখে কু-ইঙ্গিত করছে। চোখ মারছে। প্রথমে ভেবেছিলাম এটা হয়তো ওই ব্যক্তির মুদ্রাদোষ। তাই এড়িয়ে এগিয়ে যাই। কিন্তু পরে দেখলাম না, ওই গাড়িটা এগিয়ে এসে আবার আমায় নোংরা অঙ্গিভঙ্গি করছে। তখন মনে হল, আজ ওকে ছেড়ে দিলে রাতের শহরে যখন অন্য কোনও মেয়ে ওর ট্যাক্সিতে উঠবে, তাঁদের মোটেই নিরাপত্তা থাকবে না। উপরন্তু সে মদ্যপও ছিল। অত বৃষ্টির মাঝেই আমার ড্রাইভারকে বললাম ওই গাড়িকে ওভারটেক করে দাঁড় করাতে। ওকে ধরে যা শিক্ষার দেওয়ার দিয়েছিলাম। তখন যেহেতু আমি গাড়ি থেকে নেমেছি, ভিড় জমতে শুরু করে। যানজট শুরু হয়ে যায়। তাই ওখান থেকে বেরিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করি। গতকাল রাতেই কলকাতা পুলিশ ওই ট্যাক্সি চালককে গ্রেপ্তার করে।”
পাশাপাশি সাংসদ এও জানান যে, “আজকে যদি আমি ওকে ছেড়ে দিতাম, তাহলে পরের দিন ও অন্য কোনও মেয়ের গায়ে হাত দেওয়ার সাহস পেত। নিরাপদে বাড়ি ফেরার জন্য একটা ট্যাক্সিতে মেয়েরা চালককে বিশ্বাস করেই উঠবে। কিন্তু কিছু মানুষের জন্য এই বিশ্বাসটা নষ্ট হোক, আমি মোটেই চাই না। তাই একজন কর্তব্যশীল নাগরিক হিসেবে এই ধরনের মানুষকে উচিত শিক্ষা দেব ভেবেছিলাম। ধন্যবাদ কলকাতা পুলিশকে যে তাঁরা অতি তৎপরতার সঙ্গে বিষয়টির পদক্ষেপ করেছেন।”