গত বছরের ১৫ জুনে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত এবং চিনা সেনার মুখোমুখি হয়েছিল। কেমন ভাবে আক্রমণ শুরু হয়েছিল? নদী পেরিয়ে কী ভাবে ভারতীয় সেনার উপর হামলার ছক কষেছিল চিনা সেনা? চিনের সেনাদের হাতে কাঁটা লাগানো লাঠি, বর্ম। শুরু হয় বচনা, হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি। গালওয়ানের সেই ভয়াবহ ভিডিও-ই প্রকাশ করেছে চিনের সরকারি মিডিয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে সেই ভিডিও। এবং সেখানেই দেখা গিয়েছে দুর্গম নদী পেরিয়ে কী ভাবে ঝাঁকে ঝাঁকে চিনের সেনা ভারতে প্রবেশ করছে।
সীমান্ত নিয়ে ভারতের সঙ্গে চিনের বিরোধ নতুন নয়। দশকের পর দশক ধরে, দু’দেশের মধ্যে এই বিরোধ চলে আসছে। কিন্তু গত বছর জুন মাস থেকে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় যে সংঘাত শুরু হয়েছে, তেমনটা এর আগে দেখেনি বিশ্ববাসী। গালওয়ানের সেই সংঘর্ষে সেনা অফিসার-সহ ২০ ভারতীয় জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। ভারত দাবি করেছিল, চিনের বহু সেনার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু চিন তা স্বীকার করেনি। এর পর আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ উইক’-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ভারতের ২০ জওয়ানের পাশাপাশি চিনের পিপলস আর্মিরও ৬০ জন সেনা মারা গিয়েছে। যদিও সেই তথ্য সামনে আনেনি চিন, এমনটাই লেখা হয়েছিল প্রতিবেদনে। এমনকী ভারতীয় সেনার চাপে চিনা সেনার পিছু হটার কথাও উল্লেখ করা হয়। যদিও তার পরেও কেটে গিয়েছে আট মাস। সীমান্ত সমস্যা সমাধান হয়নি।
সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। এত দিন অস্বীকার করলেও ৫ চিনা জওয়ানের প্রাণহানির কথা অবশেষে শুক্রবার স্বীকার করেছে বেজিং। সে দিনের হাতাহাতির ঘটনার এই ভিডিও প্রকাশ করেছে সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমে। মনে করা হচ্ছে, সে দেশের অভ্যন্তরীণ ক্ষোভকে প্রশমিত করতেই এই ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। ঘটনার আট মাস বাদে বেজিংয়ের তরফ থেকে স্বীকারোক্তি একপ্রকার নৈতিক জয় হিসেবেই দেখছে দিল্লি।
প্যাংগং হ্রদের উত্তর-দক্ষিণ বরাবর এলাকা থেকে সেনা সরানোর বিষয়ে দু’পক্ষ আলোচনা শুরু করেছে বলে সংসদে সম্প্রতি জানিয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। একইসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, যত দ্রুত সম্ভব সেনা সরাতে দু’দেশই সহমত পোষণ করেছে।