তাঁর রাজ্যসভার সদস্য হওয়া নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু সমালোচনার ধার না ধেরে সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্যপদ গ্রহণ করেছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ (Ranjan Gogoi)। প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেওয়ার বছরখানেকের মধ্যেই সাংসদ হওয়ার এই নজির আগে দেখা যায়নি। সেসময় অনেকেই সমালোচনা করেছিল। নিন্দুকেরা বলেছিল, রাম মন্দির, রাফালের মতো রায় সরকারের পক্ষে যাওয়ার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। বিচারপতি গগৈ কিন্তু শুরু থেকেই বলে আসছিলেন তাঁর সংসদে যাওয়ার উদ্দেশ্য একটাই, বিচারব্যবস্থার প্রতিনিধিত্ব করা। কোনওরকম সরকারি সুবিধা পেতে তিনি সংসদে যাচ্ছেন না। যেমন বলা তেমনই কাজ।
সম্প্রতি RTI-এর অধীনে এক প্রশ্নের উত্তরে জানা গিয়েছে, রাজ্যসভার একমাত্র সাংসদ হিসেবে সরকার প্রদত্ত ভাতা বা বেতন কোনওটাই নেন না তিনি। রাজ্যসভার (Rajya Sabha) সচিবালয় জানিয়েছে, বিচারপতি গগৈ সাংসদ হওয়ার পরই রাজ্যসভার সচিবালয়কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, সাংসদ হিসেবে প্রাপ্য কোনও সরকারি সুবিধাই তিনি নিতে চান না। বরং প্রধান বিচারপতি হিসেবে যে সরকারি পেনশন পান না তাতেই গুজরান করতে চান। উল্লেখ্য, সাংসদের মাসিক বেতন এবং ভাতার তুলনায় প্রধান বিচারপতি পদের পেনশন অনেকটাই কম। গগৈয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি হিসেবে তিনি ৮২ হাজার ৩০০ টাকা পেনশন পান। এবং তাতেই এখন তাঁর খরচ চলছে।
এতো গেল গগৈয়ের কথা, এবার আসা যাক সার্বিক রাজ্যসভার চিত্রটিতে। রাজ্যসভার সচিবালয় থেকে জানা গিয়েছে, শুধু সাংসদদের বেতন বাবদ মাসিক তিন কোটি টাকা ব্যয় হয় সরকারের। রঞ্জন গগৈ ছাড়া আর দু’জন সাংসদ আছেন, যারা বেতন নেন না, শুধু ভাতা নেন। এঁরা হলেন আরজেডির মনোজ ঝাঁ এবং বিজেপি মনোনীত রাকেশ সিনহা (Rakesh Sinha)। এঁরা দুজনেই অধ্যাপক হিসেবে সরকারের থেকে বেতন পেয়ে থাকেন। এছাড়া রাজ্যসভার ১৭টি সাংসদ পদ এই মুহূর্তে শূন্য। তাই তাঁদের বেতন হিসেবের মধ্যে ধরা হয়নি। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য RTI-এর উত্তরে জানা গিয়েছে। রাজ্যসভায় বর্তমান সাংসদদের দ্বিগুণেরও বেশি প্রাক্তন সাংসদ এখনও পেনশন পান। তাতেও প্রচুর অর্থব্যয় হয় সরকারের।