এভারেস্ট (Mount Everest) জয়ের ভুয়ো দাবি! আর সেই ভুয়ো কীর্তির জেরেই রাষ্ট্রপতির হাত থেকে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের (Adventure Sports) সর্বোচ্চ সম্মান – তেনজিং নোরগে (Tenjing Norge) পুরস্কার পেতে চলেছেন হরিয়ানার নরেন্দ্র সিং (Narendra Singh) নামে এক পর্বতারোহী। ২০১৬ সালের এভারেস্ট অভিযানের যে ছবি এবং দাবি তিনি তুলেছেন তা ভুয়ো বলে অভিযোগ সেই দলেরই আরেক অভিযাত্রী অসমের নবকুমার ফুকনেরের। একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বলেছেন, ২৪ বছরের নরেন্দ্র কোনওদিন এভারেস্ট জয় করেনইনি। তাঁর দাবি, ভুয়ো সার্টিফিকেট আর ছবি দেখিয়ে এত বড় সম্মান পাচ্ছে, এটা কলঙ্কের। তিনি-সহ আরও অনেক পর্বতারোহী কেন্দ্রীয় যুবকল্যাণ ও ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু এবং ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফেডারেশনকে ই-মেল মারফত অভিযোগ জানিয়েছেন।
এবছর ২৯ আগস্ট তেনজিং নোরগে সম্মান প্রাপকদের ভারচুয়ালই পুরস্কার দেওয়া হবে। এভারেস্ট জয়ের যে ছবি নিয়ে এত শোরগোল, তাতেও অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি পর্বতারোহীদের। ২০১৬ সালে এভারেস্ট শৃঙ্গ ওইরকম দেখতে ছিল না বলে দাবি অনেকের। নরেন্দ্র সিংয়ের এভারেস্ট জয়ের ছবিতে যে যে অসঙ্গতিগুলি উঠে এসেছে সেগুলি হল-
পর্বতারোহীর মুখে অক্সিজেন মাস্ক থাকলেও তাতে পাইপ সংযুক্ত নেই।
নরেন্দ্রর হাতে থাকা পতাকাগুলি একেবারে স্থির। অত উচ্চতায় যা কোনওভাবেই সম্ভব নয়।
প্রবল হাওয়ায় আশেপাশে থাকা পতাকাগুলি বিপরীত অভিমুখে উড়ছে।
পাশে বসে থাকা পর্বতারোহীর বুটের ছায়া এবং নরেন্দ্রর ছায়া বিপরীত দিকে।
এত উচ্চতায় শ্বাসপ্রশ্বাসের কারণে মাস্কের নিচে বরফ জমে যাওয়ার কথা। কিন্তু তেমন কিছুই নেই।
নরেন্দ্রর পোশাক একেবারে ধোপদুরস্ত। এভারেস্ট সামিটের দিন পোশাক এত টানটান থাকার কথা নয়।
এভারেস্ট সামিটের দিন কেউ হেলমেট এবং ডাউন স্যুট পরে না। আর হেলমেটে কোনও হেডল্যাম্পও নেই।
চোখের চশমায় কোনও প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে না।
বহু পর্বতারোহী অভিযোগ করেছেন, বছরের পর বছর ধরে সত্যরূপ সিদ্ধান্ত, অরুণ বাজপেয়ী, প্রিয়াঙ্কা মঙ্গেশ মোহিতের মতো পর্বতারোহী এই পুরস্কারের জন্য আবেদন করেও অবহেলিত হয়েছেন। সত্যরূপ সপ্তশৃঙ্গ, সপ্ত আগ্নেয়গিরি জয় করেও এই সম্মান থেকে বঞ্চিত। আর এদিকে, ভুয়ো ছবি ও সার্টিফিকেট দেখিয়ে একজন প্রতারক তেনজিং নোরগে সম্মান পাবে তা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ উঠে এসেছে পর্বতারোহী মহল থেকে।