লকডাউনে রান্নাবান্নার ঝক্কি কমাতে বেড়েছে ফ্রোজেন ফুড বা বরফজমা প্যাকেটজাত খাবারের চাহিদা। তবে সংক্রমণের ভয়ও ছিল একইসঙ্গে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, প্যাকেটজাত খাবার নিয়ে ভয়ের তেমন কারণ নেই। সিফুড থেকে চটজলদি বানিয়ে নেওয়া যাবে, এমন খাবারে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি থাকতে পারে না বললেই চলে। সঠিক প্রক্রিয়া মেনে তা খেলে সমস্যা হবে না। কিন্তু চিনের কুইঙ্গদাওয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য নতুন করে ছড়াল আতঙ্ক। প্যাকেটজাত সিফুডে নোভেল করোনা ভাইরাসের হদিশ পাওয়া গিয়েছে বলেই জানাচ্ছে তারা।
চিনের বন্দরে সম্প্রতি দুই কর্মীর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসতেই উদ্বেগ বাড়ে। তাঁদের শরীরে করোনার কোনও উপসর্গও ছিল না। ২০ আগস্টের পর এই প্রথম উপসর্গহীন করোনা রোগীর হদিশ মিলল সে দেশে। তখনই দেখা যায়, হিমায়িত প্যাকেটজাত খাবারেই রয়েছে ভাইরাস। আর এতেই বাড়ে চিন্তা। গোটা বিশ্বে করোনার প্রকোপ বাড়ার পরই ইকুয়েডর, ব্রাজিল-সহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে সিফুডের আমদানি বন্ধ করেছিল চিন। এবার নতুন করে আতঙ্ক ছড়ানোয় ফ্রোজেন ফুড নিয়ে নতুন করে বিধিনিষেধ জারি করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঘটনাটি ঘটেছে কুইঙ্গদাওয়ের শ্যানডন প্রদেশে। ফ্রোজেন ফুড স্থানান্তরিত করার কাজে যুক্ত বন্দর কর্মীদের নিয়ম মাফিকই করোনা পরীক্ষা করা হয়। সেখানেই তাঁদের শরীরে ভাইরাসের হদিশ মেলে। উপসর্গ না থাকায় বিষয়টি টেরও পাওয়া যায়নি। তাছাড়া মাস খানেকেরও বেশি সময় লক্ষণহীন কোনও করোনা রোগীর খবর পাওয়া যায়নি বলে অনেকটাই নিশ্চিন্তে ছিল বেজিং। কিন্তু এবার নতুন করে জোড়া আতঙ্ক তৈরি হল। প্রথমত, লক্ষণহীন ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত। আর দ্বিতীয়ত, ফ্রোজেন সিফুড ও প্যাকেটজাত মাংসে মিলল করোনার সন্ধান।
স্থানীয় স্বাস্থ্য কমিশনার জানিয়েছেন, দুই করোনা পজিটিভের সংস্পর্শে আসা ১৩২ জনকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। তবে তাঁদের মধ্যে ১২৯ জনের রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্যাকেটজাত খাদ্যপণ্যের হাত ধরে এক দেশের সীমানা পেরিয়ে অন্য দেশে ঢুকে পড়ছে SARS-CoV-2। এবং ক্রমেই তার বিস্তৃতি বাড়ছে। একাধিক দেশের বন্দরের কর্মীরাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও বিজ্ঞানীদের ধারণা এই সমস্ত খাদ্যপণ্য স্থানান্তরের ক্ষেত্রে COVID-19 সংক্রমণের ভয় অত্যন্ত কম।