আর কোনও ওষুধেই হচ্ছে না কাজ। শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। তবে এখনও বেসরকারি হাসপাতালের বেডে শুয়ে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee)। কোনও বিস্ময় ঘটে কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন চিকিৎসকরা। বেলভিউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ঘোষণার আগেই অভিনেতাকে মৃত বলে উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্টে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। তিনি লেখেন, “নক্ষত্র পতন !!! আলোকময় দীপাবলী’র রাত অন্ধকার করে চলে গেলেন আমাদের সকলের প্রিয় ফেলুদা !!!”
কিংবদন্তি অভিনেতার মৃত্যুর আগে কীভাবে এমন পোস্ট করতে পারেন বিজেপি নেতা, সেই প্রশ্নে সরব হয়ে ওঠেন সৌমিত্র অনুরাগীরা। তবে বিতর্কের মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আবারও তাঁর পোস্টের স্বপক্ষে যুক্তি দেন অনুপম। তাঁর দাবি, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসা করছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ একজন। তাঁর মাধ্যমে তিনি মৃত্যু সংবাদ পেয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কালীপুজো নিয়ে ব্যস্ত থাকায় অভিনেতার মৃত্যুর খবর ঘোষণায় দেরি হচ্ছে বলেও দাবি অনুপম হাজরার।
৬ অক্টোবর করোনা (CoronaVirus) আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ১৪ অক্টোবর করোনা (COVID-19) মুক্ত হন তিনি। তারপর থেকেই কোভিড এনকেফ্যালোপ্যাথির (Covid Cncephalopathy) জন্য আচ্ছন্নভাব ছিল। প্রায় ৪০ দিন ধরে ‘বেস্ট এফোর্ট’ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দল। নিউরোলজি, নেফ্রোলজি থেকে কার্ডিয়াক, অ্যান্টি-ভাইরাল সমস্ত বিভাগের বিশেষজ্ঞরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বুধবার বর্ষীয়ান অভিনেতার ট্র্যাকিওস্টমি করা হয়েছিল। সফলভাবেই তা সম্পন্ন হয়েছিল। বৃহস্পতিবারই আবার তাঁর প্রথম পর্যায়ের প্লাজমাফেরেসিস (Plasmapheresis) সম্পন্ন হয়। আশা করা হয়েছিল প্লাজমাফেরেসিসের পর অভিনেতার আচ্ছন্নভাব ও অসংলগ্নতা অনেকটাই কেটে যাবে। কিন্তু শুক্রবার তার কিছুই হয়নি। উলটে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা অতি সংকটজনক। লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে। চিকিৎসাতে আর কোনও সাড়া দিচ্ছেন না। ধীরে ধীরে তাঁর একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গও বিকল হয়ে যাচ্ছে। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা অত্যন্ত কম। ক্রমশ জোরাল হচ্ছে মার্টি অরগ্যান ফেলিওরের সম্ভাবনা। হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও। ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা সৌমিত্র কন্যা পৌলমীর।