বিশ্বে মোট করোনা (Coronavirus) আক্রান্তের সংখ্যা কত? খাতায় কলমে হিসেব বলছে কমবেশি সাড়ে ৩ কোটি। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এই সংখ্যাটা তো হিমশৈলের চুড়া মাত্র। আসলে এর চেয়ে অনেকগুণ বেশি মানুষ এই মারণ ভাইরাসের কবলে পড়েছেন। শুধু উপসর্গ দেখা না যাওয়া বা করোনা পরীক্ষা না হওয়ার জন্য তা প্রকাশ্যে আসেনি। WHO‘র আশঙ্কা, ইতিমধ্যেই প্রত্যেক দশজনের মধ্যে একজনের শরীরে এই মারণ ভাইরাস থাবা বসিয়ে ফেলেছে। অর্থাৎ বিশ্বের ১০ শতাংশ মানুষ এই ভাইরাসের কবলে পড়ে গিয়েছেন। আর এদের অধিকাংশই উপসর্গহীন। সুতরাং, এই আক্রান্তের সংখ্যাটা আরও অনেকগুণ বাড়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।
জেনিভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বৈঠকে WHO’র জরুরি বিভাগের কর্তা মাইক রায়ান জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যাটা ৮০ কোটি পর্যন্ত হতে পারে। তাঁর দাবি, এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষই এই ভাইরাসের কবলে পড়ে থাকতে পারেন। এর অর্থ হল, বিশ্বের একটা বড় অংশের মানুষ এখনও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে আছেন। আমাদের বুঝতে হবে, এই মহামারী আরও ভয়াবহ হতে পারে। তাই সংক্রমণ কমাতে আমাদের হাতে যা যা উপায় আছে, সব আরও কার্যকরীভাবে ব্যবহার করতে হবে।
গত বছর ডিসেম্বরে প্রথমবার ইউহানে মারণ করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। তারপর থেকে তা গ্রাস করে গোটা বিশ্বকে। স্তব্ধ হয়ে যায় জনজীবন। চিন, ইতালি, স্পেন, ব্রিটেন, রাশিয়া, ব্রাজিল, ভারত, আমেরিকা–একের পর এক দেশ করোনার গ্রাসে এসেছে। লাফিয়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। অব্যাহত মৃত্যুমিছিলও। আজ গোটা বিশ্বে সরকারি হিসেবে COVID-19 আক্রান্তের সংখ্যাটা সাড়ে ৩ কোটি ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে দশ লক্ষের বেশি মানুষের। আর এর সিংহভাগটাই আমেরিকা, ভারত এবং ব্রাজিলের বাসিন্দা। এ বিষয়টিতে আলোকপাত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুস (Tedros Adhanom Ghebreyesus)। তিনি বলছেন,”মানছি যে বিশ্বের সব দেশে এই ভাইরাস থাবা বসিয়েছে। কিন্তু মোট আক্রান্তের ৭০ শতাংশই এসেছে মাত্র ১০টা দেশ থেকে। মাত্র ৩ টে দেশই অর্ধেক মৃত্যুর জন্য দায়ী।” WHO কর্তার দাবি, এতেই বোঝা যাচ্ছে আমারা একত্রিত হলে, ভাইরাস এতটা প্রভাব ফেলতে পারত না।