বৃহত্তর কলকাতার সিইএসসি (CESC) গ্রাহকদের জন্য আপাতত স্বস্তির খবর। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের অনাদায়ী মিটার রিডিং আপাতত দিতে হবে না, শুধুমাত্র জুন মাসের সংশোধিত বিল দিলেই হবে। গ্রাহক স্বার্থে বুধবার এমনই ঘোষণা করেছে সিইএসসি। চলতি সপ্তাহের শেষদিক থেকে সংশোধিত আকারে জুন মাসের বিদ্যুতের বিল এবং সঙ্গে একটি করে চিঠি পাবেন গ্রাহকরা। সিইএসসি-র ম্যানেজিৎ ডিরেক্টর (ডিস্ট্রিবিউশন) দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানিয়েছেন , “গ্রাহকদের স্বার্থের কথা ভেবে সংশোধন করে বিল পাঠানো হচ্ছে। যে অনাদায়ী অংশের বিল যুক্ত হয়েছিল আগে, আপাতত তা দিতে হচ্ছে না। শুধুমাত্র জুন মাসের বিলই দিতে হবে। বিলের সঙ্গে চিঠিতে মিটার রিডিং, অন্যান্য বিষয়ের বিস্তারিত ব্যাখ্যা থাকছে।”
জুন মাসের বিদ্যুতের বিল নিয়ে শহরবাসীর একাংশের বিক্ষোভ ও রোষের জেরে গত মাসে নবান্নকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। এমনকী বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সিইএসসি কর্তাদের তলব করে জানিয়ে দেন, সংশোধিত বিল না পাওয়া পর্যন্ত গ্রাহকরা টাকা জমা দেবেন না। এরপর গত ১৯ জুলাই সিইএসসি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, “এপ্রিল-মে মাসের অনাদায়ী বিলের অংশ তারা এখন নেবে না। শুধু জুনের টাকাই নেওয়া হবে।” আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পার হওয়ার পরেও সংশোধিত বিল না আসায় নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছিল গ্রাহকদের। শেষে এদিন সিইএসসি জানিয়ে দিল, শীঘ্রই শুধু জুন মাসের সংশোধিত বিল পাঠানো হচ্ছে। কারণ, লকডাউনের জেরে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের অনাদায়ী মিটার রিডিং ও বিলের হিসাব করতে সময় লাগছে। যেহেতু ওই তিন মাস মিটার রিডিং ছাড়াই একটা গড় হিসাবে বিল নেওয়া হয়েছে তাই বকেয়া হিসাব করে চূড়ান্ত করার সময় গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনা করা হচ্ছে।
সিইএসসি আধিকারিকরা এদিন তথ্য ও উদহারণ দিয়ে বলেন, লকডাউনের (Lockdown) আগে কোনও গ্রাহকের মার্চ মাসে ডোমেস্টিক মিটার রিডিং ছিল ২০০ ইউনিট। লকডাউনের কারণে মিটার রিডিং নেওয়া যায়নি। জুন মাসে যখন রিডিং নেওয়া হল, তখন মিটারে ৪০০ ইউনিট দেখাচ্ছে। অঙ্কের হিসাবে গত চার মাসে ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন গ্রাহক। স্বভাবতই মোট ইউনিটকে চার মাসে ভাগ করলে প্রতি মাসে ৫০ ইউনিট খরচ হয়েছে। তাই এবার জুন মাসের হিসাবে গ্রাহককে মাত্র ৫০ ইউনিটের বিল জমা দিতে হবে। সেই বিলটাই বাড়ি বাড়ি পাঠাচ্ছে সিইএসসি। অঙ্কের হিসাবে বকেয়া তিন মাসের ১৫০ ইউনিটের টাকা থাকছে। এবার যে সমস্ত গ্রাহক মিটার রিডিং না নিলেও ওই তিন মাসের বিদ্যুতের বিলের টাকা জমা দিয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে বকেয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। যদিও পরবর্তী ক্ষেত্রে বিদ্যুতের বিলের সঙ্গে কীভাবে অনাদায়ী বিল যুক্ত এবং ‘অ্যাডজাস্ট’ হবে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে সিইএসসি সূত্রে খবর।
সিইএসসির দাবি, করোনার সময়ে লকডাউনে আটকে থাকা গ্রাহকদের স্বার্থ এবং অসুবিধার কথা ভেবে ফের স্বচ্ছভাবে নতুন বিল পাঠানো হচ্ছে। কলকাতার গ্রাহকদের সিইএসসি যে সুবিধা দিচ্ছে তা দেশের অন্য মহানগরের বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা পাচ্ছেন না। অধিকাংশ শহরে পুরো বিলের টাকাই জমা দিতে হচ্ছে, দাবি সিইএসসি কর্তাদের।