অবশেষে টনক নড়ল কেন্দ্রের! হাতের বাইরে বেরনোর আগেই নাগাল্যান্ডের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলির উপর রাশ টানতে উদ্যোগী হল খোদ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। সূত্রের খবর, নাগাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য এবার খোদ ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ডিরেক্টর অরবিন্দ কুমারকে (Arvind Kumar) দায়িত্ব দিল কেন্দ্র। এতদিন যিনি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিলেন সেই আর এন রবিকে সরিয়ে দেওয়া হল।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সূত্রের খবর, গত প্রায় ৬ বছর ধরে একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী নাগা সংগঠনের সঙ্গে কথা বলছিলেন আর এন রবি (RN Ravi)। কিন্তু, প্রায় মাসছ’য়েক আলোচনায় কোনও অগ্রগতি হয়নি। এরই মধ্যে আবার স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়িয়ে নাগা সংগঠনের নেতা থুইঙ্গালাং মুইভা (Thuingaleng Muivah) দাবি করেছেন, ‘৫ বছর আগেই ভারত সরকার নাগাল্যান্ডের সার্বভৌমত্বে স্বীকৃতি দিয়েছে। নাগারা ভারতের সঙ্গে সহাবস্থান করবে। কিন্তু কোনওদিন ভারতের সঙ্গে মিশে যাবে না।’ এমনকী ২০১৫ সালে ভারত সরকার এবং নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এনএসসিএন(আইএম)-এর মধ্যে যে গোপন চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তিপত্রও প্রকাশ্যে আনেন মুইভা। যা রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে কেন্দ্রকে। সূত্রের খবর, নাগাদের এই আচরণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্বিগ্ন। তাই তিনিই আরএন রবির জায়গায় আইবির ডিরেক্টর অরবিন্দ কুমারকে নাগা সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনার দায়িত্ব দিচ্ছেন।
নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, অসম ও মায়ানমারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে নাগা স্বাধীনভূমি বা ‘নাগালিম’ গড়ার ডাক বহুদিনের৷ এই দাবিতে অনেক দিন ধরেই জঙ্গি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এনএসসিএন (NSCN)৷ সংগঠনটি দু’ভাগ হয়ে যাওয়ার পর মুইভা গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে কেন্দ্র৷ কিন্তু সমস্ত আলোচনার থমকে আছে এনএসসিএন(আইএম)-এর দুটি দাবির উপর। পৃথক পতাকা এবং পৃথক সংবিধান। যা কিছুতেই মানতে নারাজ দিল্লি। ২০১৫ সালে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটির সঙ্গে শান্তিচুক্তি করে মোদি সরকার। তারপর এই সংগঠনটি জঙ্গি আন্দোলন প্রত্যাহারেও রাজি হয়। কিন্তু এবছর স্বাধীনতা দিবসের আগে আরও একবার নিজেদের পুরনো দাবিতে সরব হলেন এনএসসিএন (আইএম) নেতা থুইঙ্গালাং মুইভা। তাঁর দাবি, ২০১৫ সালে যে চুক্তি হয়েছিল তাতে ভারত সরকার নাগাল্যান্ডের পৃথক জাতীয় পতাকা এবং আলাদা সংবিধানের দাবিতে স্বীকৃতি দেয়। এমনকী দুই দেশের পৃথক সহাবস্থানের কথাও বলা হয়। আর তাতেই চিন্তিত দিল্লি।