রামজন্মভূমি অযোধ্যা ছিল সর্বোৎকৃষ্ট মহানগরী

গত ৫ আগস্ট বেলা ১২-১৫ মিনিটে জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী অভিজিৎ মূহূর্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে অযোধ্যায় রামজন্মভূমি মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছে। বাল্মীকি রামায়ণ অনুযায়ী উল্লেখিত এই নক্ষত্রযোগে রামচন্দ্রের জন্ম হয়েছিল। এদিনের এই সমারোহের ৩১ বছর আগে ১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর দেবোত্থান একাদশীতে কামেশ্বর চৌপালের হাতে রামন্দিরের শিলান্যাস হয়েছিল। কিন্তু অপরিসীম সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বাধাবিঘ্নে সে এখন অতীতের স্মৃতির অতলে। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মহাসমারোহে এবারের এই ভূমিপূজন অন্য দিক দিয়েও বেশি মহত্ত্বপূর্ণ। কারণ স্বৰ্গত অশোক সিঙ্লের নেতৃত্বাধীন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের চেষ্টায় দেশের প্রায় সমস্ত সাধুসন্তকে নিয়ে গঠিত রামজন্মভূমি ন্যাস বাস্তুশাস্ত্রবিদ চন্দ্রকান্তভাই সোমপুরাকে দিয়ে রামজন্মভুমি মন্দিরের যে নকশা প্রস্তুত করিয়েছিলেন এখন তার কিছু পরিবর্ধন করা হয়েছে। যেমন সামগ্রিকভাবে মন্দির পরিসরের ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি। আগের নকশায় গর্ভগৃহ ছাড়াও নৃত্যমণ্ডপ, কীর্তন মণ্ডপ-সহ মোট আরও তিনটে মন্দির নির্মাণের কথা ছিল। এখন তার সঙ্গে আরও দুটো মিলে ক্রমপর্যায়ে মোট পাঁচটা মণ্ডপ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগের নকশায় মণ্ডপগুলো তিন তলা হবে ঠিক ছিল। এখন তা পাঁচ তলা করা হচ্ছে। তার ফলে মূল মন্দির বা গর্ভগৃহ মন্দিরের চূড়ার উচ্চতাও আরও ২০ ফুট বৃদ্ধি করা আবশ্যক। হয়ে পড়েছে। এখন মন্দির হবে ৩৬০ ফুট দৈর্ঘ্য, ২৩৫ ফুট প্রস্থ এবং চূড়ার উচ্চতা হবে ১৬১ ফুট। পুরো মন্দির পরিসরের নামকরণ করা হয়েছে ‘রামজন্মভূমি মন্দির তীর্থ। অর্থাৎ মন্দির ছাড়াও আদতে তীর্থক্ষেত্রটা হবে রামজন্মভূমি। সেটা যে প্রস্তাবিত মন্দির-সহ সমগ্র অযোধ্যা সেকথা বলা বাহুল্য।

অযোধ্যার মাহাত্ম্য কেবল একটা অতি উন্নত ও প্রাচীন নগর বলেই নয়। স্বয়ং পুরুষোত্তম রামচন্দ্রই তাঁর জন্মভূমি সম্পর্কে সে মর্যাদা ব্যক্ত করে গেছেন। বাল্মীকি রামায়ণের যুদ্ধকাণ্ডে লঙ্কা বিজয়ের পর তিনি যখন লক্ষ্মণকে বললেন, ‘অপি স্বর্ণময়ী লঙ্কা ন মে রোচতে লক্ষ্মণ। জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সি। তখনই তিনি সর্বকালীন দেশাত্মবোধের গরিমামণ্ডিত কথা শুনিয়ে দিলেন যে জননী এবং জন্মভূমি স্বর্গের চাইতেও গরিমাময়ী। সেদিন থেকে অযোধ্যা—যাকে যুদ্ধে জয় করা যায় না তা কেবল যুদ্ধে নয়, সমস্ত দিক দিয়েই জয়ের ঊর্ধ্বে। সুদীর্ঘকাল ধরে বহু কৌশলের পরেও আপামর মানুষের মন থেকে, হৃদয়াবেগ থেকে অযোধ্যাকে কেউ জিতে নিতে পারেনি। অযোধ্যা—নামটা কানে বাজার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের প্রায় সমস্ত প্রান্তের মানুষের মনের পর্দায় ভেসে ওঠে রামচন্দ্র এবং তার জন্মভূমি। মহর্ষি বাল্মীকি তাঁর রচিত রামায়ণের বালকাণ্ডে রামচন্দ্রের ব্যক্তিত্বকে যেমন ‘সমুদ্র ইব গাম্ভীর্যে ধৈর্যেন হিমবানিব’বলে ব্যাখ্যায়িত করেছেন সেইসঙ্গে ওই কাণ্ডের প্রথম সর্গের ৫ থেকে ২০ শ্লোকে আখ্যায়িত করেছেন অযোধ্যার বর্ণনাও। এখন যখন সেই রামজন্মভূমি পুনরায় তীর্থের মর্যাদায় ভূষিত হলো তখন সেই অযোধ্যার দিকে একবার ফিরে তাকানো যাক।

অযোধ্যা রামজন্মভূমি হলেও এই নগরী স্থাপন করেন রামচন্দ্রের পূর্বপুরুষ তথা বিশ্ববিশ্রুতমনুস্মৃতি গ্রন্থের রচয়িতা রাজা মনু। বালকাণ্ডের ষষ্ঠ শ্লোকে বলা হয়েছে— ‘অযোধ্যা নাম নগরী তত্রাসীল্লোক বিশ্রুত। মনুনা মানবেন্দ্রেণ যা পুরী নির্মিত স্বয়ম্।। রাজা মনুর যে বাস্তব অস্তিত্ব ছিল, তিনি যে একজন ঐতিহাসিক পুরুষ ছিলেন তা আজ বহুভাবে স্বীকৃত ও প্রমাণিত। তার লেখা স্মৃতি সংহিতা ছাড়াও অন্যতম প্রমাণ হলো, খ্যাতনামা পর্যটক এফ আই পাজিটর-এর লেখা Ancient Indian historical tradition’ গ্রন্থ। লক্ষণীয়, পাজিটর ‘হিস্টোরিক্যাল’বা ঐতিহাসিক শব্দই ব্যবহার করেছেন। লিখেছেন, “বৈবস্বত মনুর ৯ পুত্রের মধ্যে জ্যেষ্ঠপুত্র ছিলেন ইক্ষাকু। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ড. রমেশচন্দ্র মজুমদারও ইক্ষাকুকে ঐতিহাসিক পুরুষ মান্যতা দিয়ে বলেছেন, এই ইক্ষাকু বিকুক্ষিই হলেন ইক্ষাকু বংশের (সূর্যবংশ) প্রতিষ্ঠাতা। The vidic Raj’ গ্রন্থের ২৭৬ পৃষ্ঠায় ড.মজুমদার আরও জানিয়েছেন যে, ‘রাজা মনু তার সাম্রাজ্যকে ১০ ভাগে ভাগ করেন এবং তার মধ্যভাগের শাসনভার তুলে দেন ইক্ষাকুকে। কালান্তরে সেই অংশের নাম হয় কোশল। সেই কোশলের রাজধানী হলো অযোধ্যা।

অযোধ্যাই যে রামচন্দ্রের জন্মস্থান একথা মূল ভারতীয় ঐতিহাসিকরা ছাড়াও অনেক মুসলমান ঐতিহাসিক এবং লেখকও লিখে গেছেন। যেমন মৌলনা হাকিম সইদ আবদুল হাই (১৯৭২)-এর লেখা ‘হিন্দুস্তান-এ-ইসলামি আহদ’, মৌলবি আবদুল করিম (১৮৮৫)-এর ‘গুমগস্ত-এ-হালত-এ-অযোধ্যা’,হাজিমহম্মদ ইবন (১৮৭৮)-এর লেখা ‘জিয়া-এ-আখতার’, আল্লামা মহম্মদ নাজমু গনি খান (১৮৯৫)-এর ‘তেহরিক-এ-অবধ’ইত্যাদি গ্রন্থে পরিষ্কারভাবে অযোধ্যাকে রামচন্দ্রের জন্মস্থান বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। লিপি বিশেষজ্ঞ ও ঐতিহাসিক ড. কে বি রমেশ, ড. স্বরাজ প্রকাশ গুপ্তা, ড. ঠাকুর প্রসাদ বর্মা এবং ড. সুধা মাল্য— চারজনেই এক সুরে রায় দিয়েছেন যে অযোধ্যাই হলো রামজন্মস্থান এবং এখানেই (যেখানে রামমন্দির পুনর্নির্মিত হচ্ছে) নির্মিত হয়েছিল সুরম্য রামজন্মভূমি মন্দির। সর্বপ্রথম তা নির্মাণ করেন রামচন্দ্রের পুত্ৰ কুশ। পরে গুপ্তযুগে তার দৃষ্টিনন্দন সংস্কার করেন রাজা বিক্রমাদিত্য। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বহিরাক্রমণকারী মোগল বাদশাহ বাবরের নির্দেশে ১৫২৮ খ্রিস্টাব্দে সেই মন্দির চূর্ণ করে তার ভগ্নসামগ্রী দিয়ে সেই অধভঙ্গ মন্দিরের ওপরই তথাকথিত বাবরি মসজিদ বানান বাবরের এক সেনাপতি মীর বাকি খাঁ।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পূর্বতন শ্যামদেশ বা বর্তমানে থাইল্যান্ডে কেবল রামচন্দ্রই নন, তার পবিত্র জন্মভূমি অযোধ্যাও এতটাই জনপ্রিয় যে অযোধ্যার অনুসরণে সেদেশে অযুধ্যা (স্থানীয় উচ্চারণে আয়ুথারা) নগরী স্থাপিত হয়েছে। কেবল তাই নয়, সেই অযুধ্যা দু’ দুবার সেদেশের রাজধানীর মর্যাদাও লাভ করেছে। একবার ১৩৫০ থেকে ১৪৬৩ (১১৩ বছর) এবং আর একবার ১৪৮৮ থেকে ১৭৬৭ (২৬৯ বছর) খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। ১৩৫০ খ্রিস্টাব্দে অযুধ্যাকে প্রথম রাজধানী করেন রাজা প্রথম রামাতিবোধি। সেদেশে রামাতিবোধি শব্দের অর্থ হলো রামাধিপতি।

মহর্ষি বাল্মীকি রচিত রামায়ণের সূত্র ধরে কেবল ভারতবর্ষেই নয়, বর্তমান থাইল্যান্ডে, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ফিলিপিনস, জাপান, লাওস, ভিয়েতনাম, মায়ানমার (পূর্বতন ব্রহ্মদেশ), শ্রীলঙ্কা-সহ সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত নানা শিরোনামে ৬০ খানারও বেশি রামায়ণ রচিত হয়েছে। তার প্রায় সবগুলোতেই রামচন্দ্রের পাশাপাশি তাঁর জন্মভূমি অযোধ্যাও কম-বেশি গুরুত্ব লাভ করেছে। অযোধ্যার পূর্বে তার চাইতে উন্নত নগর সভ্যতার বর্ণনা পাওয়া যায় না। কাশী প্রাচীনতম হলেও তা অধ্যাত্মিক ক্ষেত্র হিসাবে পরিচিত। অযোধ্যা নামের উল্লেখ প্রথম পাওয়া যায় সুপ্রাচীন অথর্ববেদের এক সুক্তে। সেখানে অযোধ্যাকে দেবতাদের পুরী বলা হয়েছে— ‘অষ্টচক্রা নবদ্বারা দেবানাং পুরযোধ্যা। অস্যাং হিরণ্যয়ঃ কোশঃ স্বর্গো জ্যোতিষাবৃতাঃ।

রামচন্দ্র তো তাকে স্বর্গের চেয়েও গরিয়সি বলে গর্ব প্রকাশ করেছেন। তবে বেদের অঙ্গ থেকে অযোধ্যা নামের পরিচয় ঘটলেও তার স্থানমাহাত্ম্য সম্প্রসারিত হয়েছে রামচন্দ্রের জন্মস্থান বলেই। বাল্মীকি অযোধ্যাকে স্পষ্টভাবেই রামজন্মভূমি বলে জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে নগরীর যে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন তা বস্তুত আজকালকার ‘স্মার্ট সিটি’-র সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। বলা নিষ্প্রয়োজন, কেবল গগনচুম্বি অট্টালিকার জন্য কোনও নগর বা মহানগরকে এই অভিধা দেওয়া হয় না। আরও অনেক দিক যেমন নগর পরিকল্পনা, প্রযুক্তি ও কারিগরি ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধাদি যেমন জল, আলো, বাতাস, নিকাশি ব্যবস্থা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অট্টালিকাগুলোতে ওঠা-নামার সুবন্দোবস্ত, সবুজায়ন, রাস্তাঘাট, নগরীতে গমনাগমনকারীদের বিশ্রামাগার ও শৌচালয়, আহারাদির ব্যবস্থা, যাতায়াত বা পরিবহণ, যান নিয়ন্ত্রণ, মানুষের জীবনযাত্রার মান খেলাধুলো, সকাল-বিকাল পদচারণা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন এমনকী রোজগারের সংস্থান এবং বিশেষ করে সব শ্রেণীর নাগরিকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইত্যাদি পর্যালোচনা করে তবেই স্মার্ট সিটির শিরোপা দেওয়া হয়ে থাকে। এই সমস্ত বিচারে বর্তমানে বিশ্বে প্রথম ৫টা স্মার্ট সিটির এক নম্বরে রয়েছে স্পেনের বার্সিলোনা। দ্বিতীয়। আমেরিকার নিউ ইয়র্ক, তৃতীয় ইংল্যান্ডের লন্ডন, চতুর্থ ফ্রান্সের নীস আর পঞ্চম স্থানে রয়েছে এশিয়ার সিঙ্গাপুর।

বাল্মীকি রামায়ণ অনুসারে অযোধ্যার অবস্থান হলো সরযু নদীর তীরে। নগরীর আয়তন ছিল দৈর্ঘ্য ১২ যোজন এবং প্রস্থে ৩ যোজন (অনেক পণ্ডিতের মতে এক যোজন হলো ১২ মাইল বা প্রায় ১৮.৫ কিলোমিটার)। উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি ঘটতে থাকা কোশল প্রদেশের রাজধানী।

‘কোশল নাম মুদিতঃ জনপদ স্ফীতো মহান।

নিবিষ্ট সরযূতীরে প্রভুত ধনধ্যন্যবান॥

আয়তন—‘অযোধ্যা দশ চ দে চ যোজনানি মহাপুরী।

শ্ৰীমতী ত্রীণি বিস্তীর্ণা সুবিভক্ত মহাপথা॥

এইসব বর্ণনা থেকে জানা যায় রামজন্মভূমির অধিবাসীরা ছিলেন সম্পন্ন, সর্বদা সুখী ও সদাপ্রসন্ন। অযোধ্যা ছিল সর্বদা ধনধান্যে ভরা। তখন তিন লোকের মধ্যে অযোধ্যা ছিল সর্বোৎকৃষ্টনগরী যাকে মহাপুরী বা মহানগরী বলাহয়েছে।বাল্মীকির বর্ণনায় আরও প্রতীত হয় যে অযোধ্যা মহাপুরী ছিল অতি সুন্দর, সাজানো-গোছানো, ঝকঝকে-তকতকে, লম্বা-চওড়া এবং আজকালকার মতো ডিভাইডার এবং মাঝে মাঝে বাইপাস সংসযুক্তরাজমার্গ বা সড়ক সমৃদ্ধ। অর্থাৎ রাস্তার বিভাজন ছিল সুপরিকল্পিত ও সুবিন্যস্ত। সেইসব পথঘাট প্রতিদিন নিয়মিতভাবে জল। দিয়ে ধোওয়া হতো।

‘রাজমার্গেন মহতা সুবিভক্তেণ শোভিতা।

মুক্তপুষ্পবকীর্ণের জলসিক্তেন নিত্যশঃ॥

বাল্মীকির বর্ণনায় আরও জানা যায় যে, প্রশাসনিক ব্যবস্থা সুচারু রাখার জন্য অযোধ্যাকে অষ্টচক্রে বা ৮ ভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল। নগরীর মধ্যে প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য প্রধান তোরণ ছাড়াও আরও ৮টা দ্বার (অষ্টচক্রানবদ্বারা) ছিল। সেগুলো তো বটেই, নগরীর মধ্যেও সর্বত্র আদ্যান্ত আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। এমনকী কুশল কারিগরদের তৈরি নানা ধরনের যন্ত্রপাতি এবং সশস্ত্র পাহারার বন্দোবস্ত ছিল।

‘কপাটতোরণংবতীং সুবিভক্তান্তরাপণাম।

সর্বন্ত্রায়ূধতীমুপেতাং সর্বশিল্পীভিঃ॥

আরও যেসব বর্ণনা রয়েছে তা থেকে জানা যায় যে, অযোধ্যায়। সুউচ্চ অনেক অট্টালিকা ছিল যাদের শীর্ষে সূর্য চিহ্নিত গৈরিক পতাকা শোভা পেত। স্থানে স্থানে নির্মিত ছিল দৃষ্টিনন্দন ও মনোরম উদ্যান। সর্বসাধারণের জন্য নগরীতে অনেকগুলো কূপ খনন করা ছিল যা থেকে সবাই সুপেয় জল পেতেন। বিনোদন ব্যবস্থা ছিল এত উন্নত যে এমনকী মহিলাদের জন্য ছিল পৃথক নাট্যশালাও। বলাবাহুল্য, লঙ্কা বিজয় করে সীতা উদ্ধারের পর রামচন্দ্র যেদিন অযোধ্যায় ফিরে আসেন সেদিন তাদের স্বাগত জানানোর জন্য অযোধ্যাকে দীপালোকে সাজানো হয়েছিল। সেদিন থেকেই শুরু হয়েছে দীপাবলী উৎসব যা এখনও স্বমহিমায় উদ্যাপিত হয়ে চলেছে। অতঃপর এই বিশাল এবং অসামান্য মন্দির নির্মিত হলে। রামজন্মভূমি অযোধ্যার তীর্থক্ষেত্রের গরিমা তো বটেই, নৈসর্গিক সৌন্দর্যও যে বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। রামজন্মভূমি মন্দিরের। মহিমায় রামতীর্থ অযোধ্যা মহাতীর্থের গরিমামণ্ডিত হবে।

দুর্গাপদ ঘোষ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.