টহলদারির সময় পা পিছলে সোজা খাদে। তাও সে জানুয়ারি মাসের ঘটনা। তারপর কেটে গিয়েছে অন্তত ছ’মাস। পুরু বরফের নিচে চাপা পড়ে যায় দেহ। এতদিন পর স্বাধীনতা দিবসে কাশ্মীরের গুলমার্গে নিয়ন্ত্রণরেখায় বরফের নিচ থেকে উদ্ধার হল সেই নিখোঁজ জওয়ানের দেহ। ভারতীয় সেনার ১১ গাড়োয়াল রাইফেলসের হাবিলদার রাজেন্দ্র সিং নেগির দেহ উদ্ধার হয় শনিবার। শ্রীনগরের সেনা হাসপাতালে তারপর দেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। সেনা সূত্রে খবর, ১৯ আগস্ট মৃত জওয়ানের দেহ দেরাদুনে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
জানা গিয়েছে, জানুয়ারি নাগাদ গুলমার্গে টহলদারির সময় পা পিছলে খাদে পড়ে যান রাজেন্দ্র। তারপর মৃত্যু হয় তাঁর। দেহের উপর পুরু বরফের আস্তরন পড়ে যায়। ৮ জানুয়ারি নিখোঁজের রিপোর্ট রুজু করে সেনা। খোঁজ চলছিল রাজেন্দ্রর। তাও কোনও সন্ধান না মেলায় জুনে তাঁকে শহিদ ঘোষণা করা হয়। গত ২১ জুন সেই কথা রাজেন্দ্রর পরিবারকেও জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তা রাজেন্দ্রর স্ত্রী রাজেশ্বরী দেবী মানতে চাননি। সেনাবাহিনীর কাছে আবেদন করেন, স্বামীর মৃতদেহ চোখে না দেখা পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে বিশ্বাস করবেন না। শেষপর্যন্ত স্বাধীনতা দিবসে রাজেন্দ্রর দেহ বরফের নিচ থেকে উদ্ধার হয়। দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান। পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে দেহ উদ্ধারের।
সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবারই গুলমার্গে টহল দেওয়ার সময় বরফের ভিতর থেকে একটা মানুষের দেহ উঁকি দিচ্ছিল। তারপর বরফ সরিয়ে দেহ উদ্ধার করেন জওয়ানরা। সাধারণত বরফের নিচে দেহ চাপা পড়লে তাতে পচন ধরে না। দীর্ঘদিন তরতাজা থাকে। রাজেন্দ্রর দেহতে পচন ধরেনি। সতীর্থরাই তাঁর দেহ শনাক্ত করেন। জানুয়ারিতে কনকনে ঠান্ডায় গুলমার্গ-সহ প্রায় গোটা উপত্যকাই বরফের চাদরে ঢাকা পড়ে। শীত বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই বরফ গলতে শুরু করে। সেনা আধিকারিকরা মনে করছেন, এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে। গরম আবহাওয়ায় বরফ গলে দেহ উপরে উঠে আসে।