কলেজের দিনগুলোর কথা একবার ভাবুন। রাখিবন্ধনের দিন নাকি কলেজের ছেলেরা বেশ ভয়ে ভয়ে থাকত। এই না কলেজের পছন্দের মেয়েটা দৌড়ে এসে হাতে রাখি বেঁধে দেয়। মৈত্রীর প্রতীক নয়, হাতে রাখি বাঁধলেই নাকি ভাইবোনের সম্পর্কে সিলমোহর পড়ে গেল। তাই সেদিনটায় নিজেকে বেশ বাঁচিয়ে বাঁচিয়েই চলেন পুরুষেরা। চিরাচরিত এই ভাবনাকে একেবারে বদলে দিল মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের ইন্দোর বেঞ্চের বিচারকদের শর্ত যৌন হেনস্তা যাঁকে করেছেন তাঁর হাত থেকেই রাখি পরলে অভিযুক্তকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হবে বলেই জানাল আদালত। আর এই শর্তের কথা শুনেই অবাক সকলে।

ঠিক কী হয়েছিল? দিনকয়েক অভিযোগ ওঠে উজ্জ্বয়িনীর বাসিন্দা এক মহিলার বাড়িতে ঢুকে তাঁর শ্লীলতাহানি করে স্থানীয় ব্যক্তি বিক্রম বাগরি। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। সেই মামলা মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের ইন্দোর বেঞ্চে ওঠে। বিচারক রোহিত আর্যের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। অভিযুক্তকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার সময় বেশ অভিনব রায় দেন বিচারক। তিনি বলেন, “সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ অভিযোগকারিণী এবং তাঁর স্বামী অভিযুক্তের বাড়িতে যাবেন। তাঁদের সঙ্গে থাকবে রাখি এবং মিষ্টির প্যাকেট। অভিযুক্তের হাতে রাখি বেঁধে দেবেন ওই মহিলা। যাঁর ওই অভিযুক্ত শ্লীলতাহানি করেছে। পালটা রাখির উপহার হিসাবে ১১ হাজার টাকা মহিলার হাতে তুলে দিতে হবে ওই অভিযুক্তকে। তাঁর ছেলেকে মিষ্টি খেতে এবং জামাকাপড় কেনার জন্য ৫ হাজার টাকা দিতে হবে। এছাড়া আদর্শ ভাইয়ের মতো ওই মহিলাকে সমস্ত বিপদ থেকে আগলে রাখার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। ওই মহিলাকে ঠিক বোনের মতো ভেবে আশীর্বাদও দিতে হবে।”

জামিনে মুক্তি দেওয়ার জন্য বিচারকের এই রায় শুনে তাজ্জব গোটা আদালত চত্বর। অবাক হয়ে গিয়েছেন খোদ অভিযোগকারী মহিলাও। বাধ্য হয়ে বিচারকের শর্ত মেনে নেয় অভিযুক্ত। তবে এ রায় যে তার কাছে বহু বছর কারাবাসের থেকেও কঠিন কিছু নয়, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.