তাঁর হাত ধরেই বিজ্ঞানচর্চার মুক্তমঞ্চ খুঁজে পেয়েছিল বাঙালি। আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণায় উনিশ শতকে তাঁর তৈরি বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস (Bengal Chemicals and Pharmaceuticals) আজকের দিনেও দেশের বিজ্ঞান গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছে। করোনা আবহে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের তৈরি সেই বেঙ্গল কেমিক্যালস এবার বাজারে আনল এই সময়ের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী – হ্যান্ড স্যানিটাইজার। বাজার চলতি স্যানিটাইজারের থেকে যা অনেক উন্নত মানের, দামও সাধ্যের মধ্যে। আজ প্রফুল্লচন্দ্র রায়ে ১৫৯ তম জন্মদিন। তাই নতুন স্যানিটাইজার বাজারে আনতে আজকের দিনটিকেই বেছে নিলেন তাঁর তৈরি সংস্থার কর্মীরা। এভাবেই তাঁরা শ্রদ্ধার্ঘ্য দিতে চান প্রতিষ্ঠাতাকে।
করোনা (Coronavirus) কালে সুরক্ষিত থাকতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের গুরুত্ব নতুন করে বোঝার বা বোঝানোর কিছু নেই। এ এখন দৈনন্দিন জীবনের সর্বক্ষণের ব্যবহার্য জিনিস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে বহু সংস্থাই নতুন করে অ্যালকোহল বেসড স্যানিটাইজার তৈরি করছে। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এ ধরনের প্রচুর স্যানিটাইজার। তবে তা কতটা জীবাণুরোধক, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
এবার আমজনতাকে সেই সংশয় থেকে মুক্ত করতে দেশের নামী কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা বেঙ্গল কেমিক্যালস বাজারে নিয়ে এল নিজেদের তৈরি স্যানিটাইজার। নাম তার – বেনসাই (BENSAI)। অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজারটি আজ থেকেই মিলবে বিভিন্ন দোকানে। ২০০, ৫০০ মিলিলিটারের বোতল এবং ৫ লিটারের বড় বোতলে পাওয়া যাবে বেনসাই। এর রাসায়নিক প্রস্তুতি থেকে উৎপাদন, প্যাকেজিং – সবটাই হয়েছে বেঙ্গল কেমিক্যালসের অন্দরেই।
কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থার এর আগেও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের (HCQ) মতো ওষুধের অন্য দুটি যৌগ তৈরি করে সংক্রামক ব্যধির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছিল। তাদের তৈরি সালফেট এবং ফসফেট যৌগসমৃদ্ধ দুটি ওষুধ ব্যাপকভাবে কাজ করেছে ম্যালেরিয়া নিরাময়ে। করোনার দাপট বাড়ার পর থেকে প্রশ্ন উঠছিল, এই যৌগ তৈরিতে সিদ্ধহস্ত প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের সংস্থাকেই কেন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন উৎপাদনের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না? এ নিয়ে আলোচনার মাঝে অবশ্য বেঙ্গল কেমিক্যালসের অন্দরে অন্য কাজ চলেছে। তা হল, স্যানিটাইজার তৈরির কাজ। সেই উৎকৃষ্ট মানের স্যানিটাইজারই এবার বাজারে এল। দামও সাধ্যের মধ্যে, মান বাজার চলতি যে কোনও স্যানিটাইজারের চেয়ে উন্নত।