আরামবাগ নগর লোকপ্রজ্ঞা চর্চাকেন্দ্রের আয়োজনে ২৮ শে জুলাই অনুষ্ঠিত হয় এক ভাবগাম্ভীর বৈদ্যুতিন আলোচনা সভা। বিষয় : যুগাচার্য প্রণবানন্দজীর হিন্দুজাতি গঠন ভাবনা ও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কল্যাণ চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে শুরুতে আশীর্বাণী দেন হৃদয়পুর, বারাসাত প্রণব কন্যাশ্রমের অধ্যক্ষা সন্ন্যাসিনী জ্ঞানানন্দময়ী মাতাজী।
এই বৎসরটি যুগাচার্য স্বামী প্রণবানন্দ মহারাজের শুভ আবির্ভাবের ১২৫ তম বর্ষ। ১৮৯৬ সালের ২৯ শে জানুয়ারি মাঘীপূর্ণিমার দিন তাঁর জন্ম বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর, মাদারীপুরের বাজিতপুরে। তিনিই ‘ব্রহ্মবেদ ব্রহ্মৈব’ যিনি বলতে পেরেছেন, লোকে জপ করে কাঠের মালায়, তুলসীর মালায়, আমি জপ করেছি জাতিগঠন, জাতিগঠন, জাতিগঠন। স্বামীজির দিব্যজীবনের নানান প্রাসঙ্গিক আলোচনা করেন সন্ন্যাসিনী মাতাজী। এরপর সূচক-ভাষণ দিতে গিয়ে অধ্যাপক চক্রবর্তী যুগাচার্যকে ‘ বাজিতপুরের বাজিগর’ আখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি হিন্দু মিলন মন্দিরের মতো অসাধ্য কাজটি হাতেকলমে করে দেখিয়েছেন। তারই প্র্যাক্টিক্যাল ‘হিন্দু রক্ষীদল’। বহুধা বিভক্ত হিন্দুদের মধ্যে সংহতি এনে দিয়েছিলেন এই যাদুকর। সেবার মাধ্যমে পীড়িতকে এক মহতাত্মায় উপনীত করা, হিন্দু তীর্থ সংস্কার, সেবার সংজ্ঞার বিস্তৃতি উপস্থাপন করে ড. চক্রবর্তী যুগাচার্য বন্দনা করেছেন। প্রণব-ব্যাখ্যাত দশটি মহামন্ত্রের বিচার বিশ্লেষণ করেছেন। হিন্দু ঐক্যের সুর তুলে ধরার পাশাপাশি বাঙালি হিন্দু ও ভারতীয় হিন্দুদের এক মহান রাজনৈতিক নেতাকে নির্বাচন করে গিয়েছিলেন স্বামীজি — সে বিষয়ে অনুপুঙ্খ আলোচনা করেন ড. চক্রবর্তী। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীই সেই সর্বজনমান্য হিন্দু নেতা। দুর্গাপূজা যে জাতীয়জীবনে কতটা শক্তি দিতে পারে তারও স্বরূপসন্ধান যুগাচার্যের জীবনচর্যা থেকে আলোকপাত করেন তিনি। পরিশেষে স্বামী প্রণবানন্দ সম্পর্কিত জীবনী ও বাণীমূলক পুস্তক-ভাণ্ডারের সন্ধান দেন।
আলোচনার সভার সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন চর্চাকেন্দ্রের সংযোজক শ্রী অভিজিৎ কুন্ডু। শঙ্খধ্বনি ও অতি সুন্দর শক্তিবন্দনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্ক্রিনশেয়ার করে যুগাচার্যে র ছবি সজ্জিত করে রচিত হয় ঐশী-পরিবেশ। বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রজ্ঞাপ্রবাহের পূর্ব-ক্ষেত্রীয় সংযোজক শ্রী অরবিন্দ দাশ, লোকপ্রজ্ঞা দক্ষিণবঙ্গের সহ সংযোজক ড. সোমশুভ্র গুপ্ত, শ্রী প্রবীর মুখার্জী, শ্রী মনোরঞ্জন হাজরা, বিশিষ্ট চক্ষু-বিশেষজ্ঞ ডা. তরুণ সরকার প্রমুখ ব্যক্তিত্ব।