খলিস্তান আন্দোলনের শিকড় অনেকটাই ছড়িয়ে রয়েছে কানাডায়। তবে ভারতের কূটনৈতিক চাপে, শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বড় ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দেশটি নীতি বদল করছে বলেই সূত্রের খবর। সেই খবরে সিলমোহর দিয়ে সম্প্রতি একটি মার্কিন বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখ সংগঠনের ‘স্বাধীন খলিস্তানের’ দাবিতে জনমত নেওয়ার প্রক্রিয়ার (Punjab 2020 Referendum) বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছে ওটাওয়া।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, কানাডার বিদেশমন্ত্রক সাফ জানিয়েছে, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা নাক গলায় না। এছাড়া, অন্য দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে তারা। তাই শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ‘স্বাধীনতার’ দাবিতে জনমত নেওয়ার বিষয়টিকে কানাডা কখনওই সমর্থন করবে না। এই বিষয়ে পাঞ্জাবের প্রাক্তন পুলিশ প্রধান শশীকান্ত বলেন, “রেফারেনডাম বা জনমত কোনও নির্দিশথ ভৌগলিক সীমানার মধ্যে নেওয়া হয়। আমেরিকায় বসে ভারতের অংশ নিয়ে এবাবে সমীক্ষা চালানো যায় না। ফলে এটাকে আমি রেফারেনডাম বলেই মনে করি না।” তিনি আরও বলেন, “রেফারেনডামটিকে না মানার কানাডা সরকারের সিদ্ধান্ত ভারতের জন্য বড় কূটনৈতিক জয়। ভারতের সঠিক ও এজেন্ডা ভিত্তিক বিদেশনীতির ফল আমরা পাচ্ছি। এবার অন্য দেশগুলি ভারতের সার্বভৌমত্বের সম্মান করছে।” এই বিষয়ে ‘অল ইন্ডিয়া অ্যান্টি টেররিস্ট ফ্রন্ট’-এর সভাপতি মনিন্দর সিং বিটটা বলেন, “খলিস্তান আন্দোলনের নেপথ্যে রয়ছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। কয়েকজন পৃথক দেশ চাইছে বলে এমন নয় যে সব শিখরাই খলিস্তানিদের সমর্থন করেন।”
ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই কানাডা শিখ স্বাধীনতাকামীদের একটা বড় ঘাঁটি ছিল। আমেরিকার সঙ্গে কানাডায় বিশেষ সক্রিয় ছিল ‘গদর পার্টি’। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসন উপড়ে ফেলতে ‘গদর পার্টি’র চেষ্টার কথা বহুল প্রচারিত। কিন্তু ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বাড়তে থাকে শিখ বিছিন্নতাবাদ। শুরু হয় রক্তাক্ত খলিস্তানি আন্দোলন। এবারেও শিখ জঙ্গিদের অন্যতম ঘাঁটি হয়ে উঠেছে কানাডা। বর্তমানে দেশটিতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিখদের একটা বড় অংশ রয়েছে। ফলে সেখানকার রাজনীতিতেও তাঁদের প্রভাব যথেষ্ট। তাই ‘স্বাধীন খলিস্তান’ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়।