জ্বর সবসময় করোনার লক্ষ্মণ নাও হতে পারে : এইমস

করোনার প্রাথমিক লক্ষ্ণণ হিসেবে জ্বরকে ধরা হলেও, অনেক ক্ষেত্রেই সেই সমীকরণ মেলেনি। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআরের জার্নালে প্রকাশিত দিল্লি ও হরিয়ানা এইমসের এক সমীক্ষায় এমনই দেখা গিয়েছে। সমীক্ষা বলছে, ১৪৪ জন রোগীর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, মাত্র ১৭ শতাংশের মধ্যে জ্বর করোনার লক্ষ্মণ হিসেবে উপস্থিত ছিল।

চিনা এক রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে এইমস জানাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে করোনার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়ে রোগির জ্বর এসেছে বা ধরা পড়েছে। এইমসের সমীক্ষা বলছে যেসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৪৪ শতাংশই অ্যাসিম্পোম্যাটিক। যখন তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সেভাবে কোনও লক্ষ্মণ তাঁদের মধ্যে দেখা যায়নি, বিশেষত জ্বর। তাই জ্বর যে করোনা আক্রান্তের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্মণ একথা বলা যাবে না।

সমীক্ষার দাবি এই কারণেই জ্বরের ওপর খুব বেশি গুরুত্ব আরোপ করার দরকার নেই। কারণ জ্বরের দিকে নজর দিয়ে করোনা চিকিৎসা করলে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ রোগের চিকিৎসার অবহেলা হতে পারে। তাই কোনও রোগির জ্বর কেন হয়েছে, তা খুঁজে বের করা দরকার। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে।

এই সমীক্ষায় জানানো হয়েছে মোট আক্রান্তের ৪৪ শতাংশের মধ্যে করোনার সেভাবে কোনও লক্ষ্মণ দেখা যায়নি। ৩৪ শতাংশের ক্ষেত্রে কাশি ছিল, ১৭ শতাংশের ক্ষেত্রে জ্বর দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে মাত্র দুই শতাংশ রোগির নাসারন্ধ্রে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। উল্লেখ্য প্রাথমিকভাবে করোনার লক্ষ্মণ হিসেবে জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্টের মতো বিষয়গুলির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। পরে জুন মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের গাইড লাইনে গন্ধ বা স্বাদ না পাওয়ার লক্ষ্মণগুলিকেও তুলে ধরা হয়। এর সঙ্গে ছিল ডায়েরিয়া, গায়ে হাতে পায়ে ব্যথাও।

এদিকে, সম্প্রতি একটি রিপোর্টে জানা যাচ্ছে যে, ভাইরাস শরীর থেকে বিদায় নিলেও অনেক সমস্যা রেখে দিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অনেকেই সেরে ওঠার পর বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে ছুটছেন।

জানা গিয়েছেম ভাইরাস শুধু ফুসফুসে নয়, প্রভাব ফেলছে ব্রেন, কিডনি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অরগ্যানে। এমনকি কোনও কোনও রোগীর হৃদযন্ত্রেও প্রভাব ফেলছে করোনা। মুম্বইয়ের এক চিকিৎসক এস. চ্যাটার্জী জানিয়েছেন, অনেকের ক্ষেত্রে উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। অনেকের আবার করোনা চলে যাওয়ার পরও ফুসফুসে অক্সিজেনের পরিমাণ ক্রমশ কমে যাচ্ছে। এমন অন্তত ২৫ জন রোগী দেখেছেন ওই চিকিৎসক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.