চিনের ঋণজাল, ছলনার আর এক নাম

বর্তমান সময়ে ভারতবর্ষ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকা এক আধুনিক অর্থব্যবস্থা। যা বহু দেশের কাছে রীতিমতো ঈর্ষার বিষয়।কিন্তু তা সত্ত্বেও রোজগার বা চাকুরীর ক্ষেত্রের বৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক নয়। উচ্চ শিক্ষিত গবেষকরা এখন একটা সামান্য কেরানীর চাকুরীর জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমাদের দেশে উন্নত মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও কম নয়। ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অন্য শিক্ষা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত থাকা সত্ত্বেও চাকুরীর বাজার মন্দা।এর কারণ ঠিক কি ? -অন্যতম বড় কারণ হলো বিদেশী সস্তা জিনিসের প্রতি আমাদের প্রবল ঝোঁক। এতে দেশীয় কোম্পানি গুলি মার খাচ্ছে প্রচন্ডভাবে।এবং চাকরির ক্ষেত্র ও সংকুচিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে চিনা কোম্পানিগুলি একচেটিয়াভাবে ভারতের বাজারকে গ্রাস করে ফেলেছে। ফলে দেশীয় শিল্প গুলি প্রায় ধুঁকছে। চলছে প্রতিনিয়ত চাকরিতে ছাঁটাইনতুন করে শিল্প স্থাপনে ও দেশীয় বিনিয়োগ কারীরা সাহস পাচ্ছেন না এখন প্রশ্ন হলো চীন কিভাবে এত কম দামে পণ্যগুলি বিশ্ববাজারে ছড়িয়ে দিতে পারছে? কমিউনিস্ট মতাদর্শের দেশগুলির যদি আমরা ইতিহাস দেখি, সেখানে শুধুই পাব শোষণ,শোষণ আর শোষণ। সাম্যবাদের নামে তীব্র পুঁজিবাদ আর একনায়কতন্ত্র। আমাদের দেশের মতো গণতন্ত্র ওখানে নেই। ফলে পার্লামেন্টে কোন আইন সকালে পাশ হয়ে যায় এবং বিকেল হতে তা চালুও হয়ে যায়। যা আমাদের মত গণতান্ত্রিক দেশে কল্পনাতীত ব্যাপার। চীন জেনে শুনে নিজের চাষীদের কাছ থেকে সস্তায় জমি কেড়ে নেয়। মজুরদের কম মজুরি দেয়, অতিরিক্ত শ্রমের বিনিময়ে।বেশি পরিমাণে ভর্তুকি দিয়ে ,পরিবেশ নষ্ট করে দেশের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম বস্তু ভারতীয় বাজারে ঠেলে দেয় চীন। এইভাবে প্রতি বছর চীন ভারত হতে কোটি কোটি টাকা আয় করে।এবং এই অর্থ কাজে লাগিয়ে ভারতের জমি দখল করার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করে। এই হল চীনের প্রকৃত স্বরূপ,ভারতের এক সমর্থ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে। লেলিন, স্তালিন, মাও জেদং প্রভৃতি কমিউনিস্ট নেতাদের ইতিহাস রক্তে রাঙ্গা। সর্বোচ্চ নেতা হতে গেলে মনে হয় এই রক্তের গঙ্গা বইয়ে দেওয়া কমিউনিস্ট দের কাছে আনুষঙ্গিক হয়ে ওঠে। সর্বাধিক জনপ্রিয় একনায়কতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা পেতে পূর্বসূরীদের তো হারাতে চাইবেই উত্তরসূরিরা।এও এক কম্পিটিশন, উত্তরসূরী এবং পূর্বসূরীদের মধ্যে। গণতন্ত্র সেখানে দিবাস্বপ্ন মাত্র। রাষ্ট্র একটি নির্জীব বস্তু। এর জন্য- “লড়াই লড়াই লড়াই চাই লড়াই করে বাঁচতে চাই” এই শ্লোগান আমাদের পরিচিত।লড়াই কেন? কার বিরুদ্ধে? ঠিক কবে শেষ হবে এই লড়াই ?- এর উত্তর আমাদের অজানা এবং যারা লড়াই করছেন সম্ভবত তাঁদের ও অজানা। সোভিয়েত রাশিয়ায় কুখ্যাত নেতা লেলিনের গুলাগ তন্ত্রের ঘটনা আজও আমাদের গায়ে কাঁটা দেয়। যেখানে সোভিয়েত আর্কাইভ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে 1934 থেকে 1954 এই 20 বৎসরের মধ্যেই গুলাগে ( বাধ্যতামূলক শ্রম শিবির)অকথ্য অত্যাচারে মারা যান মোট 10 লক্ষ 53 হাজার 829 জন সোভিয়েত নাগরিক। এইরকম নানা ইতিহাস রয়েছে কমিউনিস্টদের সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার আড়ালে। এই নিয়ে বহু ইতিহাস লেখা হয়েছে,হচ্ছে এবং আগামী দিনে হবেও। বর্তমান চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও কিন্তু পিছিয়ে নেই। কারণ তিনিও তো বিশ্ববরেণ্য (?) হতে চান। তাঁর পূর্বসূরীদের মত। ছলে -বলে- কৌশলে বা রক্তের গঙ্গাতে বসে। কি এই ছল ? এ ছলনা বহু পুরনো। তা হলো ঋণ জাল। অর্থাৎ উন্নয়নশীল ও ছোট ছোট দেশ গুলিকে বিপুল পরিমাণে ঋণ দাও, তারা সঠিক সময়ে শোধ দিতে না পারলে তাদের দেশের জমি দখল করে নাও। বিনা বিবাদে, বা প্রয়োজনে শক্তি প্রদর্শন করে।যা চীন দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে করে আসছে। চীন সরকারের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে চীন 2015-2016 সালে 60টি দেশকে মোট 180 বিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে। এর মধ্যে অবশ্যই ভারতের শত্রু দেশ পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ ও রয়েছে।এছাড়াও বাণিজ্যিক শীর্ষ সম্মেলনে 1005 বিলিয়ন ডলার দেশীয় ব্যাংক থেকে (2017) ঋণের ছাড়পত্র ও দিয়েছে। এই জালে জড়িয়ে গেছে 65 থেকে 70 টি দেশ। ঋণ ও পুঁজি নিবেশের বদলে চীনের কোম্পানিগুলি ওইসব দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ কব্জা করতে চাইছে। এইভাবে সারা দুনিয়াকে ঋণজালে ফাঁসিয়ে দেওয়ার এক চক্রান্ত করেছে চীন। এখন প্রশ্ন হল এত টাকা আসছে কোথা থেকে? যার ফলে চীন এত ঋণ দিতে পারছে। উত্তর হল -ঋণ। চীনা সরকার তথা চিনা ব্যাঙ্কগুলি ঋণ জালে জর্জরিত। 2017 সালের হিসাব অনুযায়ী সিডিবি (চাইনিজ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক)তেই 330 বিলিয়ন ডলার ধার রয়েছে এবং অন্য ব্যাংকের কাছে ও ঋণ রয়েছে কম-বেশি। চীনের ঋণ জিডিপি 282 শতাংশ। যা দুনিয়ার সর্বাধিক। আভ্যন্তরীণ ও বাইরের ঋণ তো আছেই। আভ্যন্তরীণ ঋণ বেশি হবার ফলে চীন এই ঋণকে ইকুইটি শেয়ারে বদলাতে শুরু করেছে। অর্থাৎ চিনা সম্পদগুলি ও এখন চিনা ব্যাংকের কর্জের ভাগীদার। অর্থাৎ-“যতদিন বাঁচবো সুখে বাঁচবো,ঋণ করেও ঘি খাওয়া উচিত” এই নীতি। এর পরিণাম কি? একতরফা সম্ভাবনা হল বহু দেশ ভবিষ্যতে এই চক্করে ফেঁসে ঋণ জালে জড়িয়ে পড়বে। এবং সমস্ত সম্পদ দিতে বাধ্য হবে। যেমন ভেনেজুয়েলার অর্থনীতিতে ধ্বস নেমেছে কিন্তু তাও সে তাৎক্ষণিক সাহায্যের জন্য চীন থেকে ঋণ নিয়ে পুনঃরায় ঋণ জালে জড়িয়ে পড়েছে। ইকুয়েডরের অবস্থাও তাই।তারা ঋণের জন্য চীনকে বর্তমান চড়া সুদ গুনতি করছে। এই জালে ধরা দিয়ে পাকিস্তানও এগিয়ে চলেছে তীব্রগতিতে। অদূর ভবিষ্যতে পাকিস্তান হয়তো চীনের এক ‘দাস কলোনী’ তে না পরিনত হয়ে যায়। শ্রীলংকার সঙ্গেও চীন একইরকম ব্যবহার করছে। ঋণের জালে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা চীন থেকে নেওয়া 1.6 বিলিয়ন ডলার ধার নিয়ে তা শোধ করতে না পারায় চীন, শ্রীলঙ্কার হনমনতোতা বন্দর সৈন্য ব্যবহারের জন্য ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব বানাবার জন্য 15 হাজার একর জমি 99 বছরের জন্য লীজ দাবি করে। যা নিয়ে শ্রীলঙ্কার আভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও উত্তাল হয়। এখন প্রশ্ন হলো,চীন কেন এমন করছে? নিজের হাত ভেঙ্গে অপরের কোমর ভাঙ্গায় লাভ কোথায়? লাভ আছে,আর তা হল জমি দখল। চীনের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে যে অন্যের জমি দখলে এরা বিশ্বের সবচেয়ে পটু ও ধূর্ত একটি দেশ। বর্তমানে বহু দেশের সীমান্ত এলাকা চীন দখল করে নিয়েছে লোন দিয়ে দুর্বল করে ও শক্তির জোরে।যেমন ভারতে 1962 সালের যুদ্ধের মাধ্যমে 43 হাজার বর্গ কিমি ভূমি দখল করেছে।এখন অরুণাচল প্রদেশের 90 হাজার বর্গ কিমি জমি দখল করতে চাইছে। রোজই প্রায় চীনের সেনাবাহিনী ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করছে এবং কোন না কোন সমস্যা সৃষ্টি করছে। অতিসম্প্রতিতেও তাই নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে।গত 15 ই জুন 2020,রাতে শান্তি আলোচনার জন্য ডেকে নিরস্ত্র ভারতীয় সৈন্য বাহিনীর ওপর অতর্কিতে হামলা করে ধূর্ত চীন সৈন্যরা।ফলে ভারতীয় 20 জন সৈন্য বীরগতি প্রাপ্ত হন। কিন্তু বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ‘ইন্ডিয়ান আর্মি’ খালি হাতেই চীনের 47 জন সৈন্য কে ওপরে পৌঁছাতে সমর্থ হয়।যদিও এটি সরকারি সূত্রের খবর। বেসরকারি মতে সংখ্যাটি 47 নয় , আরো বেশি। আসল ব্যাপার হলো চীনের কোন খবরই বিশ্ব জানতে পারে না। কারণ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সেখানে ধর্ষিত।চীন সম্বন্ধে অনেকের ধারণা তৈরি হয় হংকং এর মতো শহরের কিছু চোখ ধাঁধানো বিল্ডিং দেখে। কিন্তু আসল চিত্র আছে চীনের গ্রামগুলিতে, বস্তিতে ও সাধারণ জনবসতিপূর্ণ এলাকা তে। যা চীনের পর্দা ফাঁস করতে যথেষ্ট।পূর্বের কথায় ফেরা যাক।

চীন (China) এই একই কাজ করে চলেছে আফ্রিকার দেশগুলোর সাথেও। আফ্রিকাতে হাজার হাজার বছর ধরে অমূল্য খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে হীরা ও সোনা অন্যতম। এখানেও চীন নিজস্ব প্রলোভন দেখিয়ে গত 20 থেকে 25 বছর ধরে এইসব অমুল্য প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠ করতে শুরু করেছে। এবং এই ফাঁকে ‘skilled worker‘ নামে চীন নিজের লোক এই সমস্ত ঋণগ্রস্ত দেশে পাঠিয়ে মুখ্যত নিজের দেশের বেকার সমস্যা মেটাচ্ছে চাতুরতার দ্বারা। মজার বিষয় হলো এতক্ষণ যাবৎ যা আলোচনা করা হলো তার ভিত্তি হচ্ছে সরকারি বিভিন্ন পরিসংখ্যান। কিন্তু চীনের আসল চরিত্র লুকিয়ে আছে তার “লুকানো ঋণদান ও জমি দখল ” নীতির মধ্যে। যার সঠিক পরিসংখ্যান কারোর কাছেই নেই। অর্থাৎ তারা কত ‘actual loan‘ দিয়েছে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এবং কত পরিমাণ সম্পদ বিনা বিবাদে উক্ত ঋণগ্রস্ত দেশগুলি চীনকে দান করেছে তার একটা বড় অংশই বিশ্বের অজানা। এ বিষয়ে জার্মানের KIEL ,Institute for the World Economy নামক এক গবেষক গোষ্ঠী বিশ্বের বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ্ দের নিয়ে এক সমীক্ষা করে। এবং জুন, 2019 এ “China’s Overseas Lending” শীর্ষক নামে একটি 78 পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে চীনের এই ঋণ ছলনা নিয়ে বিশদে তথ্য সহকারে প্রকাশিত করা হয়। যা সারা বিশ্বের অর্থনীতিবিদ,রাজনিতীবিদ, বুদ্ধিজীবী সহ সাধারণ মানুষের চোখ খুলে দেয়। এই গবেষণাপত্রের শুরুতেই লেখা হয়-” While China’s dominant footprint in World trade and global output is well known, its expanding role in international finance is poorly understood. Apart from its massive scale,the most notable feature of China’s capital exports is its opacity. Data is scarce and the process of lending is not transparent……….The “hidden debts” owed to China are consequential for debt sustainability in recipient countries and pose serious challenges for macroeconomic surveillance work and the market pricing of sovereign risk. ” গবেষণাপত্রটি বিশদে পড়লেই বোঝা যাবে চীন কিভাবে বিভিন্ন ব্যাংক ও সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছে এবং তাদের আগ্রাসন নীতি সফল করে চলেছে। CNBC এর World Economy বিভাগে গত 12 জুলাই 2019 তে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে-” Between 2000 and 2017,other countries’ debt owed to China soared ten-fold,from less than $500 billion to more than $5 trillion………..for 50 developing countries which have borrowed from China, that debt has increased on average from less than 1% of their GDP in 2015,to more than 15% in 2017………..The documentation of China’s lending has been at best ‘opaque’…………….with such transactions ‘ missed even by the most ambitious recent attempts to measure international capital flows‘……….Hidden debt could be an issue in tackling debt sustainability in such developing economies if the exact amounts owed to China aren’t knows, which the World Bank and IMF have previously flagged………the Asian giant,too,often demands collateral that require repayment in kind.Such as oil exports – adding to the opaque nature of those loans ………’As a result, the debtor countries themselves have an incomplete picture on how much they have borrowed from China and under which conditions’ ” বিখ্যাত The Wall Street Journal এ গত 30 মার্চ 2020 তে “Hidden Chinese Lending Put Emerging – Market Economics At Risk ” শীর্ষক এক প্রতিবেদন ছাপা হয়।যার বিষয় বস্তু ও পূর্বোক্ত KIEL এর গবেষণার সাথে মিল খায়। আসলে এটি হলো ঠান্ডা যুদ্ধ বা COLD WAR যা চীন নির্লজ্জভাবে শুরু করেছে। আমরা যদি ইতিহাস লক্ষ করি দেখবো যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর সেই রূপে কোন বিশ্বযুদ্ধ এখনো পর্যন্ত হয়নি,সেই অর্থে। কারণ এখন যুদ্ধ হলে তা হবে পরমাণু-যুদ্ধ। যা কোন দেশের পক্ষেই সুখকর নয়। কারণ বড়- মাঝারি -ছোট প্রায় সব দেশই কমবেশি বর্তমানে পরমাণু শক্তিধর অথবা কোনো না কোনো পরমাণু শক্তিধর দেশের ছত্রছায়ায় রয়েছে। ফলে পরমাণু যুদ্ধ সবাই এড়াতেই চায়, পরিণতির কথা ভেবে। তা বলে কমিউনিস্ট চীন থেমে থাকবে কেন? মোটেই নয়। চলছে COLD WAR, “ঋণ দাও, আর সুযোগ বুঝে দখল নাও” নীতি। Economic Development পত্রিকাতে 26 ফেব্রুয়ারি 2020 তে লেখা হয়েছে-” While China’s role global trade is highly publicized and politically polarizing, its growing influence in international finance has remained more obscure, mostly due to a lack of data and transparency……….Despite the large size of China’s overseas lending boom,no official data exists on the resulting debt flows and stocks.China does not report on its international lending, and Chinese loans literally fall through the cracks of traditional data gathering institutions……….If China’s role in international finance continues in the shadows, global risk assessments and country surveillance work will remain dangerously incomplete.” চীন তার ঋণ জালের মাধ্যমে জমি দখলের যে জঘন্য কারবার চালাচ্ছে তা স্বীকার করে নিয়েছে খোদ
Chaina news (online) যার 1st ডিসেম্বর 2013 তে লেখা হয়েছে-“The total area of China’s claims on other countries exceeds the size of modern China itself…….And while China only has land borders with 14 countries, it is claiming territory from at least 23 individual nations……….The following is a list of Chaina’s current claims against other countries, all of which it has made painfully clear it is willing to go to war over……….Afghanistan, Bhutan, Brunei, Burma,Combodia,India,Indonesia, Japan,Kazakhstan, Kyrgyzstan,Laos,Malaysia, Mongolia, Nepal,North Korea,Pakistan, Philippines, Russia, Singapore, South Korea,Taiwan,Tajikistan, Vietnam.” ভাবা যায় ? 23 টি দেশের সাথে চীনের জমি বিবাদ চলছে।এর মধ্যে আবার বহু দেশ চীনের ঋণের জালে জর্জরিত। এক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান ঠিক কি হওয়া উচিত? । জুন,2020 তে যখন ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিলো তখন কিছু মিডিয়া ও বিরোধীরা তো প্রায় যুদ্ধ লাগিয়েই দিয়েছিল আর কি!!!!! যুদ্ধ কোন সমাধান নয়। তাছাড়া যুদ্ধ হলে যে ক্ষয়ক্ষতি এবং অর্থনৈতিক বিপন্নতা আসবে তার জন্য আবার সেই বর্তমান ভারত সরকারকেই আদা-জল খেয়ে দায়ী করবে বিরোধীরা। বিশেষত ভারতে থাকা চীনা পেয়াদারা। হয়তো আগামী লোকসভা জেতা যেত এই আশায় ছিল বিরোধীরা যেমনটা করতে পেরেছিল কারগিল যুদ্ধের সময়।এখন COLD WAR এর যুগ। আমাদের জিততে হবে ডিপ্লোমেটিক পথে। এই যুদ্ধে বিজয়ী হতে গেলে 1.সরকার 2.নীতি-নিয়ম 3.শিল্প 4.গবেষণা ও 5. উপভোক্তা, সমাজের এই পাঁচটি অংশকে একত্রে কাজ করতে হবে। এবং এই কাজের মুখ্য বিষয় হবে স্বদেশী। জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বদেশীর ব্যবহার করতে হবে।বর্জন করতে হবে চীনের সস্তা বস্তু গুলি। সর্বক্ষেত্রে স্বনির্ভর বা আত্মনির্ভর হতে হবে। তবেই অর্থনৈতীক ভীত সুদৃঢ় হবে এবং ঋণ হতে মুক্ত হওয়া সম্ভব হবে। তবে এর জন্য সময় অবশ্যই লাগবে। বিগত 70 বছরে এই নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় নি। তাই ভারতের অর্থনীতি ও অন্য খাতে বয়েছে।এখন নতুন ভাবনা শুরু করতে হবে। এক্ষেত্রে জাপান আমাদের আদর্শ হতে পারে।যেমন ,জাপানের জনগণ দেশীয় কৃষি ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে প্রায় দ্বিগুণ দাম দিয়েও দেশীয় পণ্য ক্রয় করে ও ব্যবহার করে।যাতে দেশের কৃষকরা জীবিত থাকতে পারে।তার সাথে সাথে দেশের সার্বিক উন্নতি ঘটে। এই লক্ষ্যে জাপানিরা বিদেশি সস্তা বস্তু বর্জন করেছে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। পরিশেষে, বলতেই হবে যে শত্রু ঘেরা আমাদের দেশ ভারত বর্ষ।কোনদিন কাউকেই আক্রমণ করেনি।কিন্তু বহুবার আক্রান্ত হয়েছে প্রতিবেশী দেশের দ্বারা।সমস্ত সুযোগ সুবিধা নিয়েও তারা ভারতের ক্ষতি করেছে বারবার। তাই সামরিক দিক থেকেও প্রভূত উন্নতি ও আধুনিকীকরণ প্রতিনিয়ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আমরা ছোট্ট দেশ ইজরায়েলের উদাহরণ নিতে পারি।শত্রু দ্বারা বারবার আক্রান্ত হয়েও তারা নিজের আত্মরক্ষা করতে সমর্থ হয়েছে। শত্রুকে কিভাবে আপ্যায়ন করতে হয় তা তারা দেখিয়েছে।এবং তা সম্ভব হয়েছে তাদের জাতীয়তাবোধ ও দেশাত্মবোধ থেকেই। বর্তমানে ভারত বর্ষ বিগত ছয়-সাত বছরে অর্থনৈতিক এবং বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি করেছে,বহু বাধা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও।এবং তা একমাত্র সম্ভব হয়েছে দেশমাতৃকার প্রতি সমর্পন ও আত্মনির্ভরতার প্রতি এগিয়ে যাওয়ার মন্ত্রের মাধ্যমেই। ।

ড. সুমন পানিগ্রাহী (Dr. Suman Panigrahi)

তথ্যঋণঃ 1.চীনের চ্যালেঞ্জ ও আমাদের কর্তব্য, স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ।
2.গুগুল সার্চ ।
চিত্রঋণঃগুগল ইমেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.