কিছু হাসপাতালে রোগীদের করোনা সন্দেহে ভর্তি করা হচ্ছে না এবং রেফার করা হচ্ছে অন্য কোনও হাসপাতালে , যেখানে তাদের করোনা পজিটিভ ফল না আসা পর্যন্ত আবার ভর্তি নিতে অবীকার করছে।
৫৪ বছর বয়সী দেবাশীষ চ্যাটার্জ্জী এক স্কুল শিক্ষক, বহুদিন ধরে তিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন গত কাল তার সেলিব্রাল অ্যাটাক হয়। ডানকুনিতে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্ক্যান করে দেখা গেল “সাবডিউরাল হেমাটোমা” এই ব্যাপারে ওই নার্সিংহোম কিছু করতে পারবে না তার জন্য তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হল। পিজি হাসপাতালে আনার পরে এক্সরে রিপোর্ট দেখে পিজি হাসপাতাল থেকে বলা হলো সে কোভিড সাসপেক্ট তার জন্য তারা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (Medical College Hospital) রেফার করে দিলেন। কিন্তু মেডিকেল কলেজ হসপিটাল তাকে ভর্তি নিল না, বলা হল তিনি যতক্ষণ না কোভিড পজেটিভ প্রমাণিত হচ্ছেন ততক্ষণ তাকে ভর্তি নেওয়া যাবে না।
আমি একটা সহজ কথা জিজ্ঞেস করতে চাই যে মানুষটার কিডনি সমস্যা ছিল, সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছে, তার কোভিড হতেও পারে সেরকম একজন রোগীকে তার মেডিক্যাল ম্যানেজমেন্ট যদি পিজি হাসপাতাল আর মেডিকেল হাসপাতাল না করতে পারে তাহলে কলকাতার কে করতে পারে? আর যে প্রাইভেট নার্সিং হোম করতে পারে তাতে প্রতিরাতে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার ক্ষমতা কতজন মানুষের আছে?
একটা সহজ কথা আমি জিজ্ঞেস করতে চাই গতরাত্রে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মোট মিলে যে ক্যাপাসিটি তার কতটা ভর্তি ছিল? আর কতটা আন্ডার ইউটিলাইজ হয়ে এই মানুষগুলো মৃত্যুর মুখে যাচ্ছেন?
পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ আপনারা দয়া করে এই বিষয়টিতে লক্ষ্য দিন এই প্যানডেমিক সিচুয়েশনকে কেউ এক্সপ্লয়েট করছে, এই মহামারী সমস্যাকে কেউ নিজের কাজের জন্য ব্যবহার করছে কেউ টাকা রোজগারের জন্য ব্যবহার করছে কেউ নিজের দায়িত্বকে অন্যের ঘাড়ে চাপানোর জন্য ব্যবহার করছে। আর আমাদের যে মেডিকেল ক্যাপাসিটি তা আন্ডার ইউটিলাইজ রয়েছে। আমি সংবাদমাধ্যমের কাছে আর সারা বিশ্বের বাংলাভাষী মানুষের কাছে বলতে চাই যে কলকাতা রোনাল্ড রসের শহর বিধানচন্দ্র রায়ের শহর সেখানে আজকের এই ভয়ানক দিনে চিকিৎসা ব্যবস্থা কি অবস্থা দাঁড়িয়েছে আমরা যদি এখনো কোন ব্যবস্থা না নি তাহলে এর থেকে বড় পাপ আর কিছু হবে না।
ড. জিষ্ণু বসু (Dr. Jishnu Basu)