করোনাতঙ্ক কাটিয়ে উৎসবের মেজাজেই হবে দুর্গাপুজো? বড়সড় আপডেট দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্যে দিন দিন লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। বাঁধ মানছে না আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে বড় জমায়েতে কড়া নিষেধাজ্ঞা রাজ্যে। সামনেই আসছে দুর্গাপুজো (Durga Pujo)। করোনাতঙ্ক কাটিয়ে এত বড় উৎসব কীভাবে সম্ভব, তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না কলকাতার পুজো উদ্যোক্তারা। অনেক পুজো কমিটিই বাজেট কাটছাঁট করে পুজোর কথা ভাবছে। কোনওরকম নমঃ নমঃ করে পুজোর পক্ষে অনেকে। চিন্তার মধ্যে আশার আলো দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার নবান্ন সভাঘরে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সবাইকে আগামী কয়েকদিন সচেতন থাকতে হবে। সামনেই পুজো আসছে। ভাল করে করতে হবে তো। সংক্রমণ কমাতে এখন থেকেই ক্লাবগুলি ভূমিকা নিক।’

অনেকেরই মতে, এবার হয়তো দুর্গাপুজোতেও থাবা বসাতে পারে করোনা। মুম্বইয়ে ঐতিহ্যবাহী গণেশ উৎসবে কোপ বসিয়েছে করোনা। মুম্বইয়ের সবথেকে বড় গণেশ উৎসব ‘লালবাগচা রাজা’র পুজোয় এবার ছেদ পড়ছে। বাকি অনেক গণেশ পুজো কমিটিও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানে চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে কলকাতার দুর্গাপুজো কমিটিগুলির। এতদিনের ঐতিহ্যে শেষে ছেদ পড়বে করোনার জন্য? তবে এদিন মমতা যা বললেন তাতে বহু পুজো কমিটির মুখে হাসি ফুটতে বাধ্য। তিনি বলেছেন, ‘এখন সচেতন হয়ে থাকতে হবে। ভাল করে থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সুস্থ থাকতে হবে। সামনে তো পুজো। পুজো ভাল করে করতে হবে তো।সংক্রমণ কমাতে এখন থেকেই ক্লাবগুলি ভূমিকা নিক। সবাই রাস্তায় মাস্ক পরে বেরিয়েছে কিনা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা হচ্ছে কি না ওরা নজর রাখুক।’ বেশ কিছু পুজো উদ্যোক্তার আশঙ্কা ছিল, রাজ্য সরকার হয়তো বিধিনিষেধ চাপাতে পারে দুর্গাপুজোর উপর। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এদিন যা ইঙ্গিত দিলেন তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট, পুজো এবার স্বমহিমাতেই হতে চলেছে।

দুর্গাপুজোর সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মিক যোগ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। দুর্গাপুজো নিয়ে বরাবরই তিনি উৎসাহী। পুজো কমিটিগুলির আমন্ত্রণে প্রত্যেকবার মহালয়ার পরদিন থেকেই দরকারি কাজকর্মের মধ্যেও সময় বের করে দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে ছুটে যান মমতা। দুর্গাপ্রতিমার চক্ষুদানও করেন। পুজোর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিবিড়। পাশাপাশি বাংলার দুর্গাপুজোকে বিশ্বায়নের নেপথ্যেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। বাঙালির দুর্গাপুজোই সব উৎসবের সেরা, স্বীকৃতিও দিয়েছে ইউনেস্কো। এবছর রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভালেও ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই জায়গায় পুজোয় করোনা যদি থাবা বসায়, সেই নিয়ে আশা-আশঙ্কার দোলাচলে রয়েছেন উদ্যোক্তারা। মমতার মন্তব্য তাঁদের চিন্তা কিছুটা দূর করবে আশা করাই যায়। এই প্রসঙ্গে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের (Forum For Durgotsav) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু জানিয়েছেন, ‘বাংলার দুর্গাপুজোকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার পিছনে মুখ্যমন্ত্রীর অনেক অবদান। রাজ্য সরকার পুজো করার জন্য যা যা নির্দেশিকা দেবে তাই পালন হবে। এমনকী আমরা সব পুজো কমিটিগুলিকে ফোরামের তরফেও পুজো করার জন্য নির্দিষ্ট গাইডলাইন দিয়েছি। বাকিটা দুর্গা সহায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.