মুক্ত বাণিজ্য নীতির বাধ্যবাধকতায় দেশের অর্থনীতি উন্মুক্ত করার সূত্রপাত ২০১৪ সালে নয়, শুরু হয়েছিল নরসীমা রাওয়ের আমলে আশির দশকে। ভারত আফগানিস্তানসহ দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার বেশ কিছু দেশের সঙ্গে ফ্রী ট্রেড এগ্রিমেন্ট (FTA) সাক্ষর করে থাকলেও প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে পুরোপুরি FTA করেনি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নতির খাতিরে এখনও পর্যন্ত ২৮টি আমেরিকায় উৎপন্ন পণ্য রপ্তানির ওপর শুল্ক ছাড় দিয়েছেন। এই পর্যন্ত কোনও সমস্যা নেই। মোদীজীর গায়ে অতিরিক্ত বিলগ্নীকরণ, প্রাইভেটাইজ়েশন, দেশের সম্পত্তি কখনও আদানি আম্বানিদের কখনও বা বিদেশীদের হাতে বিক্রি করে দিচ্ছেন তকমা লেগেই আছে। তাই বাণিজ্য চুক্তিগুলো নিয়ে হৈহল্লা নতুন কিছু নয়।
তবে সব বিরোধিতাই কি ভিত্তিহীন? এই মুক্ত বাণিজ্যের জোয়ারেও বিশ্বের বহুজাতিক ডেয়ারি ফার্মগুলো ভারতের বাজারে দাঁত ফোটাতে পারেনি, কারণ প্রায় ১৫০ মিলিয়ন বা ১৫ কোটি ছোট-বড়-মাঝারি ডেয়ারি ফার্ম ভারতবর্ষকে বিশ্বের বৃহত্তম দুগ্ধ উৎপাদক দেশ হিসাবে গড়ে তুলেছে। এদিকে বৃহৎ পুঁজির বহজাতিক ডেয়ারি সংস্থাগুলির বাণিজ্যিক স্বার্থ সুরক্ষিত করতেই তথাকথিত বিশ্ব বাণিজ্যের উদার অর্থনীতির পথ বেয়ে এসেছে Regional Comprehensive Economic Partnership (RCEP)। ট্রাম্প সাহেব সেই সুযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ঐ ২৮টি পণ্য ছাড়াও দুধ ও দুগ্ধজাত ডেয়ারি পণ্যও ভারতে অবাধে রপ্তানির উদ্দেশ্যে আমদানি শুক্ল হ্রাসের জন্য ভারত সরকারকে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন বিগত কয়েক বছর।
ভারতের গোয়ালা ও ক্ষুদ্র ডেয়ারি মালিকরা অধিকাংশ খুব স্বল্প জমির অধিকারী। কয়েকজন মাত্র দুই-তিনটি গোরু বা মোষ সম্বল করেই জীবিকা চালায়। প্রাণী পিছু গড় উৎপাদন (দৈনিক ৩ লিটার প্রতি গোরু/মোষ) হয়তো অস্ট্রেলিয়া, নিউজ়িল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইত্যাদি প্রথম বিশ্বের দেশের তুলনায় খুবই নগণ্য (দৈনিক ৩০ লিটার প্রতি গোরু/মোষ)। কিন্তু এই সামান্য গড় উৎপাদন নিয়েই ভারতীয় দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য বিক্রতারা দেশের চাহিদা মেটাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। শুধু তাই নয়, ডঃ ভার্গিস কুরিয়ানের দৌলতে দেশে ‘অপারেশন ফ্লাড’ সফল হওয়ার পর ও ধীরে ধীরে ডেয়ারি গবেষণার অগ্রগতির ফলে দেখা গেছে ১৯৫০ সালে যেখানে জন প্রতি ১৫০ গ্রাম দুধ উৎপন্ন হতো, সেখানে ২০১৮-য় সেই পার ক্যাপিটা দুধের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭৪ গ্রাম, যা বিশ্বের গড় পার ক্যাপিটা দুধ উৎপাদন ২৯৪ গ্রামের চেয়ে অনেকটাই বেশি। ফলত বিদেশী চকোলেট, আইসক্রীম, চীজ় ইত্যাদি ভারতীয় বাজারে উপলভ্য হলেও ডেয়ারি শিল্পের (Dairy industry) নিয়ন্ত্রণ এখনও পর্যন্ত ভারতীয় কোম্পানিগুলোর দখলে। এই সুস্থিতি ও দেশজ উৎপাদকদের উপার্জন নষ্ট করার কোনও যৌক্তিকতা থাকতে পারে না।
কিন্তু এই অযৌক্তিক দাবি মানা না মানার ওপরেই ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রপতির সফর সাফল্য অনেকটা দাঁড়িয়ে আছে। ২০১৮ সালেই কর্ণাটকট মিল্ক ফেডারেশন (KMF)-এর সভাপতি বালাচন্দ্র জারকোলি কেন্দ্রের কাছে মুক্ত বাণিজ্য (FTA)-এর অজুহাতে দুধ আমদানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। তৎকালীন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী পিযুশ গোয়েলের কাছে একটি প্রতিনিধি দল যায় কর্ণাটক রাজ্যের সবকটি জেলার দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের তরফ থেকে। জারকোলির মতে আমূল বা কেএমএফ-এর মতো সমবায় সমিতিরা যথেষ্ট শক্তিশালী। যেখানে কেন্দ্র সরকার ২০২২ সালের মধ্যে ডেয়ারি ফার্ম থেকে আয় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে, সেখানে মার্কিন মুলুক থেকে অনাবশ্যক আমদানি করলে ফল হবে উল্টো। কর্ণাটকের ২৪.৮২ লক্ষের বেশি দুগ্ধ ব্যবসায়ী কেএমএফ-এর সদস্য। ২০১৭-১৮-য় সংস্থাটির বার্ষিক উৎপাদন ছিল ৮৪ লক্ষ কেজি এবং মোট বিক্রি ছিল ১৪,৪৬৬ কোটি টাকা। শুধু বড় সমবায় কেন, সারা দেশে ১০ কোটির ওপর মানুষ এই জীবিকার সঙ্গে যুক্ত। ভারতে ডেয়ারি শিল্প মূলত মানুষ নির্ভর (labour intensive)। তারা তো বরবাদ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে ধসে পড়তে পারে গ্রামীণ অর্থনীতি।
চামারাজানগরের শতাধিক দুধ ব্যবসায়ী চামারাজেশ্বর মন্দিরেরসামনে জড়ো হয়ে শুক্লহীন দুধ আমদানির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। এদিকে কেন্দ্রের এনডিএ সরকার নিউজ়িল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্বের দুগ্ধ উৎপাদক দেশগুলোর সঙ্গে সস্তায় দুধ আমদানির উদ্দেশ্যে RCEP চুক্তি করতে চলেছে। আর এই সুযোগেই মার্কিন মুলুকও ২৮টি পণ্য শুক্ল ছাড়া অবাধে ভারতে রপ্তানির সুবিধা ভোগ করার পরেও ভারতে প্রয়োজন থাক বা না থাক দুধও রপ্তানি করবে বলে বায়না ধরেছে। শুধু তাই নয়, দুধ রপ্তানি তাও আবার বিনা বা ৫%-এর মতো নগণ্য শুল্কে রপ্তানি করতে না পারলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতকে দেওয়া সুবিধা প্রত্যাহার করার হুমকিও দিচ্ছে। Generalised System of Preferences (GSP) অনুযায়ী ভারতকে আমেরিকা কিছু বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা (Preferential Trade Treatment) দিয়ে থাকে যাতে করে ভারত ৫.৬ বিলিয়ান ডলারের ভারতীয় সামগ্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে রপ্তানি করতে পারে সম্পূর্ণ নিঃশুক্ল।
বিষয়টা নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া ও প্রতিবাদের পেটেন্ট নিয়ে রাখা বামপন্থী দলগুলোকে তেমন হৈচৈ করতে শোনা যায়নি। খবর হল আরএসএস আমিষভোজী মার্কিন গরুর দুধ নিয়ে আপত্তি করার পর। সঙ্ঘের আপত্তিটা মূলত ধর্মীয় অনুভূতি থেকে। আমেরিকা ও অন্যান্য বহু দেশে গোরুকে ঘাসপাতা জাবনার সঙ্গে প্রাণীজ প্রোটিন যেমন মৃত প্রাণীর রক্ত অন্ত্র ইত্যাদি প্রক্রিয়া করে মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতিতে গোমাতা তৃণভোজী। আর নিরামিষশাসী মানুষরাও প্রোটিনসহ নানাবিধ পুষ্টির উৎস হিসাবে দুধ পান করে থাকে ও দুগ্ধজাত খাদ্য খেয়ে থাকে। গোমাতা নিজেই আমিষ খেতে শুরু করলে তার দুধও আর নিরামিষ থাকে না। সেই দুধ শিবের মাথায় (লিঙ্গে) ঢালা চলবে না, পুজো ও শোধনের কাজও করা যাবে না। হিন্দু প্রধান দেশের বিশ্বাসে আঘাত – সঙ্ঘের তরফে যুক্তি হিসাবে মোটামুটি এমনটাই বলা হয়েছে।
এখন আরএসএস যখন বলেছে আর বিজেপি যখন সেই অনুযায়ী ভাবতে বসেছে, তখন এই প্রতিবাদকে অসার অযৌক্তিক তো হতেই হবে। তাই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির হাত ধরে বিদেশী ডেয়ারি শিল্প ভারতীয় বাজার কব্জা করে দেশীয় উৎপাদকদের টুঁটি টিপে ধরলেও আপত্তি নেই। বরং গোশবক বা গোমূত্র পানকারী বলে গালাগালে আরাম বেশি।
এখানে বলে রাখি, মা আমিষ খেলে তার দুধ যদি আমিষ হয়ে যায়, তাহলে সব আমিষশাসী মানুষ মায়ের দুধ আমিষ। হ্যাঁ, গাভীকে মা-ই বললাম, পূর্ণ সচেতনতায়। বস্তুত মায়ের শরীরের রক্ত কলাই রূপান্তরিত (modified) হয়ে দুধ উৎপন্ন হয়। মা নিজের শরীরের সেরা নির্ষাস দিয়ে সন্তানকে সদ্যোজাত অবস্থা থেকে তিলে তিলে বড়ো করে তোলে। সুতরাং প্রাণীজ প্রোটিন হিসাবে দুধকে নিরামিষ বলা যায় কিনা সেই নিয়ে তর্ক থাকলেও তার পবিত্রতা তর্কাতীত। এমনকি রজস্বলা মায়ের দুধও তার দুধের শিশুটির জন্য শ্রেষ্ঠ খাদ্য বা পানীয়। দুধের প্রতিটি বিন্দু মাতৃস্নেহ মমতা ও জীবন ধারণের মৌলিক প্রয়োজনে সম্পৃক্ত। তাই তো নিজের জাগতিক মা ছাড়াও যে মনুষ্যেতর প্রাণীটির দুধ আমাদের দৈনন্দিন পানীয় বা আহার্য, তাকে মা বলার মধ্যে যথেষ্ট উচ্চাঙ্গের মানবিক দর্শন আছে, যাকে উপহাস বিদ্রূপ দ্বারা দমানো যায়নি, যাবেও না।
এবার দেখা যাক গোরুর আমিষ আহার কতটা প্রয়োজন, কতটা কাম্য? ঘাসপাতা খাওয়ার সময় গোরু অনেক কীটপতঙ্গ খেয়ে ফেলে। সে তো ডাল, আটা, ময়দাতেও পোকা লাগে, শাকাহারীরা জ্ঞানে অজ্ঞানে তা খেয়েও ফেলেন। সুতরাং সেই যুক্তিতে গোরুকে আমিষভোজী বানানো কুতর্ক ছাড়া আর কিছুই নয়। অবশ্য গোয়ায় মাছ ও মুরগীর মাংস স্বেচ্ছায় ও পছন্দ করে খেতে দেখা গেছে বেশ কিছু গোরুকে। সেটা এখনও পর্যন্ত ব্যতিক্রমী সংবাদ হয়েই আছে, জৈব বিবর্তন বলে মান্যতা পায়নি। কিছু বামপন্থীকে অবশ্য এতে বিকৃত আনন্দ পেতে দেখেছি। যাইহোক, সরকারি তরফে মূলত সংখ্যাগুরু ভারতীয়ের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ভাবানুভূতির কথাই বলা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণও আছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞের মত। পশু প্রজনন ও বংশগতি বিশারদ সাগরী রামদাস বলেছেন, বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকা সত্ত্বেও সরকার কেন শুধু ধর্মীয় আবেগের দোহাই দিচ্ছে। বিদেশী ডেয়ারি ফার্মে উৎপাদন বাড়াতে গরুকে আমিষ খাদ্য (blood meal) দেওয়া হয়, যাতে Bovine Spongiform Encephalopathy (BSE) বা Mad Cow Disease হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই অসুখটি আশির দশকে ইওরোপে গবাদি পশুর মধ্যে এক প্রকার মহামারীর রূপ নিয়েছিল। প্রাইয়ন (prion) নামে এক ধরণের অস্বভাবিক প্রোটিন গবাদি পশুর মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। এটি কোনও জীবাণু নয়, স্নায়ুকলার মধ্যে প্রোটিন অণু কোনও কারণে পরিব্যক্ত (mutated) হলে অসুখটি করে। আক্রান্ত পশুটির মাংস বিশেষ করে মগজ, শিরদাঁড়ার অংশ পেটে গেলে অন্যান্য পশু ও মানুষেরও সংক্রমণ হতে পারে। এই কারণে World Organisation for Animal Health (OIE) এবং অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো বেশ কিছ দেশ রোমন্থনকারী পশুদের ব্লাড মীল দেওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।
যদিও অনেক পশু বিজ্ঞানীর মতে গো-মাংসের মাধ্যমে রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনা যথেষ্ট হলেও দুধের মাধ্যমে সংক্রমণের তেমন উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান নেই, কিন্তু সম্ভাবনা একেবারে নাকচ করাও যায় না। তাছাড়া যে কোনও খাদ্য পানীয়র সঙ্গে মানুষের রুচি জড়িয়ে আছে। অধিকাংশ ভারতবাসী যদি ধর্মীয় বা রুচিগত যে কারণেই হোক, রক্ত মাংস খাওয়া গোরুর দুধ ব্যবহারে স্বস্তিবোধ না করে, সেখানে জোরাজুরি চলতে পারে না। প্রাণীকে নৃশংসভাবে আড়াই পোঁচে জবাই করে খাওয়া যদি কোনও সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং তার সঙ্গে বাণিজ্যের শর্ত হয়, তাহলে স্বাভাবিক খাদ্য থেকে বিচ্যুতির কারণে গাভীর দুধ বাতিল করার স্বাধীনতা অন্যদের কেন থাকবে না, বিশেষ করে যেখানে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি সামান্য হলেও থেকে যাচ্ছে?
এ দেশের প্রগতিশীলতার ধারাটি এমন খাতে বইছে যে বৈজ্ঞানিক, অর্থনৈতিক কারণ যতই থাকুক, হিন্দু ভাবাবেগ সম্পৃক্ত থাকলে সেসব যুক্তি নিমেষে আস্তাকুঁড়ে পরিত্যক্ত হয়। তাই ট্রাম্পের আগমণে কত লক্ষ কোটি টাকা অপচয় হল ও সে জন্য দেশের আর্থিক অবস্থা কতখানি রসাতলে গেল, তাই নিয়ে মিডিয়া তোলপাড় করলেও দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি সংকটে পড়বে জেনেও গরীব দরদীদের আমেরিকার কাছ থেকে অনাবশ্যক দুধ আমদানি নিয়ে তেমন হেলদোল নেই।
এক্ষেত্রে একটাই পরামর্শ দেশবাসীকে দেওয়া যেতে পারে, যদি একান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা অব্যাহত রাখতে ভারত সরকার আমেরিকার দুধকে দেশের বাজারে ছাড়পত্র দিতে বাধ্য হয়, তাহলে আমরাই সেই দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্য কিনব না। এমনকি আমেরিকা আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা অনুযায়ী ব্লাড মীল দেওয়া বন্ধ করলেও দেশীয় উৎপাদক ও সমবায়গুলির পাশে দাঁড়ানোই আমাদের নাগরিক কর্তব্য। তাতে রাষ্ট্রের কূটনৈতিক দায়, আর নাগরিকদের ধর্ম রুচি স্বাস্থ্ যাই বলা হোক – দু পক্ষই বজায় থাকে।
শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়