ভারত-চিন সীমান্ত বিবাদ যখন কার্যত তলানিতে ঠেকেছে, ঠিক সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) আচমকা লাদাখ সফর। শুক্রবার সকালে ‘সারপ্রাইজ ভিসিট‘-এ লাদাখ পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন তিন বাহিনীর প্রধান চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং স্থলবাহিনীর প্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণে। সীমান্ত চৌকি থেকে সেনা হাসপাতাল, প্রধানমন্ত্রী ঘুরে ঘুরে কথা বলেন বাহিনীর কর্তা ও জওয়ানদের সঙ্গে। তার পরে নিমুতে সামরিক সমাবেশে দাঁড়িয়ে চিনের নাম না করে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিস্তারবাদের যুগ শেষ, বিশ্ব এখন বিকাশবাদের পথে চলতে চায়। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, গোটা বিশ্ব আজ বিকাশবাদে বিশ্বাসী। কিন্তু কেউ কেউ এখনও বিস্তারবাদে বিশ্বাসী। ইতিহাস সাক্ষী, এই সব শক্তি মুছে গিয়েছে, অথবা নত হতে বাধ্য হয়েছে। গোটা বিশ্ব এই বিস্তারবাদী শক্তির বিরোধিতা করার বিষয়ে মনস্থির করে ফেলেছে। গোটা বিশ্ব আজ বিকাশবাদের পথে চলতে চায়।
সামগ্রিক পরিস্থিতি সরেজমিন খতিয়ে দেখার পর এবং জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলার পর সেনা জওয়ানদের মনোবল বাড়াতে এদিন ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে এক দিকে যেমন সেনার বীরত্বের কথা বলেছেন, তেমনই নাম না করে চিনকে হুঁশিয়াারিও দিয়েছেন তিনি। পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে নিহত সেনা জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গালওয়ানে যে বীরত্ব আপনারা দেখিয়েছেন, তা সারা দেশ মনে রাখবে। আপনারা গোটা বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভারত তথা ভারতীয় সেনার শক্তি কতটা। এদিন সেনা জওয়ানদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের হাতে দেশরক্ষার ভার যখন রয়েছে, তখন পুরো দেশ নিশ্চিন্ত। ১৪ কোরের বীরত্বের কাহিনী সবাই জানে। আমরা হলাম সেই লোক, যাঁরা বংশীধারী শ্রীকৃষ্ণের ধ্বজা ধরি, আবার সুদর্শন চক্রধারী শ্রীকৃষ্ণকেও আদর্শ মানি।
সেনা কর্মীদের মাঝে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ দেশরক্ষায় সেনারা যে পরাক্রম দেখিয়েছে তাতে গোটা বিশ্বে ভারতের শক্তি প্রমাণিত। সমগ্র ভারতবাসীর সেনার উপর আস্থা রয়েছে। সেনাদের বীরত্বই আত্মনির্ভর ভারত গঠনের সংকল্প আরও দৃঢ় করছে।’ মোদীর কথায়, ‘শত্রুরা ভারতীয় সেনার আগুন এবং আক্রোশ দেখেছে। আপনারা যেখানে মোতায়েন আছেন, তার থেকেও আপনাদের সাহস বেশি। দুর্বলরা কোনওদিনই শান্তি রক্ষার উদ্যোগ নিতে পারে না। আপনাদের ইচ্ছাশক্তি পর্বতের মত দৃঢ়। গোটা দেশ আপনাদের নিয়ে গর্বিত।’