সীমান্তে শান্তির ইঙ্গিত : আলোচনার পথ খুলে সেনাবাহিনী সরাল ভারত-চিন

অবশেষে ভারত-চিন সম্পর্কে (Indo-China Relationship) বরফ গলার ইঙ্গিত। লাদাখ নিয়ে শেষ পর্যন্ত ভারত ও চিনের অশান্তি মেটার সোনালী রেখা দেখতে শুরু করল দু’দেশ। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার পূর্ব লাদাখের একাধিক সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু থেকে সেনাবাহিনী সরিয়েছে দুই দেশ। আজ দুই দেশের সেনা আধিকারিকরা ফের বৈঠকে বসছেন। ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, ভারত ও চিনের মেজর জেনারেল স্তরের আধিকারিকরা ফের বৈঠকে বসছেন বিষয়টি শান্তির পথে নিয়ে যেতে। যদি কোনও কারণে সেই বৈঠক সম্ভব না হয়, তাহলে ফের বৃহস্পতিবার দুই দেশের সেনাকর্তাদের বৈঠক হবে। এই সপ্তাহেই দুই দেশের মধ্যে আরও এক দফা বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই দাবি করেছিলেন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে চিনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে সমস্যা সমাধান করা হবে। আপাতত পরিস্থিতি সে দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।

এক মাস আগে ভারত ও চিনের মধ্যে এই সমস্যার সূত্রপাত হয়। প্যাঙ্গং লেক এলাকায় টহল দেওয়ার সময় গত ৫ ও ৬ মে ভারতীয় এলাকায় ঢুকে পড়ে চিনের লাল সেনাবাহিনী। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে লাঠি, রড নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনার পর থেকেই এই এলাকায় অস্ত্র বাড়াতে শুরু করে চিন। ভারতের তরফে চিনের এই কাজের সমালোচনা করা হয়। সেনাবাহিনী বাড়ানো শুরু হয়। তবে শান্তির লক্ষ্যে গরম আবহে দু’দেশের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে ‌ভারতীয় সেনা অফিসারদের নেতৃত্ব দেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং। চিনের তরফে ছিলেন ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের মেজর জেনারেল লিন লিউ। ভারত কারাকোরামে রাস্তা তৈরি বন্ধ করলেই নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনাবাহিনী সরানোর বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করবে চিনা সরকারের (China Govt.) পক্ষে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। যেখানে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা আজ এখান থেকে আলোচনা শুরু হবে বলে জানা যাচ্ছে। তার আগেই অবশ্য লাদাখ এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করা শুরু করল দুই দেশ।

দুই দেশের কাছে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত শান্তির প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আজ পূর্ব লাদাখের হট স্প্রিং এলাকায় বৈঠক হওয়ার কথা দু’পক্ষের সেনাবাহিনীর। সূত্রের খবর, প্যাঙ্গং লেক এলাকা বাদে বাকি এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করা শুরু করেছে চিন। ভারতের তরফেও তাই করা হচ্ছে। আর তাতেই সুগম হচ্ছে আলোচনার পথ। ভারত-চিন সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিরাট চাপে রয়েছেন চিনের রাষ্ট্রপতি শিং জিনপিং। এছাড়াও ভারতের মতো তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি তাইওয়ান, ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্সের সঙ্গেও জলপথ নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এবং ভারতে যেভাবে চিনা দ্রব্য প্রত্যাহারের রব উঠেছে তাতেও চিন্তিত সরকারপক্ষ। অনিচ্ছাসত্ত্বেও চাপে পড়ে শান্তি প্রস্তাব মেনে নিতে হচ্ছে চিনকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.