“বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছা জলদি পূর্ণ করবেন। এ রাজ্যে বিজেপির সরকার হবে।” এভাবেই ভার্চুয়াল জনসভায় বিজেপি (BJP) কর্মীদের বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। মঙ্গলবার সকালে দিল্লি থেকে কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দেন তিনি। সেখানেই পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখল প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অমিত শাহ বলেছেন, “করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মোকাবিলা না করতে পেরে আপনি বলছেন বিজেপি সরকার এসে দায়িত্ব নিক। তাই আমি আপনাকে বলতে চাই, বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছা জলদি পূর্ণ করবেন। এ রাজ্যে বিজেপির সরকার হবে।” প্রসঙ্গত, সপ্তাহখানেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন যে তিনি স্বয়ং অমিত শাহকে পরিস্থিতি সামাল দিতে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব নিতে বলেছেন। তখন অমিত শাহ এ বিষয়ে কিছু না বললেও, এদিন সেকথা দলের নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলে কার্যত মনোবল বৃদ্ধির কৌশল নেন।
এদিন অমিত শাহের বক্তব্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলনে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)ভুমিকার তীব্র সমালোচনা থেকে শুরু করে কৃষকদের পাওনা গন্ডা থেকে বঞ্চিত করার বিরুদ্ধে সরব হন। তিনি বলেন, “কেন্দ্রের নানা সুবিধা থেকে এ রাজ্যের বাসিন্দাদের বঞ্চিত করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষকদের বঞ্চিত করছেন। নরেন্দ্র মোদী এ রাজ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠবেন, এই আশঙ্কা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপনি কৃষকদের তালিকা শনিবার আমাদের পাঠান, সোমবারের মধ্যে টাকা কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে পাঠায়ে দেব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে চাই, আপনি কৃষকদের সম্পর্কে তথ্য দিন। আমরা ৬ হাজার টাকা দিতে চাই।”
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে তৃণমূলের অবস্থান প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, “সিএএ-এর বিরোধিতার ফল ভুগতে হবে আপনাকে। ওই সময় মমতা দিদিকে এত রেগে যেতে আমি কখনো দেখিনি। তিনি জঙ্গী আন্দোলন করেছেন, ট্রেন জ্বালানো হয়েছে। আমরা অসহায় শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য সিএএ আইন কার্যকর করেছি। আর আপনি রাজনীতি করে যাচ্ছেন। ভোটবাক্স খুললে বাংলার জনতা আপনাকে রাজনৈতিক শরণার্থী করে দেবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চাই, মতুয়া সম্প্রদায়, নমশূদ্র ও বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষ জন আপনার কী ক্ষতি করেছেন?” পাশাপাশি, শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনকে করোনা স্পেশাল ট্রেন বলা প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি। গান্ধীনগরের সাংসদ বলেছেন, “শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনকে ‘করোনা এক্সপ্রেস’ বলে উনি পরিযায়ী শ্রমিকদের অসম্মান করেছেন। এ রাজ্য লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে সবচেয়ে কম ট্রেন নিয়েছে। আপনি ভাববেন না, পরিযায়ী শ্রমিকরা ওই ট্রেনে চড়েই তৃণমূল এ রাজ্যের বাইরে পাঠিয়ে দেবে।”
এ রাজ্যে তৃণমূল জমানায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি থেকে শুরু করে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন তিনি। অমিত শাহ বলেছেন, “রাজ্য সরকারকে ছাড়াও ১১ হাজার কোটি টাকা বাংলার মানুষকে দিয়েছে বিজেপি সরকার। এখানে তো কেন্দ্রের দেওয়া অর্থ তোলাবাজি ও সিন্ডিকেট ও ভাইপো ভেট হিসাবে চলে গিয়েছে।” পশ্চিমবঙ্গে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সূচনা না করতে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নির্বাচন শেষ হতে দিন, রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই প্রকল্প চালু করতে দেননি। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধা পেয়েছেন গরিব মানুষ। কেজরীবাল পর্যন্ত মেনেছেন, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানবেন না।”