মসজিদে প্রার্থনা করার অধিকার দেওয়া হোক মহিলাদেরও। এই আর্জি জানিয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক দম্পতি। তাঁদের বক্তব্য ছিল, সুপ্রিম কোর্টে যদি শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে মামলা হতে পারে তাহলে মসজিদে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের আর্জি নিয়েই বা হবে না কেন? মঙ্গলবার ওই মামলার শুনানি হয়। বিচারপতিরা কেন্দ্রীয় সরকার ও অন্যান্য সংস্থাকে নোটিশ দেন। তাঁরা বলেন, আর্জিতে শবরীমালার প্রসঙ্গ উল্লেখ থাকার জন্যই তাঁরা শুনানিতে রাজি হয়েছেন।
ওই জনস্বার্থের মামলার শুনানিতে বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, সংবিধানে যে সাম্যের অধিকার দেওয়া আছে, তা কি কোনও ব্যক্তি অপর ব্যক্তির ওপরে প্রয়োগ করতে পারে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীদের কৌঁসুলি যে জবাব দিয়েছেন, তাতে আদালত সন্তুষ্ট হয়নি। বিচারপতিরা বলেন, শবরীমালা নিয়ে রায় দেওয়া হয়েছিল বলেই আমরা আপনাদের আর্জি শুনছি। সংবিধানে যে সাম্যের অধিকার দেওয়া হয়েছে, তা কোনও ব্যক্তি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে পারেন। কিন্তু যে ব্যক্তি মসজিদের অভ্যন্তরে আছেন, তাঁর বিরুদ্ধে সাম্যের অধিকার প্রয়োগ করা যায় কি?
বিচারপতিরা আরও প্রশ্ন করেন, কোনও মসজিদ অথবা মন্দিরকে কে রাষ্ট্র বলে গণ্য করা যায়? আপনারা কি সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারার মাধ্যমে অপর নাগরিকের থেকে সাম্য দাবি করতে পারেন? রাষ্ট্র বাদে অপর কারও ক্ষেত্রে এই অধিকার প্রয়োগ করা যায় কি? আমরা মনে করি, সব নাগরিক যাতে সমান অধিকার পান, তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রাষ্ট্র এই দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না।
সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন পেশ করেছিলেন ইয়াসমিন জুবের আহমেদ পিরজাদে ও জুবের আহমেদ নাজির আহমেদ পিরজাদে। তাঁদের বক্তব্য, পবিত্র কোরান অথবা প্রফেট মহম্মদের বাণীতে কোথাও বলা নেই যে, মহিলাদের মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।
শবরীমালা রায় থেকে উদ্ধৃত করে আবেদনকারীরা বলেছেন, ধর্মের নামে মহিলাদের প্রার্থনা করার অধিকার কেড়ে নেওয়া উচিত নয়।
আবেদনকারী নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে বলেছেন, আমি পুনের জামা মসজিদ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম, আমার স্ত্রীকে মসজিদে ঢুকে প্রার্থনা করতে দেওয়া হোক। আমাকে তার জবাবে বলা হয়, মহিলাদের পুনেয় বা আর কোথাও মসজিদে ঢুকে প্রার্থনা করতে অনুমতি দেওয়া হয় না।
তবে ওই মসজিদের ইমাম আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ওই দম্পতির আবেদন সম্পর্কে জানাবেন। কী করা উচিত সে বিষয়ে নির্দেশ চাইবেন।