না, না অটোরিক্সা মোটেও নয়। এ গাড়ি চলে চার চাকায়। দেখতে ছোট, কিন্তু স্বভাবে দুরন্ত। মানে গতিতে তুখোড়, চালিয়েও আরাম। দেখনদারিতেও রয়েছে আলাদা চটক। হঠাৎ করে দেখলে টাটার ন্যানোর কথা মনে পড়ে যায়, তবে এই গাড়ি বৈশিষ্ট্যে, বৈচিত্র্যে আরও কয়েকগুণ বেশি। দামেও সাধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যেই। ছোট্টখাট্টো চেহারায় ভারতের বাজারে কাঁপাতে সে এসে পড়ল বলে। ঝাঁ চকচকে পালসারের পর তাদের নতুন প্রোডাকশন বাজারে এসেই যে একটা ঝোড়ো ইনিংস শুরু করে দেবে সেটাই মনেপ্রাণে আশা রেখেছে বাজাজ অটো। আদর করে তাই গাড়ির নাম রাখা হয়েছে ‘কিউট’ (Qute)।
বাজাজ কিউট নিয়ে চর্চা বহুদিনের। সস্তা গাড়ির বাজারে এতদিন দাপিয়ে ব্যাটিং করেছিল টাটা ন্যানো। তবে ছোটখাটো গাড়ির মধ্যে ন্যানোকে টেক্কা দিতেই কিউট বাজারে আনারে কথা ভেবেছিল বাজাজ অটো। ২০১২ সালে ‘অটো এক্সপো’ প্রদর্শনীতে প্রথম কিউটের কথা সামনে আনেন বাজাজ কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালে বেশ ঘটা করেই র্যাম্পে ছোটে কিউট। তারপর নানা আইনি সমস্যা মিটিয়ে চলতি বছরই এই গাড়ি ভারতের বাজারে আনার কথা ভেবেছিল বাজাজ। সংস্থা সূত্রে খবর, আগামী ১৮ এপ্রিল লঞ্চ করতে চলেছে কিউট।
জাতে সে ‘কোয়াড্রিসাইকেল’। ওজনে সাধারণ ছোট গাড়ির চেয়ে অনেক হালকা, ৪০০ কেজির আশপাশে। ২০০ সিসি, সিঙ্গল সিলিন্ডার, জোড়া স্পার্ক ইঞ্জিনের কিউটের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার। জ্বালানী সাশ্রয়ের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। এই গাড়ি পেট্রোলেও চলে, আবার সিএনজিতে সমান সচ্ছন্দ। এক লিটার পেট্রোলে গাড়ি চলবে ৩৬ কিমি। তা ছাড়া সিএনজি-র ব্যবস্থাও রয়েছে। গাড়িপ্রেমীদের জন্য আরও একটা সুখবর, বাজাজ কিউট চার সিটার হ্যাচব্যাক। ক্রেতাদের পকেটের দিকে খেয়াল রেখে এর দামও তাই বাজেটের মধ্যেই। পেট্রোল ভার্সনের দাম ২.৬৪ লক্ষ টাকা, সিএনজি ভার্সনের ক্ষেত্রে দাম পড়বে ২.৮৪ লক্ষ টাকা।
লঞ্চ করার পর থেকে টানা ১৭ বছরের বেশি ভারতের বাজার ধরে রেখেছে বাজাজ পালসার। সম্প্রতি নতুন লুক নিয়েই হাজির হয়েছে বাজাজ পালসার ১৫০ নিওন। দু’চাকার বাজারে তরতরিয়ে সাফল্যের পর বাজাজ এখন ‘কোয়াড্রিসাইকেল’ নিয়ে মেতে রয়েছে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজীব বাজাজের কথায়, চার চাকার ছোট গাড়িতে যাত্রী নিরাপত্তা ও অন্যান্য সুবিধার কথা মাথায় রেখেই ২০০৮ সালে কিউটের প্রোডাকশনের কথা ভেবেছিল সংস্থা। তবে মোটর ভেহিকল অ্যাক্ট (১৯৮৮) অনুযায়ী সেই সময় ‘কোয়াড্রিসাইকেল’ চালু করার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। ইউরোপ, আমেরিকার বাজার ঘুরে গত বছর জুন মাসে সরকারি ছাড়পত্র মেলে। ওজন, নিরাপত্তা বিধি সব দিক খতিয়ে দেখেই কিউটকে রাস্তায় নামার অনুমতি দেয় রোড ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড হাইওয়ে অথরিটি।