পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতির পতনের ইতিহাস : কিভাবে একটা রাজ্যের জিডিপি শেয়ার দেশের 40% থেকে 3% এ নেমে এলো – চতুর্থ পর্ব

জ্যোতি বসুর সাড়ে তেইশ বছরকে যদি একলাইনে বর্ণনা করা যায় তা হল অদক্ষ, দলতান্ত্রিক স্বজনপোষনসর্বস্ব, আমলাতান্ত্রিক অবহেলামূলক, সৈরাচারী, দিশাহীন ও অন্ধাকারাচ্ছান্ন দুটি যুগ l  জ্যোতি বসু শিখিয়ে গেছেন ইতিবাচক কিছু না করেও, শুধু মাত্র সঠিক রাজনৈতিক আতাত নিশ্চিত করে দশকের পর দশক কিভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় l আগেই বলেছি, সিপিএম মূলত চীনপন্থী কমিউনিস্ট একটি দল যার প্রথম লক্ষ ‘জনগনতান্ত্রিকবিপ্লব’ l কিন্তু জন্মের তিনবছরের মধ্যেই,  1967 তে, তাঁদের প্রথম ক্ষমতালাভ দক্ষিণপন্থী অজয় মুখার্জীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে l 1977 তে যে  জনতা পার্টিকে সমর্থন করে বাংলায় ক্ষমতায় এলেন, তা কিছু দক্ষিনপন্থী দলের মোর্চা l জনতা দল তৈরি হয় কংগ্রেস (O) তথা আদি কংগ্রেস, সতন্ত্র পার্টি, ভারতীয় জনসঙ্ঘ, ভারতীয় লোকদল ও সোসালিষ্ট পার্টির একত্রীকরণে l প্রথম তিনটি দলই ঘোষিত দক্ষিনপন্থী এবং ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে এদের বিরোধ বাম-দক্ষিণ অর্থনীতির তত্ত্বের দন্দ্বে  l 1980 তে ইন্দিরা গান্ধী ফিরে এলে তাঁর সঙ্গে আপোষ করে নেন জ্যোতি বসুর দল l সোভিয়েতপন্থী সিপিআইকে বামফ্রন্টের অংশীদার বানান 1982 তে ইন্দিরা গান্ধী ও সোভিয়েত ইউনিয়নের লাল পার্টিকে খুশি করতে l এই বছরই প্রণব মুখার্জী দেশের অর্থমন্ত্রকের দ্বায়িত্ব পান l আরেক বাঙালী দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে l গণিখান সাহেব পান রেল দপ্তর l ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর রাজীব গান্ধীর সঙ্গে এবং পরবর্তীকালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরেও নরসিমা রাওয়ের সঙ্গে রাজনৈতিক সখ্যতা রেখে উনি নিজের সিংহাসন নিস্কন্টক রেখেছিলেন l নিন্দুকেরা বলে, 1984 তে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস ভালো ফল করার পর, ওনার অনুরোধই রাজীব গান্ধী তার ক্যাবিনেটে কোন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় প্রণববাবু ও বরকত সাহেবকে রাখেন নি, যাতে রাজ্য কংগ্রেসকে গুরুত্বহীন করে দেয়া যায়  l 1984 তে 42 এ 16 আসন পাওয়া কংগ্রেস 1987 তে প্রায় ধুয়েমুছে সাফ l নরসিমা রাও তাঁকে খুশি করতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার টি এন সেশনকে দিয়ে ভোট পিছিয়ে,  ত্রিপুরায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে, নিজের দলের সরকার ফেলে দেন l যদিও প্রকাশ্যে জ্যোতি বসু মুণ্ডপাত করতেন এদের দুজনেরই l সাধারণ মানুষ মনে করত,  জ্যোতি বসুর সঙ্গে এদের আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক l 

এবার আসি আমার বিশেষণগুলি কেন দিলাম, তার ব্যাখ্যায় l সিপিএম এর ‘পূর্ণ’ দলীয় স্বজনপোষন নীতির ফলে রাজ্যের আমলাতন্ত্র, প্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য দ্রুত ভেঙে পরতে থাকলে l তার সঙ্গে নতুন রূপে আরও শক্তিশালী জঙ্গি শ্রমিক আন্দোলন শুরু হল l এখানে ‘পূর্ণ’ কথাটা গুরুত্বপূর্ণ l ধরাযাক, খুচুরি বিতরণ চলছে মন্দিরে l পুরোহিত যদি নিজের লোকেদের জন্য আগে প্রসাদ সরিয়ে বাকিটা সাধারণের মধ্যে বিতরণ করেন,  তবে তা সাধারণ স্বজনপোষন l আর যদি নিজেদের খাওয়ার পর বাকিটা নর্দমায় ফেলে দেন যাতে কেউ আর প্রসাদ না পায়,  তবে তা ‘পূর্ণ স্বজনপোষন’l আর এই দ্বিতীয়টাই CPM এর নীতি l প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে পুলিশ, চাকরি পাবার একমাত্র যোগ্যতার একমাত্র মাপকাঠি আনুগত্য l অনুগত আবেদনকারী না থাকলে, পদ খালি রাখা হত কিংবা অন্য রাজ্য থেকে পূরণ হত l একটা উদাহরণ নেয়া যাক l ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল কলেজে যেহেতু SFI জিততে পারত না, তাই অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বা অ্যাসিস্ট্যান্ট মেডিকেল অফিসার নিয়েগের ক্ষেত্রে ‘Candidate must read, write and speak in Bengali‘ কথাটি রাখা হত না l অথচ ফায়ার সার্ভিস, ফিশারিজ, WBCS, ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই রক্ষাকবজ রাখা হত l 1999 তে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একই বিজ্ঞাপনে ক্ষুদ্রসেচ দপ্তর,  মৎস দপ্তর ও দমকল বিভাগের ক্লাস ওয়ান অফিসারের নিয়োগে এই বৈষম্য ছিল l এপ্রসঙ্গে আর একটা উদাহরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ দেয়া যাক l 1998 এর একটি বিজ্ঞাপনে প্রায় 400 ইঞ্জিনিয়ার চাওয়া হয় পূর্ত, সেচ ও জনস্বাস্থ্য দপ্তরের জন্য l কিন্তু অনিল বিশ্বাসের কাছে খবর ছিল এতো SFI করা ইঞ্জিনিয়ার শিবপুর, যাদবপুর বা জলপাইগুড়ি থেকে গত কয়েক বছরে পাশ করে নি l শেষে বিহার উত্তরপ্রদেশ নিয়োগ করে ওই শুন্যস্থান পূরণ হয় বাংলার ছাত্রদের বঞ্চিত করে l তারা এখনো চাকরিতে আছেন l অনেকের মতে এমন একটা সময় আসবে (2030 থেকে 2035 এর মধ্যে), যখন রাজ্যের মূল তিনটি ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরে সম্ভবত একজন চিফ ইঞ্জিনিয়ারও বাঙালী থাকবে না l  একটা রাজনৈতিক উদাহরণ নেয়া যাক l 1977 এ পূর্ত ও সেচের মত দুটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর পায় RSP এবং কৃষিসেচ ও ক্ষুদ্র সেচ 1982 তে দেয়া হয় সিপিআইকে l যেহেতু দপ্তরদুটি  শরিক দলের, CPM অর্থমন্ত্রীরা এই দুই দপ্তরে অর্থবরাদ্দ একেবারেই কমিয়ে দেয় l ফলে রাজ্যের রাস্তার হাল বেহাল হয়ে পরে l পশ্চিমবঙ্গ একমাত্র রাজ্য যেখানে আজও 95% রাজ্য সড়ক দুই লেন মাত্র l অথচ অধিকাংশ রাজ্য তাদের রাজ্য সড়ক চার লেন করে ফেলেছে l প্রতিবাদ করলে, জ্যোতি বাবু তার পূর্তমন্ত্রী মোতিশ রায় সম্পর্কে তুচ্ছভাবে বলেছিলেন, ‘দূর মোতিশ’,  যা সেই যুগে খুব আলোচিত হয়েছিল l 

শুধু তাই না, চাকরিতে টিকে থাকতেও ওই একটাই মানদন্ড l তা হল আনুগত্য l আনুগত্য না  থাকলে সরকারি অধ্যাপক, ডাক্তার, সিভিল সার্ভেন্ট বা ইঞ্জিনিয়ারদের উপর দুধরনের শাস্তির খাড়া নেমে আসত l এক প্রশাসনিক শাস্তি,  দুই রাজনৈতিক শাস্তি l প্রশাসনিক বলতে প্রমোশন বন্ধ, মিথ্যে আর্থিক মামলা দেয়া, দূরদূরান্তে বদলি কিংবা মিথ্যা ভিজিলেন্স l রাজনৈতিক শাস্তি বলতে,  কর্মচারী সংগঠন, স্থানীয় গুন্ডা দিয়ে মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন l এছাড়া আমলাতান্ত্রিক অবহেলা ও অদক্ষতা সরকারের স্থায়ী অভ্যাসে পরিণত হল l 1977 থেকে 87,  বহু যোগ্য ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার ও অধ্যাপক সরকারি চাকরি ছেড়ে চলে গেল দিল্লি, লন্ডন বা ক্যালিফোর্নিয়া

এর সঙ্গে এল ভূমিসংস্কার l রাজ্যের মোট ভূমিসংস্কারের 40%  সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় করেছিলেন l তবে, প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে l কোন পার্টি কর্মীকে এই কাজে নামাননি l কিন্তু জ্যোতিবাবু পুরোটাই সারলেন পার্টি কর্মীদের দিয়ে l বিরোধী দলের সমর্থকদের জমি বেছে বেছে কাড়া শুরু হল l যাদের জমি কাড়া হল তারা প্রায় সবাই হিন্দু l যে দাবী ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে অবিভক্ত বাংলার তিন প্রধানমন্ত্রী ফজরুল হক, খাজা নাজিমুদ্দিন ও হোসেন শহিদ সোরায়ার্দী বার বার করতেন, সেই স্বপ্ন সফল করলেন জ্যোতি বসু  l  কিন্তু যাঁরা জমি পেল তারা বিভিন্ন কারণে সাফল্য পেল না l কৃষি ব্যাবস্থা ভেঙে পড়লো ও গ্রামবাংলা হয়ে গেল পরিযায়ী l কারণগুলো দেখা যাক l 

এক, আগেই বলেছি, সেচ দপ্তর যেহেতু RSP র, সেহেতু সিপিএম সেচে অর্থ বরাদ্দ কমিয়ে দিতে প্রায় সব সেচ প্রকল্প বন্ধ হতে বসল l চাষী বৃহৎ সেচ প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হল l পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়লো ভূগর্ভস্ত ক্ষুদ্র সেচের  জলের উপর l নির্বিচারে জল তুলে পুরো রাজ্যকে কয়েক বছরেই আর্সেনিক, ফ্লোরিনের খনি বানিয়ে ফেলল l 

দুই, বিদ্যুৎদপ্তরের দক্ষতা কমতে থাকল সাজনপোষন ও কর্মচারী ইউনিয়নের ঔদ্ধত্যে l প্রভাব সরাসরি পরে কৃষিতে l বিদ্যুৎ না থাকলে ভূগর্ভস্ত জল কোথায় পাবে? সেচের অভাবে চাষ কমতে থাকল l

তিন, জমির পরিমান কমে যাওয়ার বিঘেপ্রতি জমি প্রতি চাষের খরচ বেড়ে গেল l চাষীর পক্ষে আধুনিক সরঞ্জাম তথা ট্র্যাক্টর কেনা সম্ভব হল না l চাষের আধুনিকীকরণ সম্ভব হল না l

চার, ভর্তুকিযুক্ত সার বিতরণে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি l

পাঁচ, ফোঁড়ে রাজ l পার্টির একনায়কতন্ত্র ফোঁড়ে রাজকে আরও জোরদার করল l গ্রামীণ সমাজে প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, বিরোধী দল উধাও l এদিকে, কলকাতার বশংবদ সংবাদপত্র বলতে থাকল গ্রামবাংলা স্বর্গ হয়ে গেছে l যুগান্তর পত্রিকা উল্টো গাওয়ায় শ্রমিক আন্দোলনে তালা পড়ল তাঁদের অফিসে l এই পত্রিকার মালিক কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন l কিন্তু রাজীব গান্ধী তাঁকে কোন রকম সাহায্য করেন নি, কোন এক অজ্ঞাত কারণে l

গ্রামের অর্থনীতি ভেঙে পড়লো l  তবু যাঁরা বর্গা পেল, তারা CPM এর কাছে কৃতজ্ঞ হয়ে পড়লো l আর যাঁরা জমি হারালো, তারা ছোট শহর বা গ্রাম ছেড়ে কলকাতা বা রাজ্যের বাইরে চলে যেতে থাকলো  l ভোটার কমল বিরোধীদের l জ্যোতিবাবুর গ্রামের উপর অধিকার আরও শক্ত হল l 

গ্রামবাংলার ও ছোট শহরের অর্থব্যবস্থা ভেঙে পরার আরও একটা কারণ ছিল l সেটা হল শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পরা l ইংরেজি তুলে দেয়া, ক্যাডারদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ এবং  শিক্ষায় রাজনীতিকরণের ফলে সরকারি কর্মচারী, আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, অধ্যাপকরা কলকাতা বা শিলিগুড়িতে তাঁদের পরিবার ও সন্তান-সন্ততিদের রেখে আসে বেসরকারি ইংরেজি মিডিয়ামে পড়ানোর জন্য l ফলে ছোট শহরে অর্থের যোগান কমতে থাকল l অথচ জনসংখ্যা বাড়ছে l পরিযায়ী শ্রমিকের মূল সরবরাহকারী রাজ্যে পরিণত হল স্বাধীনতার সময় দেশের সবচেয়ে এগিয়ে থাকা পশ্চিমবঙ্গ l কারণ, ততদিনে রাজ্যের প্রধান শহর কলকাতা ও শহরতলির শিল্পও ভেঙে পড়েছে l সেটা কিভাবে? তাদের 1977 এর পরের স্ট্রাটেজি নিয়ে এবার আলোচনা করি l

আগের পর্বে লিখেছিলাম, কলকাতার শিল্প মুখ থুবড়ে পড়ছিল বাজারের অভাব ও তাদের পরিচালনায় ব্যর্থতার জন্য l এবার তারা শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে রফা করতে থাকল l তিন ভাবে l 

এক, BIFR এ কোম্পানি পাঠানো l 2016 র আগে আমাদের দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেকশন-11 এর মত কোম্পানি বন্ধ করার কোন আইন ছিল না l মূল প্রোমোটার কোম্পানিকে ছিবড়ে করে,  ব্যাংক, শ্রমিক ও ক্ষুদ্র শিল্পকে ডুবিয়ে তাদের কারখানাগুলি BIFR এ পাঠানো শুরু করল l বছরের পর বছর বিচার চলত l অর্থনীতিবিদ,  সংবাদপত্র, বুদ্ধিজীবি সম্পূর্ণ নীরব ছিল l মুখ খুললেই হয় যতীন চক্রবর্তী নয় সন্তোষ ভট্টাচাৰ্য l 

দুই, কারখানা বন্ধ করে জমিতে প্রোমোটিং l হয় শপিং মল, নয় বহুতল l উষা, বেঙ্গল ল্যাম্প এর মত হাজার হাজার উদাহরণ এই হুগলী নদীর দুধারে আজ আমরা দেখতে পাই l হাজার হাজার শ্রমিক দিল্লি, বোম্বেতে পরিযায়ী হয়ে গেল, বিনা বাঁধায় l

তিন, বাম সরকার ‘শিল্প পুনর্গঠন দপ্তর’ নামে একটা দপ্তর বানান l বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলিকে এই দপ্তর ব্যাংক থেকে ঋণ পাইয়ে দিত এরা l বহু বন্ধ জুটমিল, পেপার মিলের মালিক ঋণ নেন l পুনরায় শুরু হবার পর দুচার মাস কারখানা চালিয়ে টাকা পয়সা সরিয়ে ওই কারখানা BIFR এ পাঠিয়ে এরা নিশ্চিন্তে ঘরে বসে ঘুমাতেন  l শ্রমিকনেতারা এই অন্যায়ের সমান ভাগীদার ছিলেন l ফলে ঘুম ভাঙাবে কে? 

এভাবে শিল্পাঞ্চল যখন শ্মশানে পরিণত, তখন 1991 ভারতকে নতুন রাস্তা খুলে গেল হঠাৎ l লাইসেন্স রাজ, কোটা রাজ, মাসুল সমীকরণ উঠে গেল l দেশের অর্থব্যাবস্থার আমূল পরিবর্তন আনলেন নরসিমা রাও l সারাদেশে TCS / INFOSYS/WIPRO /SATYAM / CTS /IMB /Microsoft / Sun Microsystems/Cisco /Intel এবং হাজার হাজার প্রযুক্তি কোম্পানি সীমাহীন সুযোগ নিয়ে এল যুবকদের জন্য l  পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারত প্রযুক্তিবাণিজ্যে বিশ্বমানচিত্রে জায়গা করে নিল l.ব্যাঙ্গালোর শব্দটি ‘ক্রিয়া ( Verb )’ হিসেবে ইংরেজি অভিধানে জায়গা করে নিল l এদিকে জ্যোতিবাবু শিল্পোন্নয়নের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ গাঙ্গুলীকে শিল্প মন্ত্রী, শঙ্কর সেনকে বিদ্যুৎ মন্ত্রী ও সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান করেন l বাংলা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করল l কিন্তু, শুরু হল নতুন খেলা l ‘কাটমানি ‘ CPM এর শব্দকোষের ছিল না l এরা ‘ফুলমানি’তে বিশ্বাসী ছিল l ডঃ অসীম দাশগুপ্ত নরসিমা রাওএর উদারঅর্থনীতির বিরুদ্ধে বাজালেন তাঁর রনশঙ্খ l ঘোষণা করলেন, তাঁর ‘বিকল্প অর্থনীতি’ l বুদ্ধিজীবি বাঙালী আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন, ঠিক যেমন ধৃতরাষ্ট্রের শতপুত্র পিতামহ ভীষ্মের শঙ্খধ্বনি শুনে হরষে উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পূর্বে ( বিষাদযোগ, শ্লোক নম্বর 12)

উপরোক্ত কম্পিউটার শিল্পের বিকল্প হিসেবে তিনটি বিকল্প শোনালেন তাঁর আকাশবাণীতে, 

মডেল 1. জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি 

মডেল 2. চিট ফান্ড 

মডেল 3. প্রোমোটিং ও অবসান 

এই নিয়ে বিস্তারে আলোচনা পরের পর্বে l. 

( চলবে)

সুদীপ্ত গুহ (Sudipta Guha)

( লেখক বহুজাতিক পরামর্শদাতা কোম্পানি URS কনসাল্টিং ইন্ডিয়ার ভূতপূর্ব চিফ জেনারেল ম্যানেজার )

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.