করোনা মহামারির মোকাবিলায় টিএমসি পরিচালিত রাজ্য সরকারের শৈথিল্য নিয়ে অসন্তোষ জ্ঞাপন করে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল মাননীয় শ্রী জগদীশ ধনকর (Shri Jagadish Dhankar) গতকাল ইকোনমিক টাইমস্ এ এক সাক্ষাৎকারে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, ভিসার নিয়মনীতি ও শর্ত উল্লঙ্ঘনকারী বিদেশি তাবলিগি জামাত সদস্যদের প্রতি জারি হওয়া কেন্দ্রীয় লুক আউট নোটিশ, রাজ্য ইচ্ছাকৃতভাবে না মেনে উপেক্ষা করার নীতি নিয়ে চলছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশি জামাত সদস্যদের পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারত ছাড়ার পরিকল্পনা কে দেখেও না দেখার ভান করে রাজ্য, কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করছে। তিনি জানান, ১৯ জন তাবলিগি জামাতি কে বাসে করে ভারত-বাংলাদেশ বর্ডারে পৌছে দেওয়া হয়েছে, এই মর্মে রিপোর্ট পাওয়ার পর তিনি বিষয়টি নির্দিষ্ট করে রাজ্য সরকারকে জানান। এরা কোলকাতার নিউ টাউনে মাদিনাত উল হাজ্জাজ কোয়ারান্টাইন সেন্টারে ছিলেন এবং এখান থেকে এদের বাসে করে বাংলাদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এরা পেট্রাপোল সীমান্তে পৌছালে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, এদের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করা রয়েছে। এই বিষয়ে, ডিসিপি ক্রাইম, নিউ দিল্লি, সাতদিনের মধ্যে ক্রাইম ব্রাঞ্চে অভিযুক্তদের হাজিরার নোটিশ পাঠিয়েছেন। রাজ্যপালের মতে, ফেডারেল স্ট্রাকচারের মধ্যে থেকে, তার নিয়ম কানুন না মানার এই প্রবণতা মারাত্মক গর্হিত অপরাধ। যথারীতি, রাজ্যের রুলিং পার্টি তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিধাননগরের (Bidhannagar) পুলিশ কমিশনার লক্ষী নারায়ণ মিনার এক্তিয়ারের মধ্যে এই ঘটনাটি পরে। মিনা বলেছেন, এই বিষয়টি ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো দেখছে।
গত শনিবার লক্ ডাউনে অত্যধিক শৈথিল্য এনে রাজ্য সরকার কর্ত্তৃক সমস্ত মল, রেস্টুরেন্ট, চা বাগান, জুট মিল, ছোট বড় মিলে প্রায় সবরকম শিল্প ও কনস্ট্রাকশন কাজ সমেত প্রায় সমস্ত কিছু খুলে দেওয়ার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে আরো শক্ত হাতে লক্ ডাউনের বিধিনিষেধ পালনের অনুরোধ করেছেন, বিশেষ করে কনটেইনমেন্ট এলাকা গুলির ক্ষেত্রে। তিনি বলেছেন,” করোনার সফল মোকাবিলার জন্য, প্রতিটি কনটেইনমেন্ট জোনের ক্ষেত্রে হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রীটের মতো মডেল অনুসরণ করা উচিত।” প্রসঙ্গত, এই রাস্তাতেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি। তিনি আরো বলেছেন, অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ধর্মীয় স্থানের সাথে সাথে অন্যান্য জায়গা গুলি খুলে দেওয়ার এই সিন্ধান্তের কারনে রাজ্যবাসীকে মারাত্মক পরিনতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রসঙ্গে তিনি রাজ্য সরকারকে অধিক দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি আক্ষেপের সুরে জানিয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের কোভিড স্প্রেডার হিসেবে চিহ্নিত করাটা অত্যন্ত দূর্ভাগ্যের। যারা পরিবারের কাছে ফিরে আসছেন, তাদের স্বাগত জানানো উচিত। সরকারের উচিত সমস্ত প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং একইসাথে লক্ ডাউনের বিধিনিষেধ যাতে শিথিল না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা।