Bilingual : ভারত চীন তরজা – Four laws, a virus and military standoffs in Ladakh and Sikkim

লাদাখের সোনম ওয়াংচুকের  ম্যাগসেসাই পুরস্কার পেয়েছেন সম্প্রতি। সেই লাদাখের মতো নির্জন উপত্যকার সেই শিক্ষক তথা সমাজসেবীই এবার ভারত সীমান্তে চিনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন। বললেন, “চিনকে জবাব দিন, চিনের ভাষাতেই। এবার শুধু সীমান্তের জওয়ানরাই নন, চিনকে জবাব দেবেন প্রত্যেক ভারতবাসী।”

 করোনা আবহে লকডাউনের জেরে যখন গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ধুঁকছে, তখন সেই প্রেক্ষাপটকেই কাজে লাগিয়েছে সুযোগ সন্ধানী চিন। বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় জবরদস্ত ক্ষমতা কায়েম করার জন্য একের পর এক কোম্পানির শেয়ার কিনে চলেছে তারা। অভিসন্ধি, মুনাফা লোটা! এর মাঝেই ভারত সীমান্তে চিনা সেনার আগ্রাসী সমরসজ্জায় অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে। প্যাংগং আর গালওয়ান উপত্যকায় অতিরিক্ত দু’ থেকে আড়াই হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চিন। দ্রুত সংঘাতের আবহ না কাটলে চিন ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধ একপ্রকার আসন্ন বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ঠিক এই পরিস্থিতিতেই চিনা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ‘ব়্যাঞ্চো’ সোনম ওয়াংচুক।

ওয়াংচুকের কথায়, ভারতে যদি চিনের সামগ্রী কেনা-বেচা বন্ধ হয়, তাহলে কিছুটা হলেও এতে ওদের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। ফলস্বরূপ, চিন ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হবে। “সীমান্তে যখন গোলাগুলি হয়, আমরা নিজেদের বাড়িতে আরামে ঘুমোই। ভাবি, শত্রুপক্ষকে জবাব দেওয়ার জন্য তো জওয়ানরা রয়েইছেন। কিন্তু এবার চিনকে সাঁড়াশি চাপের মুখে ফেলতে হবে। সীমান্তের পাশাপাশি অর্থনীতির দিক দিয়েও। আমরা প্রত্যেক বছর ৫ লক্ষ কোটি টাকার বিনিময়ে চিনা দ্রব্য আমদানি করি। আর সেই টাকাতেই ওরা নিজেদের অর্থনীতি চাঙ্গা করছে। চিনের সবথেকে বড় ভয় ওদের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো যেন ভেঙে না পড়ে! আর সেরকম হলে চিনাদের রাগ আরও বেড়ে যাবে সরকারের প্রতি। সে দেশের জনতা বিদ্রোহী হয়ে উঠবে। এটাই ওদের মূল ভয়। তাই সবার আগে ওদের অর্থনীতিতেই মোক্ষম ঘা দেওয়া প্রয়োজন”, মন্তব্য সোনমের।

 চিনা দ্রব্য বর্জন করার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সোনম এও বলেছেন যে, “চিনের তৈরি যত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ আছে, সেগুলোও ব্যবহার করা বন্ধ করুন। পরিবর্তে দেশীয় জিনিস কিনুন, এতে ভারতের বেকারত্ব ঘুচবে। দেশের অর্থনীতিও ঠিক থাকবে।”

কেন চিনের এমন ষড়যন্ত্র? এপ্রসঙ্গে ‘ব়্যাঞ্চো’ সোনম ওয়াংচুক জানিয়েছেন, “চিন বর্তমানে নিজের দেশের নাগরিকদেরই ভয় পাচ্ছে। ১৪০ কোটির দেশ, যেখানকার নাগরিকরা কোনওরকম মানব অধিকার ছাড়াই মজুরের মতো স্বৈরাচারি সরকারের জন্য কাজ করে চলেছে। চিনের প্রায় ২০ শতাংশ লোক লকডাউনের জেরে বেকার হয়ে পড়েছে। জনতারা ভিতর ভিতর ফুঁসছে চিন সরকারের বিরুদ্ধে। সেই ইস্যুটি থেকে নজর সরাতেই প্রতিবেশী দেশগুলিকে অনবরত আক্রমণের ছক কষছে চিন। শুধু ভারতই নয়, চিনের এধরনের ষড়যন্ত্রের শিকার ভিয়েতনাম, তাইওয়ানও।”

 এ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব উড়িয়ে দিল ভারত। চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদে আপাতত কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চাইছে না নয়াদিল্লি।  বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়ে তা সাফ করে দিল বিদেশমন্ত্রক। একটি দায়িত্বশীল ও শক্তিশালী দেশ হিসেব পড়শিদের সঙ্গে বিবাদ মেটানোর ক্ষমতা যে ভারতের রয়েছে তা পরোক্ষ ট্রাম্প বুঝিয়ে দিল দেশ।

লাদাখে ‘লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল’-এ চিনের সঙ্গে বিবাদ নিয়ে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব সাফ জানিয়েছেন, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপোস করা হবে না। ভিডিও কনফারেন্সে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শ্রীবাস্তবের ইঙ্গিতবহ মন্তব্য, “আমরা বেজিংয়ের সঙ্গে বিভিন্ন সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা করছি। আশা করছি দুই দেশের মধ্যে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটে যাবে।এরজন্য কোনও তৃতীয় পক্ষের মদতের প্রয়োজন হবে না। ভারত সবসময় শান্তির পথে চলতে বিশ্বাসী। চিন সীমান্তে আমাদের সৈনিকরা নির্দেশ মতোই এই পথে কাজ করে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে কোনও সমঝোতা করি না আমরা।” এদিকে, ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়ে সরাসরি মুখ খলেনি বেজিং। তবে চিনা সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস একটি প্রতিবেদনে লিখেছে। নিজেদের সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেবে ভারত ও চিন। এর জন্য কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। দুই দেশেরই উচিত ‘সুযোগ সন্ধানী’ আমেরিকা থেকে দূরে থাকা।

সম্প্রতি, লাদাখ ও সিকিম সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত ও চিনের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। একাধিকবার সংঘাতেও জড়িয়েছে দুই দেশের জওয়ানরা। পরিস্থিতি আরও ঘোরাল করে গালওয়ান উপত্যকায় গত দু’সপ্তাহে ১০০টিরও বেশি তাঁবু খাটিয়েছে পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA)। প্যাংগং সো আর গালওয়ান উপত্যকায় অতিরিক্ত দু’ থেকে আড়াই হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চিন। গালওয়ানে বেশ কয়েকটি বাঙ্কার তৈরিরও চেষ্টা চালাচ্ছে বেজিং। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিতর্কিত এলাকাগুলিতে সেনা সমাবেশ বাড়িয়েছে ভারতও। ফলে, ২০১৭-র ডোকলাম পরিস্থিতির পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত ও চিনের মধ্যে ফের চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

গত মে মাসে এক প্রথমসারির সংবাদমাধ্যম কয়েকটি স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে দাবি করেছে, প্যাংগং লেক থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে বিশ্বের উচ্চতম বিমানঘাঁটিগুলির মধ্যে অন্যতম গারি গুনশায় বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে চিনা ফৌজ। লাইন অফ কন্ট্রোলের কাছে মোতায়েন বিমানগুলির মধ্যে অন্যতম হল J-11 এবং J-16 ফাইটার। ৬ এপ্রিলের স্যাটেলাইটের তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, অসামরিক বিমান ঘাঁটি রূপেও ব্যবহার হওয়া গারি গুনশায় সেই অর্থে সমরসজ্জা নেই। কিন্তু তারপর ২১ মে-তে পাঠানো ছবি সম্পূর্ণ ভিন্ন ইশারা করছে। মাস দেড়েকের মধ্যেই গারি গুনশায় বিপুল নির্মাণের বিষয়টি বোঝা যাচ্ছে ছবি দেখেই। আগেই ভারত-চিন সংঘাতের পরিস্থিতির মধ্যেই যুদ্ধের প্রস্তুতি রাখতে সেনাকে নির্দেশ দিয়েছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

বিশ্লেষকদের মতে, এবার লাদাখ সীমান্তে রীতিমতো যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছে চিন। করোনা আবহে মহামারি থেকে নজর ঘোরাতে এবং হংকংয়ে চলা বিক্ষোভের আঁচে বিপাকে পড়ে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করতে পারেন জিনপিং। বিমান মোতায়েন নিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রাক্তন পাইলট ও কারগিল যোদ্ধা সমীর জোশীর বক্তব্য, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গারি গুনশায়র উচ্চতা ৪ হাজার ২৭৪ মিটার। এর ফলে চিনা যুদ্ধবিমানগুলি সীমিত পরিমাণের মিসাইল ও বোমা নিয়ে উড়তে পারবে। এবং খুব বেশি ঘণ্টাখানেক বাতাসে থাকতে পারবে সেগুলি। কিন্তু মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরলে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলি ৩ থেক ৪ ঘণ্টা আকাশে থাকবে। তবে ভারতীয় ফৌজকে সাবধান হতে হবে।

 প্রসঙ্গত, লাদাখে চলা সংঘাত নিয়ে আলোচনা করতে গত মঙ্গলবার সন্ধেয় জরুরি বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল (Ajit Doval), ও সেনা সর্বাধিনায়ক (চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ) জেনারেল বিপিন রাওয়াত (General Bipin Rawat)। উপস্থিত ছিলেন স্থলসেনা প্রধান জেনারেল এম এম নারভানে, বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এস কে ভাদোরিয়া, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল করমবীর সিং। সব মিলিয়ে এই মুহূর্ত দুই পড়শি দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে।

 ৫ মে লাদাখে ও ৯ মে সিকিমে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে লালফৌজের একাধিকবার হাতাহাতি, মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন জওয়ান গুরুতর জখম হয়েছিলেন। এর মধ্যে চিনা কপ্টারের ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটেছিল। তারপর থেকেই লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর ক্রমশ সেনা সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে লালফৌজ। ভারতের গুপ্তচর উপগ্রহের ছবি বলছে, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় লালফৌজের বহু সেনা ছাউনি ও পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। ভারী সামরিক সরঞ্জাম ও যুদ্ধাস্ত্র জড়ো করেছে তারা। লাদাখ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে গরি গুনসা বিমানঘাঁটিকে ঢেলে সাজিয়েছে চিনা বিমানবাহিনী। সেখানে বেশ কয়েকটি জে-১১, জে-১৬ যুদ্ধবিমান তৈরি রাখা হয়েছে। লাদাখে যুদ্ধ বাধলে লালফৌজকে সাহায্য করতেই গরি গুনসা বিমানঘাঁটিতে যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে লালফৌজের ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পূর্ব লাদাখের পরিস্থিতি এখন ভীষণ থমথমে।পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর প্যাংগং হ্রদ, দেমচক, গালওয়ান নদী উপত্যকা, ভারতীয় সেনার ফরোয়ার্ড পোস্ট কেএম-১২০ নম্বর এলাকায় দুই তরফেই সংঘাতের প্রস্তুতি চলছে। অসমর্থিত সূত্রের খবর, এলএসি পেরিয়ে ভারতের ভূখণ্ডের তিন-চার কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে ঘাঁটি গেড়েছে লালফৌজ। সেখানে তারা বাঙ্কার, ছোট সুড়ঙ্গ, সেনা ছাউনি তৈরি করেছে। রয়েছে হাজার থেকে ১২০০ সেনা। ওই এলাকাগুলি ছাড়াও লালফৌজ কয়েক হাজার সেনা বাড়িয়েছে দারবুক, শায়ক, দৌলত বেগ ওল্ডি সেক্টরে। আনুমানিক হাজার পাঁচেক চিনা সেনা রয়েছে সবকটি সেক্টর মিলিয়ে।

তাছাড়া , ইতিহাস সাক্ষী বার বার চীন  বিভাজনের রাজনীতি করেছে …..নেপাল ও ভারতের সঙ্গেও সেটাই করার চেষ্টায় ছিল। নতুন মানচিত্র নিয়ে কয়েকদিন ধরেই নয়াদিল্লি ও কাঠমাণ্ডুর মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এককালের ‘বন্ধু’ দেশটি যুদ্ধের হুঙ্কার পর্যন্ত দিয়ে ফেলেছে। দিনকয়েক আগেই ভারতীয় ভূখণ্ডের লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ এবং কালাপানিকে নেপালের মানচিত্র দেখিয়েছে ওলি প্রশাসন। পাশাপাশি, সীমান্তে ভারতের তিনটি এলাকাকে নেপালেরই বলে দাবি করেছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। মঙ্গলবার কাঠমাণ্ডুতে সাংসদদের প্রশ্নের উত্তরে ওলি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আমি সংসদেকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ ও কালাপানির মতো তিনটি এলাকার বিষয়টি চাপা পড়ে যাবে না। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের অন্দরে ভারতের বিরুদ্ধে অতি-জাতীয়তাবাদী মনোভাবের জিগির তুলে নিজের মসনদ পোক্ত করার উদ্দেশ্য রয়েছে ওলির। তবে নয়া মানচিত্র নিয়ে নেপালের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ঐক্যমত গড়ে ওঠেনি। গোর্খা ভাবাবেগকে হাতিয়ার করে ওলি নিজের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করছেন। একাংশের মতে মানচিত্র নিয়ে চলা সংঘাতে ওলিকে রয়েসয়ে পদক্ষেপ করার উপদেশ দিয়েছেন শাসকদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির নেতা তথা দেশটির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল ওরফে ‘প্রচণ্ড’। তার কথা মেনেই সংসদে আপাতত মানচিত্র সংক্রান্ত বিল পেশ করা থেকে বিরত থেকেছে সরকার। এদিকে, অনেকেই আবার মনে করছেন, গোটা ঘটনাচক্রের নেপথে রয়েছে চিন। লাদাখে বিবাদ উসকে দিয়ে ভারতকে চাপে রাখতে নেপাল সীমান্তেও প্রচণ্ডকে হাতিয়ার করে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল চিন। এবার লাদাখ নিয়ে বেজিং সুর নরম করায় একই পথে হাঁটল কাঠমাণ্ডু।

 অন্য দিকে চিনের উপর চাপ ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছে আমেরিকা। বাণিজ‌্য যুদ্ধ দিয়ে শুরু হয়ে করোনা আবহে তা তীব্র হয়েছিল। এরপর তাইওয়ান, হংকং নিয়ে টানাপোড়েন আরও বেড়েছে। এবার সম্ভবত তা চরম সীমায় নিয়ে গেল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন কংগ্রেসে বিল পেশ করেছেন সদস‌্য স্কট পেরি। যা পাশ হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিনের অধীনে থাকা স্বায়ত্তশাসিত তিব্বতকে ‘স্বাধীন দেশ’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষমতা হাতে পাবেন। উল্লেখ‌্য, চিন কোনওদিনই তিব্বতের আলাদা অস্তিত্ব স্বীকার করে না। কখনও চিন সরাসরি, কখনও ব্রিটিশরা তিব্বতের উপর পরোক্ষে প্রভুত্ব করেছে। কিন্তু সেটা ঔপনিবেশিক যুগে। ১৯১২-তে ত্রয়োদশ দলাই লামা শেষবার তিব্বতকে স্বাধীন রাজ‌্য হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৯৫৯ সালের ২১ মার্চ চিন গায়ের জোরে তিব্বতের দখল নেয়। যদিও তাকে মান‌্যতা না দিয়ে দলাই লামা ভারতে বসে নির্বাচিত তিব্বতি সরকার পরিচালনা করে চলেছেন। তা নিয়ে ভারত-চিনের মধ্যে দ্বন্দ্বও নতুন নয়। সেই আবহেই আমেরিকার এই পদক্ষেপ চিনকে যথেষ্ট চাপে ফেলে দিল।

 পেনসিলভানিয়ার রিপাবলিকান মার্কিন কংগ্রেস সদস‌্য স্কট পেরি প্রাক্তন সামরিক কর্মী। কয়েকদিন আগে হংকং-কে স্বাধীন দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে একই ধরনের বিল পেশ করেছিলেন। ওয়াশিংটন ও বেজিংয়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বের মধ্যেই দু’টি বিল হাউসের বৈদেশিক বিশয় সংক্রান্ত কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র‌্যাট, দু’টি প্রধান রাজনৈতিক দলই পরস্পরের বিরুদ্ধে বেজিংয়ের প্রতি নরম মনোভাব দেখানোর অভিযোগ তুলেছে। তাই সেই অভিযোগ খণ্ডন করতে চিনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে চাপ বাড়ছে ট্রাম্প প্রশাসনের উপর। প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের আগে বিল দু’টি মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং সেনেটে পাশ করাতে হবে। যদিও তা হলে যে বিরাট কিছু হেরফের হবে, তা নয়। কিন্তু আমেরিকার এই পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আরও তিক্ততা তৈরি করবে।

বিদেশে স্বেচ্ছানির্বাসিত তিব্বতি সম্প্রদায়ের মধ্যে এই পদক্ষেপ তীব্র উত্তেজনা তৈরি করেছে। কূটনীতিকরা এই পদক্ষেপকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে রাজি নন। কিন্তু তিব্বতিরা টুইট করে জানিয়েছে, ‘দারুণ পদক্ষেপ। আজ হোক বা কাল, এটা হবেই। শুধু স্বায়ত্তশাসিত এলাকা নয়, গোটা তিব্বতকেই এই বিলের অন্তর্ভুক্ত করুন স্কট পেরি। খাম এবং আমদো যুক্ত হয়ে স্বাধীন, পৃথক তিব্বত গঠিত হোক।’ তাঁরা জানান, তিব্বত ও পূর্ব তুর্কস্তানকে স্বীকৃতি দিতে চিনকে এর চেয়ে বড় হুঁশিয়ারি আর হয় না। মার্কিন পদক্ষেপে উৎসাহিত উইঘুর মুসলিমরাও। তাঁদের হয়েও সওয়াল করতে আমেরিকাকে আরজি জানিয়েছেন তাঁরা। উল্লেখ‌্য, হাউসের স্পিকার ন‌্যান্সি পেলোসি ক‌্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত ডেমোক্র‌্যাট। তিব্বতি সম্প্রদায়ের সঙ্গে তাঁর কয়েক দশকের গভীর সম্পর্ক। আর্থিক সমৃদ্ধির পথে চলতে গিয়ে তিব্বত ইস্যুর রাজনৈতিক তাৎপর্য ভুলতে বসেছিল ওয়াশিংটন। আমেরিকায় দলাই লামা শ্রদ্ধেয় ব‌্যক্তিত্ব হলেও বহু বছর পর এই প্রথম কোনও প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব স্বাধীন তিব্বতের দাবিতে কোনও পদক্ষেপ করলেন।

Four laws, a virus and military standoffs in Ladakh and Sikkim

The month of May 2020 commenced with military face-offs between Indian and Chinese forces in Eastern Ladakh and Northern Sikkim. While these may appear to be localised border skirmishes, there appear to be larger geostrategic issues driving Chinese aggression in the midst of the COVID-19 pandemic.

In Eastern Ladakh, reportedly, Chinese forces violated the Line of Actual Control ( LAC ) as perceived by India on May 5 in the area of Galwan Valley where Indian forces stood their ground, leading to injuries on both sides. On May 9, in Northern Sikkim, near Naku La (a mountain pass) beyond which lies the Tibetan Plateau, there was a face-off involving 150 troops leading to an Indian Lieutenant boxing a Chinese Major to the ground. In the aftermath of these border incidents, apart from objections by the Indian Government, the US has criticised aggressive Chinese behaviour on the Indian Border.

The military importance of these areas is obvious. The Galwan Valley in Eastern Ladakh lends access to China’s highway through Aksai Chin to its western-most province Xinjiang, where it faces separatism from the Uyghur movement. Naku La provides access to the Tibetan Plateau in North Sikkim and hence is a flash point. It must not be forgotten that at another pass called Nathu La in Eastern Sikkim (where Doklam also lies) the Chinese were given a bloody nose in 1967 by General Sagat Singh, the first aggressive action against the Chinese, after 1962.

However, the strategic drivers of these border pinpricks lie elsewhere. Four laws or bills (one Chinese and three from US) as well as global criticism regarding COVID-19 in the backdrop of the People’s Congress in May appears to have triggered aggressive behaviour by China.

» China’s Unity Law – passed for Tibet by the People’s Congress in January 2020 and is poised to take effect in May/ June 2020. In effect it aims at Sinicisation of the Tibetan people targeting their unique culture, religion and traditions. The Dalai Lama succession angle in relation to India is obvious.

» US Hong Kong Human Rights Act – this federal law requires the US Government to impose sanctions against Chinese and Hong Kong officials responsible for human rights violations.

» US Uyghur Human Rights Bill in the US Congress would authorise the US President to impose sanctions based on intelligence reports of crackdown by China on the Uyghurs in Xinjiang.

» US Tibetan Policy and Support Bill lays out a road map for sanctions against China if they interfere in the succession of the Dalai Lama and seeks a diplomatic station of the USA in Tibet.

While the Doklam stand-off was going on in 2017, China is reported to have built 96 km of road in the Shaksgam Valley opposite Ladakh which is territory ceded to China by Pakistan. As is well known China has invested more than 60 billion US Dollars in China Pakistan Economic Corridor (CPEC). The lifeline for CPEC is the Karakoram Highway which passes through Khunjerab pass which remains closed for 4-5 months in a year due to snow. The Shaksgam road development and the recent Galwan Valley aggression might point towards an effort by China to develop an all weather highway for CPEC bypassing the Khunjerab Pass. Having committed 60 billion US Dollars China would not want the CPEC closed for nearly half the year

Combined with global accusations for the spread of COVID-19 pandemic and the People’s Congress in the third week of May 2020 President Xi Jing Ping needed to bolster his failing public image leading to aggression along the LAC. This was predictable as China views India as a strategic ally of the USA. Indian support for the WHO investigation into the origins of COVID-19 and India’s immediate blockage of direct Chinese investment into Indian companies are other triggers.

Overall, in a situation of global strategic uncertainty, China is trying to assert directly as witnessed on the LAC and through proxies like Nepal which has recently raked up border issues with India. India is well poised to take on aggressive actions by the Chinese as recently stated by the Chief of the Indian Army and as was proved in Eastern Ladakh and North Sikkim in May 2020.

Lt Gen Cherish Mathson

(The author is former General Officer Commanding in Chief (GOC-in-C) of South Western army command. He has served in Siachen glacier, Eastern Ladakh, Kashmir border. He was also part of ‘Operation Blue star’. He was awarded Param Vishisht Seva medal in 2018. After 39 years of service, he retired from the army in august 2019).

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.