ধারে জর্জরিত ডুবন্ত জেটে বিমান চলছে এখন সাকুল্যে ১৪টি। তার উপর জ্বালানি জট এবং ঋণ সমস্যার সমাধান না হওয়ার আজ বৃহস্পতিবার এবং আগামিকাল শুক্রবার, এই দু’দিনের জন্য সমস্ত আন্তর্জাতিক উড়ান বাতিল করে দিল জেট এয়ারওয়েজ। বিমান সংস্থা সূত্রে খবর, আমস্টারডাম, প্যারিস এবং লন্ডনগামী জেটের সব উড়ান এই দু’দিনের জন্য বন্ধ থাকবে।
খারাপ সময় যেন কাটতেই চাইছে না জেটের। একদিকে প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার দেনা, অন্যদিকে বকেয়া বেতনের কারণে পাইলটদের কাজ বন্ধের সময়সীমা, তার উপর জ্বালানি সংকট, সব মিলিয়ে রীতিমতো নাজেহাল দশা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিমান পরিবহণ সংস্থার। ঋণ দিতে স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন ঋণদাতাদের গোষ্ঠী এগিয়ে এলেও, এখনও পর্যন্ত মালিকানা বা অংশীদারি হাতে নিতে আগ্রহী সংস্থার দেখা নেই। ফলে সংকট গভীর থেকে আরও গভীরতর হচ্ছে।
সম্প্রতি জেটে ১,৫০০ কোটি টাকা ঢালার কথা জানিয়ে স্টেট ব্যাঙ্ক বলেছিল, দ্রুত নতুন লগ্নিকারী খোঁজাই লক্ষ্য। সব কিছু দেখাশোনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন নজরদারি কমিটি তৈরির কথাও জানানো হয়েছিল ব্যাঙ্কের তরফে। সূত্রের খবর, স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন ঋণদাতাদের গোষ্ঠী নাকি ১৫০০ কোটি টাকা নতুন ঋণও দিয়েছে জেট সংস্থাকে।
নতুন মালিকের খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত ঋণদাতারা প্রাথমিক ভাবে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছিল জেটকে। কিন্তু, কোনও সংস্থা উৎসাহ নিয়ে লিখিত ভাবে আগ্রহের কথা জানায়নি। তাই নতুন লগ্নিকারীদের খোঁজে একপ্রকার বাধ্য হয়েই সময়সীমা বাড়াতে হয়েছে। চূড়ান্ত দর জমা দিতে হবে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে।
এরই মধ্যে নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে জেটে। বকেয়া না পেলে জেটকে আর তেল দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় আইওসি। পরে তারা জ্বালানি সরবরাহে রাজি হলেও শঙ্কার মেঘ কাটছে না জেটের।
সংস্থা সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে জেটের বিমান চলছে হাতে গোনা। তার উপর পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত পিছোনো ছিল। সেই সময়ও এগিয়ে আসছে। জেট যে সমস্ত বিমান ভাড়ায় নিয়েছিল, তারও অনেকগুলির ভাড়া না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই বকেয়া না মেটানোর কারণে, সম্প্রতি জেটের একটি বিমানকে আমস্টারডামে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে। সংস্থা দাবি করে, স্থানীয় এক পণ্য ব্যবসায়ীর কাছে জেটের বেশ কিছু টাকা বকেয়া থাকায়, তিনিই প্রভাব খাটিয়ে বিমান আটকে রাখেন। জটিলতা কাটাতে তাই দু’দিন আন্তর্জাতিক উড়ানগুলি বন্ধ রাখারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ।