লকডাউনের জেরে ধুঁকে ধুঁকে চলছিল বইপাড়া। এবার আমফানের জেরে কার্যত বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ল college street বই ব্যবসা। বই নষ্ট হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকার। নষ্ট হয়েছে বৈঠকখানা রোডের বাঁধাইয়ের দোকানে রাখা প্রিন্টের রোল সাদা কাগজ। ভিজে গিয়েছে ছাপাখানায় রাখা ফর্মা। যত সময় এগোচ্ছে, তত সামনে আসছে ক্ষতির পরিমাণ। সব মিলিয়ে যা ছাড়িয়ে যেতে পারে কয়েক কোটি টাকার অঙ্কও। জলে গিয়েছে বইকে কেন্দ্র করে চলা কয়েক হাজার মানুষের সংসার। এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী উভয়ের কাছেই সাহায্যের আবেদন জানাতে চলেছে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড।
বইপাড়ার করুণ অবস্থার খবর পেয়ে শুক্রবার অনেক কর্মীই চেষ্টা করে পৌঁছেছেন কলেজ স্ট্রিট। অনেক জায়গায় এখনও জল নামেনি। যেখানে নেমেছে সেখানে একেবারে নষ্ট করে দিয়ে গিয়েছে বই, আসবাব। ছোট ছোট স্টলের ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। বই তো নষ্ট হয়েছেই। ভেঙে গিয়েছে দোকানের অনেকটা অংশও। প্রত্যেকের এক কথা, “ভেবেছিলামযা ক্ষতি হয়েছে লকডাউন শিথিল হলে আবার সামলানো শুরু করব। পেটে লাথি পড়ে গেল।” গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক তথা দে’জ পাবলিশিংয়ের কর্ণধার শুধাংশু দে জানাচ্ছেন, অনেকের সঙ্গেই এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। তাঁকে অনেকে প্রশ্ন করেছেন এসবের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তিনি যদিও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বলছেন, “ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। প্রত্যেকে যোগাযোগ রাখছি। নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী দু’জনের কাছেই আমরা আবেদন জানাব সাহায্যের। বইপাড়াকেও তাঁরা একটু দেখুন।”
একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যে ক্ষতি হয়ে গেল তা বিশ্বের মানুষ দেখছেন। কলেজ স্ট্রিটের এই বইপাড়ার মূল্য অনেক। এই বই জগতের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বহু মানুষ। তাঁদের জীবন-জীবিকা প্রশ্নের মুখে। আমাদের কাছে এই বই–ই আমাদের সংসার। সবটাকে আবার আমাদের ঘুরে দাঁড় করাতে হবে। আগামী দু’-একদিনের মধ্যে প্রত্যেকের সঙ্গে আলোচনা করে কোনও একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী আবেদন জানানো হবে মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এমনকী, দিল্লির প্রকাশক সংগঠনের কাছেও।