ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে মাথায় হাত কৃষকদের

প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে লণ্ডভণ্ড গোটা দক্ষিণবঙ্গ। প্রাণহানির পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সাক্ষী একাধিক জেলা। ক্ষতিগ্রস্ত মাঠের ধান, পাট-সহ নানা শাকসবজি। একে লকডাউনের জেরে মাঠের বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছিলেন না কৃষকরা। তার উপর আবার ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে মাথায় হাত কৃষকদের।

আমফানের প্রভাবে কৃষিক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব বর্ধমান। বোরো ধান, তিল, সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ফসল। জেলায় এবার ১ লক্ষ ৬৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে ৭৬.৫ শতাংশ জমির ধান তুলে নিয়েছেন কৃষকরা। কৃষি দপ্তরের হিসেবে ৪৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ধান মাঠেই ছিল আমফান আসার আগে। তার মধ্যে ৩০ হাজার হেক্টরের ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছে, এমন ঝড়ের তাণ্ডব আগে কবে ঘটেছিল তাঁদের মনে নেই। 

জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন, আমফানের প্রভাবে ৩০ হাজার হেক্টর বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ১২ হাজার ৩৪০ হেক্টর তিলের ক্ষতি হয়েছে। সবজির ক্ষতি হয়েছে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে। জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি ফসলের ক্ষতি হয়েছে গলসি ১ ও ২, বর্ধমান ১ ও ২, আউশগ্রাম ১ ও ২, ভাতার, মঙ্গলকোট, ও কালনা ১ ব্লকে। জেলায় সব থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে জামালপুরে ১১৮.৮ মিলিমিটার। জেলাশাসক বলেন, “কোনও মৌজার ফসলে ৩০ শতাংশ ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়ে থাকে বিমা সংস্থার মাধ্যমে। এই বিষয়ে রিপোর্ট তৈরি করে কৃষি দপ্তরকে জমাও দেওয়া হবে। তারপর সেই অনুযায়ী বিমা সংস্থার থেকে ক্ষতিপূরণ পাবেন কৃষকরা। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ফসলের ক্ষতি হয়েছে।”

আমফানের দাপটে পশ্চিম মেদিনীপুরেও দফারফা হয়ে গিয়েছে চাষের। প্রায় ৯০ শতাংশ চাষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে ঝড়বৃষ্টিতে প্রায় চারশো কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও পাট এবং বোরো ধান চাষেও প্রভাব ফেলেছে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। এই জেলায় এবার ৭৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছিল। চাষিরা জানান, বৃষ্টিতে জমির ধান ও পাট গাছের গোড়ায় জল জমে গিয়েছে। ঝড়ে গাছ শুয়ে পরেছে। গাছ পচে যাওয়ায় পাশাপাশি ধান পড়েও যাচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.